সাভার (ঢাকা): জি-টু-জি পদ্ধতিতে তিন বছরে ৬০ নৌযান নির্মাণের কাজ পেয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। প্রতিটি নৌযান নির্মাণে ব্যয় হবে ৪৫ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার (২১ জুলাই) বিকেলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের নিজ আইডিতে স্ট্যাটাসে দিয়ে এ তথ্য জানান।
স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ২০১৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত ডিজাবিলিটি ইনক্লুসিভ ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বাস্তবায়ন সংক্রান্ত জাতীয় টাস্কফোর্সের সভায় টাস্কফোর্সের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে বিশেষ এক নৌযানের নকশা অনুমোদন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। জি-টু-জি পদ্ধতিতে নৌযানগুলো নির্মাণের কাজ পেয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। প্রতিটি নৌযান নির্মাণে ব্যয় হবে ৪৫ লাখ টাকা।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী আরও লিখেছেন, ইঞ্জিনচালিত এসব নৌযানে কমপক্ষে ৮০ জন মানুষ ও ১০ টন পণ্য পরিবহন করা যাবে। বন্যা-জলোচ্ছ্বাস না থাকলেও নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে এসব বিশেষায়িত নৌযানকে বিদ্যালয় হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। প্রতিটি নৌযানে একটি ফার্স্ট এইড বক্স, একটি হুইল চেয়ার, একটি স্ট্রেচার, একটি ওয়াকিং ফ্রেম, দু'টি আলাদা টয়লেট থাকবে। যার একটি সবার জন্য উন্মুক্ত এবং অন্য একটি বয়স্ক নাগরিকদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
প্রতি বছর ২০টি করে তিন বছরে ৬০টি বিশেষায়িত এই নৌযান সরবরাহ করবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পক্ষে মহাপরিচালক আতিকুল হক এবং নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ডের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডোর আকতার হোসেন উভয় প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম, সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মোহসীনকে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ঐতিহাসিক এ কার্যক্রমের সাক্ষী হওয়ার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি।
এনামুর রহমান আরও লিখেন, মন্ত্রিসভায় অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম, বিশেষ করে বন্যার্ত এলাকায় রিলিফ ও রেসকিউ অপারেশন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শেখ হাসিনা। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল। এই অর্জনকে ধরে রাখতে হবে। বন্যা উপদ্রুত এলাকায় দুর্দশায় পড়া অসহায় মানুষের জন্য ত্রাণের যেন ঘাটতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দিয়েছেন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে।
বাঁধ কিংবা আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেওয়া বানভাসি মানুষদের জীবন বা খাবারের যাতে অসুবিধা না হয়, আশ্রয়কেন্দ্রে শৌচাগার ফ্যাসিলিটি, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট যেন হাত বাড়ালেই পাওয়া যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরও লিখেছেন, আমরা বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোতে পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছি। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতার পাশাপাশি পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতিও রয়েছে। আপনারা সবাই সামাজিক দূরত্ব নিয়ে চলুন। এই বন্যার ক্ষয়ক্ষতি থেকে নিজের জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কিভাবে এড়ানো যায় সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখবেন।
এসময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সব শ্রেণীর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি লিখেছেন, মনে রাখবেন দুর্যোগে পাশে থাকাই আসল বন্ধুর কাজ। কেবল সরকারি দায়িত্ব পালন নয়, মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকাটাও বড় মনুষ্যত্বের পরিচয়।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং অধীনস্থ অধিদপ্তরের সহকর্মীদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি আরও লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রীর মানবিক ত্রাণ ও উপহার সামগ্রী নিয়ে বন্যাকবলিত অসহায় মানুষদের পাশে আপনার দাঁড়িয়েছেন। বন্যার মতো চলমান দুর্যোগ মোকাবিলায় আপনাদের নিরলস প্রচেষ্টা মন্ত্রণালয়ের সুনামকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০২০
এসআরএস