পণ্য বেচাকেনার সহজ মাধ্যম হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অনলাইন মার্কেট প্লেস। ক্রেতারা মোবাইল ফোনে ক্লিক করছেন, আর ঘরেই পৌঁছে যাচ্ছে আমের ঝুড়ি।
অর্ডার করা থেকে শুরু করে টাকা আদান-প্রদান সবকিছুই হচ্ছে অনলাইনে। রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সাতক্ষীরা, রংপুর, নাটোর, নওগাঁ ও খাগড়াছড়িসহ দেশের বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো ভোক্তার হাতে পৌঁছে দিচ্ছে বাগানের ফরমালিনমুক্ত সতেজ আম।
বিভিন্ন ফেসবুক পেজ, গ্রুপে আমের বাহারি ছবি পোস্ট করে প্রচার চালিয়ে ক্রেতার নজর কাড়তে চাচ্ছেন অনলাইন উদ্যোক্তারা। অনেকে অ্যাপ বানিয়েও আম বিক্রি শুরু করেছেন। অপরদিকে ছবি দেখে ফোনের মাধ্যমে বিক্রেতার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে আমের অর্ডার করছেন ক্রেতারা। সে অনুযায়ী কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ভোক্তার কাছে পৌঁছে যায় বাহারি জাতের আম।
আম বিকি-কিনির অনলাইন প্লাটফর্ম ‘রাজশাহী ম্যাংগো.কমের’ উদ্যোক্তা হাসান তানভীরের সঙ্গে কথা হয় এ বিষয়ে। তিনি বলেন, ‘আগের বছরগুলোর চাইতে এ বছর অনলাইনে আমের বিক্রি অনেক বেড়েছে। গত বছর তার প্রতিষ্ঠান পুরো মৌসুমে ৮ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছিলো। এ বছর মৌসুমের ২০ দিনেই বিক্রি হয়েছে ১৫ লাখ টাকার।
এ উদ্যোক্তা আরও বলেন, বাংলাদেশে প্রথম ম্যাংগো ই-কমার্স অ্যাপ তার। আম কেনায় মানুষ অনলাইনে ঝুঁকছে এটা ইতিবাচক দিক। কিন্তু এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটা মহল অসৎ উপায় অবলম্বন করছে। যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে সম্ভাবনাময়ী এ বাজার।
তানভীর আরও জানান, অনলাইনে আম বিক্রির আরও একটা বিপত্তি হলো কুরিয়ার সার্ভিসগুলো হোম ডেলিভারি দিতে না পারা। হোম ডেলিভারি দিলে বিক্রি আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
‘ডেইলী কার্ট’ নামের প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী আবু সুফিয়ান বলেন, এ বছরে অনলাইনে আমের বিক্রি বিগত বছরের চাইতে অনেকে বেড়েছে। গত বছর পুরো মৌসুমে ৪০ মন আম বিক্রি করলেও এ মৌসুমের ১৫ দিনেই বিক্রি ছাড়িয়েছে ১’শ মন।
‘শখের হাট’ নামের ফেজবুক পেজ ও গ্রুপ খুলে এ মৌসুমেই প্রথম আমের ব্যবসা করছে ফেনী শহরের তরুণ আমের মক্কী। তিনি জানান, ১০ দিনে ১৫’শ কেজি বিক্রি হয়েছে। রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বাগানে গিয়ে সেখান থেকেই আম সংগ্রহ করছেন তিনি। এরপর ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী পাঠানো হচ্ছে সারা দেশে।
আতিয়ার সজল ও নাসিম আনোয়ার জাকি নামের দুই ক্রেতা জানান, পেশাদার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে আম কিনে প্রতারিত হওয়ার অভিজ্ঞতা তেমন নেই। তবে অপেশাদার, অপরিচিতদের কাছ থেকে কিনে প্রতারিত হওয়ার ঘটনা আছে।
এ প্রসঙ্গে কথা হয় ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) প্রেসিডেন্ট শমী কায়সারের সঙ্গে। তিনি বলেন, অনলাইনে আমের বিক্রি বেড়েছে, এটি ইতিবাচক। স্বাস্থ্য সুরক্ষা বজায় থাকছে এতে। মানুষ অনলাইন প্লাটফর্মের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অ্যাসোসিয়েশন থেকে উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় সব সাপোর্ট দিচ্ছি। ক্রেতারা যেন ভালোটা পায় সেজন্য পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণের ওপরও জোরারোপ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একত্র হয়ে কাজ করছি। খোলা হয়েছে কমপ্লেইন ডেস্ক। এতে অভিযোগ জমা হলে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০২০
এসএইচডি/এইচএডি