শনিবার (০৪ জুলাই) ঢাকা চেম্বার আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ পরর্বতী বাংলাদেশের শিল্পখাতের প্রস্তুতি: বিনিয়োগ ও দক্ষতা’ বিষয়ক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী৷ বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম এবং সম্মানিত অতিথি ছিলেন জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)-এর পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. ইঞ্জি. মো. শাখাওয়াত আলী।
স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সারাবিশ্বেই অর্থনৈতিক কার্যক্রম বিপর্যস্ত হয়েছে এবং এর ফলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর তথ্য অনুযায়ী, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৪.২ শতাংশ হ্রাস পাবে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা, বিদেশি বিনিয়োগ স্থানান্তরের সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য স্থানীয় অবকাঠামো খাতের উন্নয়নের পাশাপাশি দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টিতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ কর্মসূচী চালুকরণ, প্রবাস থেকে ফেরত আসা কর্মীদের সহযোগিতা প্রদান এবং প্রণোদনা প্যাকেজ হতে এসএমই উদ্যোক্তাদের সহজে ঋণ প্রদান নিশ্চিত করা একান্ত আবশ্যক বলে মনে করেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, কোভিড-১৯ পরর্বতী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় আরো বাড়াতে হবে। ইতোমধ্যে সরকারি পলিটেকনিক্যালসমূহে ভর্তি হওয়ার জন্য বিদ্যমান বয়সের যে প্রতিবন্ধকতা ছিল তা তুলে দেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে নতুন গ্র্যাজুয়েট এবং বিদেশ ফেরত কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, দেশের বেসরকারিখাত ও বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর সঙ্গে সমন্বয় আরো বাড়ানো প্রয়োজন, যার মাধ্যমে শিল্পখাতের চাহিদামাফিক শিক্ষাকার্যক্রম চালু এবং দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি করা সম্ভব হবে।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ উন্নয়নে সরকার দেশের বেসরকারি খাতের সাথে একযোগে কাজ করতে অত্যন্ত আগ্রহী, এছাড়াও তিনি দেশের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়া গ্রাজুয়েটদের শিল্পখাত ব্যবস্থাপনার কাজে নিয়োজিত করার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষতা উন্নয়নের উপর জোরারোপ করনে।
অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিজনেস ইন্টিলিজেন্স লিমিটেডের উদ্যোক্তা শাকিব কোরেশি। মূল বক্তব্যে তিনি বলেন, সম্প্রতি স্থানীয় শিল্প-কারখানার কাজের সুযোগ কমে যাওয়া ও বিদেশে হতে প্রবাসীদের দেশে ফেরত আসার কারণে আমাদের কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। এ অবস্থা উত্তরণে অনেকই আত্মকর্মসংস্থানের দিকে ঝুঁকবে, তবে এর জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া আবশ্যক বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
মুক্ত আলোচনায় জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্ম-সচবি) এম এ রাজ্জাক বলনে, ‘আইসিটি, ফার্মাসিটিক্যাল ও কৃষি প্রভৃতি খাতগুলো বর্তমান কোভিড-১৯ সংকট মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে এবং বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে শিল্পখাতের চাহিদা নিরূপণে মানসম্মত গবষেণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শহীদুল আলম বলনে, শিল্পখাতের প্রয়োজন অনুযায়ী প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত করতে হবে এবং শিক্ষাকার্যক্রম গড়ে তুলতে হবে। এছাড়াও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় আরো বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন।
নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ-ফিলিপাইন চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এবং সেন্টার ফর লিডারশিপের হেড কোচ ইঞ্জি. আকবর হাকিম, দ্য কম্পিউর্টাস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খন্দ. আতিক-ই-রাব্বানী, ঢাকা চেম্বারের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ বাশিরউদ্দিন অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়াও ডিসিসিআই প্রাক্তন সভাপতি আসিফ ইব্রাহীম, প্রাক্তন ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুস সালাম, হুমায়ুন রশিদ, প্রাক্তন সহ-সভাপতি খন্দকার শহীদুল ইসলাম, প্রাক্তন পরিচালক খাইরুল মজিদ মাহমুদ, আলহাজ্ব মো. শরফুদ্দিন এবং দাতা মাগফুর প্রমুখ মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০২০
জিসিজি/এমএইচএম