সিরাজগঞ্জ: নিজ গোয়ালের গাভী থেকে জন্ম নেয়া ডংকারকে প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে যত্নের সঙ্গে লালন-পালন করছেন ওমর ফারুক ফরিদ শেখ। সদ্যজাত বাছুর থেকে আজকের বিশালদেহী এ ষাঁড়টিকে পালন করতে পুরো পরিবারকেই ঘাম ঝরাতে হয়েছে।
ডংকারের জন্য তৈরি করা হয়েছে আলাদা গোয়ালঘর, গোসলের জন্য বসানো হয়েছে সেচ পাম্প। ডংকারকে সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে বড় করে তোলার জন্য যা কিছু দরকার, তা আয়োজন করেছেন ফরিদ শেখ। তবে বিফলে যায়নি তার ও তার পরিবারের পরিশ্রম। ৭ ফুট ৬ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য ও ৮ ফুট ২ ইঞ্চি প্রস্থের ডংকারের ওজন এখন ৩৫ মণ।
কিন্তু সেই ডংকারকে বিক্রি নিয়ে চরম শঙ্কায় রয়েছেন ফরিদ শেখ। এতো ভারী ষাঁড়টিকে কোরবানির পশুর হাটে তোলা দুষ্কর। বাড়িতে ক্রেতাদের ভিড় থাকলেও আশানুরূপ দাম উঠছে না। ফলে নানা চিন্তায় রয়েছেন এ গৃহস্থ।
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার বাজার ভদ্রঘাট সেখপাড়ায় ওমর ফারুক ফরিদ শেখের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, বেশ বড় একটি গোয়ালঘরে শুধু ডংকারকে রাখা হয়েছে। পাশে একটি সেচ পাম্প বসানো হয়েছে, রয়েছে বৈদ্যুতিক পাখাও।
সুন্দর ও সুঠামদেহী ষাঁড়টির মালিক ফরিদ শেখ বাংলানিউজকে তিনি বলেন, সাড়ে তিন বছর আগে ষাঁড়টির জন্ম হয়। তখনই চেহারা দেখে এর নাম রেখেছিলাম ডংকার। এরপর সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে ষাঁড়টিকে লালন-পালন করছি। ঘাষ, খড়, খৈল, ভুষি, চালের কুড়া, ভুট্টা, ছোলাসহ দেশীয় খাবার খেয়েই বড় হয়েছে ষাঁড়টি। যত্নসহকারে এটিকে পালন করা হয়েছে। ষাঁড়টির খাওয়া-দাওয়া আর ঘুম, সবই চলে নিয়ম মাফিক। কখনোই তাকে কেমিক্যালযুক্ত খাবার দেয়া হয়নি। এ কারণে এখনো পর্যন্ত কোনো অসুখে পড়েনি ডংকার। স্বাভাবিক খাবারেই ডংকার আজ বিশাল দেহ আর অপরূপ রূপের অধিকারী।
তিনি আরও বলেন, ষাঁড়টিকে হাটে তুলতে পারছি না। করোনা সংকটের কারণে বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি। এরই মধ্যে ফেসবুকসহ বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। অনেক গ্রাহক এলেও আশানুরূপ দাম উঠছে না।
ওমর ফারুক ফরিদের স্ত্রী বেলি বেগম বলেন, সকাল ৯টায় ঘুম থেকে ওঠে ডংকার। ক্ষুধা লাগলে খাবারের জন্য মা-মা বলে মনে হয় আমাকেই ডাকে। মায়ার বাঁধনে জড়ানো ডংকারকে বিক্রি করতে মন চায় না। তবুও বিক্রি করতেই হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান ভুঁইয়া বলেন, ডংকারকে দেশীয় পদ্ধতিতে পালন করেছেন ওমর ফারুক ফরিদ। আমরা ষাঁড়টির ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়েছি। বর্তমানে এটির দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ৭ ফুট ও প্রস্থ সাড়ে ৮ ফুট। প্রায় ৩৫ মণ ওজনের ষাঁড়টি দেখতে সদর ও কামারখন্দ উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৬ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০২০
এসআই