এ অবস্থায় আবাসন শিল্পের উপখাতের সাইট মেইনটেনেন্স, হার্ডওয়্যার ও লিফট সংশ্লিষ্ট প্রায় ১২১ ধরনের পণ্য সরবরাহকারীদের বেঁচে থাকাই কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
আবাসন শিল্পের সঙ্গে জড়িত ৪৫৮টি বিভিন্ন খাত মিলে প্রায় এখানে প্রায় ৩৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান।
২০১৯ সাল থেকে কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল দেশের আবাসন শিল্প। এ খাতের প্রবৃদ্ধিও হয়েছে ১৬-১৭ শতাংশ। ফলে আবারও যখন নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন এ খাতের উদ্যোক্তারা ঠিক তখনই আবাসন শিল্পের ওপর বড় আঘাত হানল করোনা ভাইরাস।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের কারণে ঝুলে গেছে আবাসন খাকের ৫৮ হাজার কোটি টাকার বাজার। এ খাতে বার্ষিক প্রবৃদ্ধির ১৫-১৭ শতাংশ। বছরে চাহিদা ১ লাখ ২০ হাজার ফ্ল্যাটের। এই খাতে জড়িত ২১১টি ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ বা সহযোগী শিল্প খাত রয়েছে। আর ১৮ খাতে বিভক্ত পণ্যভিত্তিক উপখাত হলো ৪৫৮টি।
এসব খাতের মধ্যে অন্যতম সকল প্রকার হার্ডওয়্যার সামগ্রীর মধ্যে ফ্লাওয়ার ব্রুম, স্টিক ব্রুম, হেয়ার ব্রাস, স্টিল ব্রাস, পলিথিন, ডোর ক্লাম, কাটিং ফোম, স্টিল ওয়্যার, হিসাইন ক্লোথ, রাবার সাকশন পাইপ, নাইলণ রোপ, কাটিং ডিস্ক, মাসকিন টেপ, পাল্ম ব্রাস, নেইল, কাপ ব্রাস, কনক্রিট নেইল, হোস পাইপ, রয়েল প্লাগ, কয়েল পাইপ, সেফটি নেট, স্যান্ড স্ক্রিণ নেট, ওয়াটার স্টপার, ঝুট ক্লোথ, স্পেড উইথ হ্যান্ডেল, ডায়মন্ড ডিস্ক, আইকা, ক্যানভাস পাইপ, স্টিল ড্রাম, ডিভিসি ড্রাম, টারপাওলিন, প্যাড লক, কক শিট, উডেন হামার, তাগারী, হামার, নাট-বোল্ট, ওয়াসার, কার্টুন টেপ, স্টিল বাকেট, জে হুক উইথ নাট, ক্যাপ ওয়াসার, ইউ ক্লাম্প, সেফটি গগলস, মসকিটো নেট প্লাস্টিক, মসকিটো নেট জিআই, ওয়েল্ডিং রড, মাস্কিন টেপ, শাটল রোপ, প্লাস্টিক কোর রোপ, মেজারমেন্ট টেপ, জুট রোপ, ওয়্যার মাশ, স্টিল বেলচা, জুট টেপ, মাস্কিন টেপ, কট সুটা (নাইলন টেপ), সিলিকন গাম (ডাকো প্লাস চায়না), ড্রিল বিট বোসচ, স্টার স্ক্রু, টিক্সল-উইপসল, ভিক্সল, কার্টুন টেপ, স্টিল নেইল, ওয়াটার পেপার, গামবুট, গ্রিজ, ফোম ডিস্ক, দেশী-আমদানী সেফটি সু, গ্যাসকেট, পাইপ ক্লাম্প, শাটার ক্লিপ, শাটার ওয়েল, গ্রান্ডিং ডিস্ক, ড্রিল বিট চায়না, চক পাউডার (স্নোকাল), সুতা রোপ, ব্লিচিং পাউডার, নাট উইথাউট বোল্ট, স্যান্ড ওয়াশিং নেট, রাবার সল্যুশন, ওয়েল্ডিং হোল্ডার, পাম্প সু, ওয়েল্ডিং গ্লাস, ওয়েল্ডিং হেলমেট, লেদারের হ্যান্ডগ্লোভস রয়েছে।
ইলেকট্রিক মেইনটেইনেন্স ইক্যুইপমেন্ট পণ্যের মধ্যে লিফট, সাব স্টেশন, আরএমইউ, বিবিটি, ভিআরএফ, সোলার সিস্টেম, জেনারেটর, ফায়ার হাইড্রেন্ট, লাইটিং প্রটেকশন, লাইটিং ওয়ার্ক, ডিপ টিউবওয়েল, পিএ সিস্টেম, পিএবিএক্স সিস্টেম, ইন্টারকম সেট, এভিআর, আইপিএস, এসটিপি, ডব্লিটিপি এবং সাইট মেইনটেইনেন্স ওয়ার্কের জন্য স্টোন লাইম, সুরকি, চিটাগুড় (মোলাসেস), টামারিন্ড (তেতুল), কেমিক্যাল ও অ্যাডমিক্সার রয়েছে। উল্লেখিত ১১৫টি উপখাতের কোনো পণ্যই বিক্রি হচ্ছে না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ হার্ডওয়্যার অ্যান্ড মেশিনারি মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. কামাল হোসেন কামাল বলেন, ব্যবসার সার্বিক চিত্র ভালো নয়। ফ্ল্যাট বিক্রি না হলে দরজা, জানালাসহ অন্যান্য হার্ডওয়্যার সামগ্রী কেনার কেউ নেই। ফলে আবাসন খাত ঘুরে দাঁড়ালেই আমাদের ব্যবসার দুরবস্থা কাটবে। আসছে বাজেটে হার্ডওয়্যার খাতে খুচরা ভ্যাট প্রত্যাহার দাবি করেন এই ব্যবসায়ী নেতা।
এ বিষয়ে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশনঅব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল বলেন, করোনা ভাইরাসে আবাসন শিল্প উদ্যোক্তাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। কাজ নেই, তবুও শ্রমিকদের বেঁচে থাকার স্বার্থে টাকা দিতে হচ্ছে। ২১১টি সহযোগী শিল্প এখন অচল। খাতজুড়ে করুণচিত্র। এমন পরিস্থিতিতে অর্থনীতিতে নতুন টাকার সরবরাহ ও সরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। কারণ, এ খাতে এখন টাকার সরবরাহ নেই। ব্যাংকও সহযোগিতা করছে না। অনেক ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার হুমকিতে পড়েছে। সত্যিই ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২০
এসই