তিনি বলেন, এবছর কৃষকের ক্রয় ক্ষমতা ও আর্থিক সচ্ছলতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে হাইব্রিড ধান, ভুট্টা ও সবজি বীজসহ অন্য বীজে কম মুনাফা অর্জন করার জন্য সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) নিয়ে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি বীজ কোম্পানিগুলোকে কৃষকের সেবায়, কৃষির সেবায় এগিয়ে আসতে হবে।
সোমবার (২২ জুন) সরকারি বাসভবন থেকে বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসজনিত বিরাজমান পরিস্থিতিতে ‘বিভিন্ন ফসলের বীজ উৎপাদন, আমদানি, সরবরাহ ও বিপণন নিরবচ্ছিন্ন রাখা’ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে অনলাইন সভায় তিনি একথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার এই দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশ ও এদেশের কৃষকেরাও বিরূপ পরিস্থিতির মুখোমুখি। এটি মোকাবিলায় সরকার কৃষিখাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ভর্তুকিসহ নানা প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন এবং সবার সহযোগিতার ফলে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের অসহনীয় দুর্যোগের মধ্যেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি বোরো ফসল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।
‘ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে আউশ ধান বীজ, আমন ধান বীজ ও পাট বীজ কৃষকদের মধ্যে সুষ্ঠুভাবে বিতরণ করা হয়েছে। বর্তমানে আউশ ধান আবাদ কার্যক্রম পুরোদমে চলছে। আশা করা যায়, কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আউশেও বোরোর মতো ভালো ফলন পাওয়া যাবে। ’
শুরুর দিকে মৌসুমি ফল ও শাকসবজি বাজারজাতে কিছু সমস্যা থাকলেও এখন তেমন সমস্যা নেই বলে উল্লেখ করেন কৃষিমন্ত্রী বলেন, মোটামুটি ভালো দামেই চাষিরা তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারছে। পাশাপাশি, আমসহ মৌসুমি ফলেরও ভালো দাম পাচ্ছে কৃষক।
করোনার কারণে দেশের এই ক্রান্তিকালে আসন্ন আমন মৌসুমে উৎপাদন বাড়ানো এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন তিনি।
ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, আমন ধান আবাদের এরিয়া বোরোর চেয়ে বেশি হলেও উৎপাদন অনেক কম। একমাত্র উচ্চফলনশীল জাতের গুণগতমানসম্পন্ন বীজ ব্যবহারের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদনশীলতা ১৫-২০ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব। আমন ও রবি মৌসুম সামনে, সেখানে অনেক শাক-সবজি, ভুট্টা, ডাল, তৈলসহ উফশী ধান ও হাইব্রিড ধান বীজের প্রয়োজন রয়েছে। সেজন্য স্থিতিশীল খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনের জন্য গুণগতমানসম্পন্ন বীজ উৎপাদন ও পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিতে কৃষি মন্ত্রণালয় সব ধরনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান বলেন, করোনার প্রকোপের শুরু থেকেই কৃষি মন্ত্রণালয় ও এর অধীন সংস্থা এবং সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সভায় জানানো হয়, এবারই সরকার প্রথম বীজে ভর্তুকি দিয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে বিএডিসি’র ১৯ হাজার ৫০০ মে. টন আমন ধান বীজ চাষি পর্যায়ে বিক্রির জন্য ২০ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। বিএডিসি তাদের ঘোষিত নির্ধারিত বিক্রয়মূল্যের চেয়ে কেজি প্রতি ১০ টাকা কম দামে উফশী আমন ধান বীজ ও হাইব্রিডের ক্ষেত্রে কেজি প্রতি ৫০ টাকা কম দামে চাষি পর্যায়ে বীজ বিক্রি করেছে।
এ অনলাইন সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. আরিফুর রহমান অপু, অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা) কমলারঞ্জন দাশ, অতিরিক্ত সচিব (বীজ) আশ্রাফ উদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো. হাসানুজ্জামান কল্লোলসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সংস্থাপ্রধান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আব্দুস সাত্তার মন্ডল, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ড. এস. এম নাজমুল ইসলাম, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. হেমনাথ ভান্ডারি প্রমুখ সংযুক্ত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২০
জিসিজি/এএ