রোববার (১২ জুলাই) রিসারজেন্ট বাংলাদেশ আয়োজিত ‘অনিশ্চিত সময়ে বেসরকারি বিনিয়োগ: বাংলাদেশে কোভিডের প্রভাব এবং নীতিমালার প্রয়োগ’ শীর্ষক তৃতীয় সংলাপে সংশ্লিষ্টরা এসব পরামর্শ দেন।
এমসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবিরের সঞ্চালনায় পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. মাসরুর রিয়াজ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
বক্তারা বলেন, কোভিড পরবর্তী নতুন নতুন সম্ভাবনা খুঁজে বের করা, দেশের স্বাভাবিক উন্নয়ন কৌশলের সাথে তাল মিলিয়ে নীতি সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। ইউরোপ ও দক্ষিণ এশিয়া থেকে নতুন নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণে কার্যকর উদ্যোগসহ সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারকদের পরিকল্পনার সাথে বাস্তবায়নের সংগতি রাখতে হবে।
কর ও বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা খুঁজে বের করতে হবে এবং সহজে ব্যবসা করার সূচকে উন্নতি ও বাংলাদেশের ইতিবাচক ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা সংস্কারের প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
রিসারজেন্ট বাংলাদেশের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম শুভেচ্ছা বক্তব্যে কোভিড থেকে উত্তরণের জন্য ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ড. মাসরুর রিয়াজ মূল প্রবন্ধে কোভিড পরবর্তী অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিশ্বে শিল্প উৎপাদন খাতে যে পরিবর্তন এসেছে, বিনিয়োগকারীদের অগ্রাধিকার যাচাই এবং তাদের দৃষ্টিতে ভবিষত বিনিয়োগ পরিস্থিতি, সুযোগ, সংশ্লিষ্ট নীতি কাঠামো ইত্যাদি বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেয়ার বিষয়ে জোরারোপ করেন। এ অবস্থা থেকে অর্থনৈতিক উত্তরণের জন্য বেসরকারি ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের কোন বিকল্প নেই বলে তিনি জানান।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, বেসরকারি বিনিয়োগ আকর্ষণের সাথে যে সকল সরকারি সংস্থাসমূহ জড়িত তারা যেন আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের সার্বিক সহায়তা প্রদান করে ও কোনরকম হয়রানি না করে সে বিষয়ে নজরদারি জোরদার করতে হবে। শুধুমাত্র বিদেশি বিনিয়োগই নয়, স্থানীয় বিনিয়োগ আকর্ষণেও সম্ভব সকল কিছু করতে সরকারের সহায়তা কামনা করেন তিনি।
বেপজা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল সালাউদ্দিন ইসলাম বলেন, প্রণোদনা এবং প্রতিযোগী শ্রমবাজার বাংলাদেশে বেসরকারি বিনিয়োগ আকর্ষণে সাহায্য করবে।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, সরকার খেলাপি ঋণ হ্রাস ও কাস্টমস আইন যুগোপযোগীকরণের ক্ষেত্রে যথাযথ নীতি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। প্রযুক্তিতে উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তর সমূহের যথাযথ সমন্বয়ের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের ওয়ান স্পট সার্ভিসের সুবিধা আরও সুন্দরভাবে দেওয়া যাবে।
এপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর কাস্টমস ও লজিস্টিক বিষয়সমূহের দুর্বলতাসমূহ সমাধান, বৈদেশিক মুদ্রা পরিস্থিতি পর্যালোচনা, স্থানীয় ও বিদেশি বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে পরামর্শ দেন।
ইউনিলিভার বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও কাদের লেলে দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক বাণিজ্যের সুযোগ সুবিধা গ্রহণ ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা খুঁজে বের করার ওপর জোর দেন।
সংলাপে সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নাহিম রাজ্জাক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা কেন্দ্রীয় কমিটির সচিব ওয়াসেকা আয়শা খান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূইয়া, বিল্ড এর চেয়ারম্যান আবুল কাসেম খান, স্প্যানিশ চেম্বারের সভাপতি নুরিয়া লোপেজ, ফরেন চেম্বারের নির্বাহী পরিচালক নূরুল কবির, গ্রামীণ ফোনের সিইও ইয়াসের আজমান, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সেক্রেটারি জেনারেল রাশিদুল ইসলাম অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৩১৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২০
জিসিজি/এমজেএফ