মঙ্গলবার (৩০ জুন) শেরে বাংলানগরে এই চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে। সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমীন ও এডিবির পক্ষে বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ ঋণচুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকার ও এডিবির সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ‘রুরাল কানেক্টিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট প্রোজেক্ট-এর মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিভাগের ৮টি জেলা, ঢাকা বিভাগের ৫টি জেলা, খুলনা বিভাগের ৭টি জেলা, রাজশাহী বিভাগের ৬টি জেলা এবং রংপুর বিভাগের ৮টি জেলার সর্বমোট ১৮০টি উপজেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে।
প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ২৮৫.৩১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে এডিবি ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ হিসেবে দেবে। অবশিষ্ট ৮৫.৩১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশ সরকার যোগান দেবে। এডিবি প্রদেয় ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (১০ কোটি ডলার) সহজ শর্তের অর্ডিনারি অপারেশন্স (কনসেশনাল) লোন (সিওএল) হিসেবে ঋণ চুক্তি সম্পন্ন হয়।
সিওএল ঋণের সুদের হার ২শতাংশ। অবশিষ্ট ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেগুলার ওসিআর হিসেবে প্রদান করা হবে। অর্ডিনারি ক্যাপিটাল রিসোর্সেস (ওসিআর) ঋণের সুদের হার লন্ডন ইন্টার ব্যাংক অফার্ড রেট (এলআইবিওআর) ভিত্তিক।
এছাড়া, ০.১০শতাংশ হারে ম্যাচুরিটি প্রিমিয়াম ও অব্যয়িত অর্থের ওপর ০.১৫ শতাংশ হারে কমিটমেন্ট চার্জ ওসিআর ঋণের জন্য প্রযোজ্য হবে। উল্লেখ্য, এডিবি প্রদেয় এ ঋণ ৫ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ২৫ বছর পরিশোধযোগ্য।
স্থানীয় সরকার বিভাগ উল্লেখিত প্রকল্পের উদ্যোগী বিভাগ এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল জুলাই ২০১৮ হতে জুন ২০২৩ পর্যন্ত। প্রকল্পটি গত ৯ অক্টোবর একনেক সভায় অনুমোদিত হয়।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো, উৎপাদনশীল কৃষি এলাকায় উচ্চ আয় সৃষ্টি ও আর্থসামাজিক কেন্দ্রে যাতায়াত সুগম করতে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামীণ সংযোগ উন্নয়ন করা এবং কার্যকর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অংশীজনের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ।
প্রস্তাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে ২ হাজার ২১০ কি. মি. উপজেলা সড়ক এবং ৪৯৫ কি. মি. ইউনিয়ন সড়ক অবকাঠামোসমূহকে জলবায়ু সহিষ্ণু এবং নিরাপত্তার বৈশিষ্ট্য সম্বলিত আবহাওয়া উপযোগী মান-এ উন্নীত করা হবে। প্রকল্পটি কোভিড-১৯ মহামারীর পরে দ্রুত আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
এডিবি কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ বলেন , 'প্রকল্পটি উন্নত স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, কর্মসংস্থানের সুযোগ, বাজার এবং অন্যান্য সরকারি পরিষেবাগুলোকে উন্নত করবে। সকল মানুষের অংগ্রহণও বাড়বে এসব কাজে। প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৪টি জেলার ৯ কোটি মানুষ উপকৃত হবেন। অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার পাশাপাশি অতিরিক্ত অর্থায়ন নারীদের এবং শিশুদের জন্য যে কোনো আবহাওয়ার অবস্থার মধ্যে শিক্ষা, জরুরি স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামাজিক পরিষেবায় সহজতর ও নিরাপদ প্রবেশের সুযোগকে আরও প্রশস্ত করবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২০
এমআইএস/এমএইচএম