ঢাকা: কোরবানির পশুর হাটের তুলনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশু বিক্রি হচ্ছে রাজধানীর খামারগুলোতে। একই সঙ্গে ক্রেতারা বলছেন করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে পশুর হাটের তুলনামূলক জনসমাগম কম হওয়ায় খামারগুলোতে কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন তারা।
শনিবার (১৮ জুলাই) রাজধানীর মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকার কোরবানির পশুর খামারগুলো ঘুরে পাওয়া গেছে এমন তথ্য।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশাল পশু হাটে গণজামায়েতের পরিপ্রেক্ষিতে খামারগুলো জনসমাগমও কিছুটা কম।
এ বিষয়ে সাদেক অ্যাগ্রো ফার্মের ম্যানেজার জাহিদ হাসান বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা বর্তমান পরিস্থিতিতে চেষ্টা করছি স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা করতে। এছাড়া করোনার কারণে আমরা ক্রেতার পশু যাবতীয় দায়িত্ব নিয়ে ঈদের আগের দিন পৌঁছে দেবে গন্তব্যে। ’
দেশে শুধুমাত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে গরু লালন-পালন করেন সারা দেশের প্রায় কয়েক লাখ মানুষ। ঈদের বাজারে গরু বিক্রির টাকা থেকেই উঠে আসে তাদের সারা বছরের খরচ। একই সঙ্গে লাভের খাতাও ভারি হয় কিছুটা। তবে ভারতীয় গরু আসার কারণে অনেক সময়ই বাজার পড়ে যাওয়ার কথা শোনা যায়। এবার এ ধরনের কোনো সমস্যা নেই বলেও জানান জাহিদ।
তিনি বলেন, ‘ভারতীয় গরু এখন বাংলাদেশে খুব কমই আসে। যেগুলো আসে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করতে হলেও সেগুলোকে পাঁচ থেকে ছয় মাস লালন-পালন করতে হয়। আর এখন তো গরু উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। লাভজনক হওয়ায় এতে যোগ দিয়েছে বহু পরিবার। তবে করোনা পরিস্থিতির জন্য সেই উৎসাহ-উদ্দীপনা পাচ্ছেন না অনেকেই। আবার অনেকেই খোঁজ-খবর নিয়ে বাজার বুঝে এগিয়ে যাচ্ছেন। ’
সরেজমিনে আরও দেখা গেছে, আসন্ন ঈদুল আজহা সামনে রেখে রাজধানীর পশুর খামারগুলো এখন কোরবানির পশুতে পরিপূর্ণ। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের গরু, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা, মহিষে ভরপুর এসব খামার। এছাড়া রাজধানীর যেসব খামার কেবল দুধ বিপণনের সঙ্গে যুক্ত, সেসব খামারেও বিভিন্ন জাতের ষাঁড় কোরবানি উপলক্ষে লালন-পালন করা হয়েছে। তবে বিক্রি কম ও বড় গরুর তুলনায় ছোট গরুর চাহিদা বেশি বলেও জানালেন খামারিরা।
আল মদিনা ক্যাটেল ফার্মের মালিক রমজান আলী জানান, তার ফার্মে এক হাজার ও নয়শ’ কেজির মতো ওজনের গরুও রয়েছে। এগুলোর অধিকাংশই বিদেশি জাতের গরু। এছাড়া আছে দেশি গরুও। তবে অধিকাংশ ক্রেতাই এবার একটু ছোট সাইজের গুরুর প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
এছাড়া রাজধানীর জাকের ডেইরি ফার্ম, বাবা ডেইরি ফার্ম, হক ডেইরি ফার্ম, জামাল ডেইরি ফার্ম, অর্গানিক ডেইরি অ্যান্ড অ্যাগ্রোভেটসহ বেশ কয়েকটি খামার ঘুরে দেখা গেছে, গরুর পাশাপাশি দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের ছাগল, ভেড়া, দুম্বা আর মহিষও রয়েছে খামারগুলোতে।
ছাগল পালনকারী রমজান আলী বলেন, আকার ভেদে বিভিন্ন রকমের ছাগল-ভেড়া ও দুম্বা রয়েছে তার কাছে। এগুলোর ওজন ১৫ কেজি থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১৪০ কেজি পর্যন্ত। আছে ভারতীয় বিটল প্রজাতির ছাগল। এছাড়া দুম্বার দাম পড়বে ১০ হাজার থেকে দুই লাখ এবং ভেড়ার দাম চাওয়া হচ্ছে সর্বোচ্চ এক লাখ ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২০
এইচএমএস/আরআইএস/