ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

খামারিদের ঋণ দিতে মিল্ক ভিটা-রূপালী ব্যাংকের চুক্তি

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২০
খামারিদের ঋণ দিতে মিল্ক ভিটা-রূপালী ব্যাংকের চুক্তি খামারিদের ঋণ দিতে মিল্ক ভিটা-রূপালী ব্যাংকের চুক্তি

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত কৃষি-প্রণোদনার সুফল প্রান্তিক কৃষকদের মধ্যে পৌঁছে দিতে এবং করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দুগ্ধ খামারিদের সহায়তার লক্ষে ৪ শতাংশ হারে ঋণ বিতরণে মিল্ক ভিটা ও রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) রূপালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।

রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন এমপি এবং মিল্ক ভিটার চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন লিপুর উপস্থিতিতে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এবং মিল্ক ভিটার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও যুগ্ম সচিব অমর চান বণিক নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।  

অনুষ্ঠানে মিল্ক ভিটার চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন লিপু বলেন, করোনা পরিস্থিতি শুরু হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশে কৃষকদের কাছ থেকে দুধ সংগ্রহ করে গুড়া দুধ প্রস্তুত করেছে মিল্ক ভিটা। এসব গুড়া দুধ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ত্রাণ মন্ত্রণালয় কিনে নিয়েছে। এর মাধ্যমে কৃষকরা এই দুর্যোগময় পরিস্থিতিতেও বেঁচে গেছেন।

তিনি বলেন, মিল্ক ভিটার মাধ্যমে রূপালী ব্যাংক খামারিদের টাকা দিবেন যাতে তারা দুধ ফেলে না দিয়ে ঘি বানাতে পারেন। খামারিদের দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানোর জন্য রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পর্ষদকে ধন্যবাদ জানান মিল্ক ভিটা চেয়ারম্যান।  

শেখ নাদির বলেন, সমবায় ছাড়া এই বিশাল জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি সম্ভব ছিল না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মিল্ক ভিটা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন দেশের অসহায় মানুষের জন্য। এই প্রতিষ্ঠানটি সরকারি সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে। কখনো ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হয়নি।  

রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন এমপি বলেন, অতীতে অনেক সমবায় প্রকল্প এসেছিল। কিন্তু অধিকাংশ প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজের হাতে প্রতিষ্ঠা করা মিল্ক ভিটাও পঁচাত্তর পরবর্তী সরকারগুলোর সময় অবহেলিত অবস্থায় ছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে এসে মিল্ক ভিটার মাধ্যমে দুগ্ধ খাতের বিপ্লব ঘটেছে।  

দেশের দুগ্ধ খাতের উন্নয়নে রূপালী ব্যাংক সবসময় সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করবে বলে জানান চেয়ারম্যান। এসময় রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মতিঝিল এলাকায় মিল্ক ভিটার আউটলেট খোলার আহ্বান জানান।  

ব্যাংকের পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল বাছেত খান বক্তব্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজগুলো এগিয়ে নিতে দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন। দুধ ফেলে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি আর কখনও যাতে সৃষ্টি না হয় সেজন্য রূপালী ব্যাংক সবসময় কাজ করবে।  


রূপালী ব্যাংকের পরিচালক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, কোভিড মহামারি আসার পর দুগ্ধ খামারিরা সমস্যায় পড়েন। তাদেরকে এই সমস্যা থেকে উত্তরণে রূপালী ব্যাংক এগিয়ে আসে। দেশকে দুগ্ধ খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে রূপালী ব্যাংক সবসময় পাশে থাকবে।  

রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মানুষ মারা গেলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অসাধারণ ব্যবস্থাপনার ফলে দেশে কোনো ধরণের সংকট সৃষ্টি হয়নি। না খেয়ে একজন মানুষও মারা যায়নি। করোনাকালে যখন আমরা দেখলাম, খামারিরা দুধ বিক্রি করতে না পেরে রাস্তায় ফেলে দিচ্ছে। তখন ‘করোনাকালে দুধ না ফেলে ঘি বানান, দুগ্ধ খাতে জাগুক প্রাণ’ এই স্লোগান সামনে রেখে আমরা দুগ্ধ চাষীদের পাশে দাঁড়ালাম।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মিল্ক ভিটার ঢাকা দুগ্ধ কারখানা, বাঘাবাড়ি দুগ্ধ কারখানা ও টেকেরহাট দুগ্ধ কারখানার তালিকাভুক্ত সমিতির সদস্যদের মধ্য থেকে ১ হাজার সদস্যকে ১০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করছে রূপালী ব্যাংক। মাত্র ৪ শতাংশ সুদে প্রতি সদস্যকে ১ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে। এসব ঋণের কর্পোরেট গ্যারান্টর মিল্ক ভিটা। মিল্ক ভিটা খামারিদের কাছ থেকে কিস্তির অর্থ সংগ্রহ করে ব্যাংকে জমা দেবে।  

অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন, পরিচালক অরিজিৎ চৌধুরী। রূপালী ব্যাংকের ডিএমডি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, খন্দকার আতাউর রহমান ও মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, জিএম অশোক কুমার সিংহ রায়, মো. শফিকুল ইসলাম, গোলাম মর্তুজাসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের উর্ধতন নির্বাহী কর্মকর্তারা।  

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কৃষি ও পল্লী ঋণ বিভাগের জিএম মো. মজিবর রহমান। অনুষ্ঠানে টুঙ্গীপাড়ার মুন্সি রফিকুল ইসলাম, খুলনার ইউনুস গাজী ও সিরাজগঞ্জের জিন্নাহ সরকারের মধ্যে ঋণের চেক বিতরণ করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ২১০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২০
এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।