ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

যেসব কারণে কমছে না আলুর দর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২০
যেসব কারণে কমছে না আলুর দর আলুর ফাইল ফটো

ঢাকা: মাত্র দুই মাস আগেও এক কেজি আলু পাওয়া যেত ৩০ টাকায়। আগস্ট থেকে দাম বাড়লেও সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝির পরই অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে শুরু করে আলুর দর।

বর্তমানে বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। আলুর সবচেয়ে বেশি দামের পার্থক্য তৈরি হয়েছে খুচরা ও পাইকারি বাজারে। এখন এই দুই বাজারে বিক্রির ব্যবধান দেড়গুণেরও বেশি।

দুই মাসে দুইগুণ দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানা মত তৈরি হয়েছে। ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টরা আলুর দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে ভিন্ন ভিন্ন চারটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। আর সাধারণ ভোক্তারা বলছেন, নিয়মিত ও সময়মতো বাজার মনিটরিং না করায় বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। যদিও বাজার নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে ভোক্তা অধিদপ্তর।

এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী গণমাধ্যমকে আলুর দাম বাড়ার পেছনে চার কারণের কথা জানিয়েছিলেন। এরমধ্যে ছিল উত্তরাঞ্চলে টানা চার মাস বন্যার কারণে আলুর পাশাপাশি সবজি চাষ কম হওয়া, হিমাগারে আলুর মজুদ কমে যাওয়া, করোনাভাইরাসের সময় ত্রাণ বিতরণে চাল, ডালের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ আলু বিতরণ হওয়া, এছাড়া সরকারের ২০ শতাংশ ভর্তুকির কারণে গত বছরের তুলনায় চলতি বছর প্রায় ৪০ গুণ বেশি আলু রপ্তানি হওয়া।

রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতিকেজি আলু ৫০ টাকা করে। অন্যদিকে পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩২ টাকা করে। আর সরকার নির্ধারিত খুচরা বাজারে আলুর দর ধরা হয়েছে ৩৫ টাকা। আর পাইকারি মূল্য ৩০ টাকা। খুচরা ও পাইকারি বিক্রির ব্যবধান নিয়েও রয়েছে ভিন্নমত।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি বাজার থেকে আলু সংগ্রহের পর চার ধাপে খরচ আছে, এই চার কারণে দাম কমানো যায় না। এরমধ্যে পাইকারি বাজারে চাঁদা, লেবার খরচ, পরিবহন খরচ আছে। এর বাইরে আছে প্রতি বস্তায় পাঁচ কেজি আলু বাদ পড়ে পচা থাকার কারণে।

এ বিষয়ে মালিবাগ বাজারের খুচরা আলু বিক্রেতা হাফিজ বাংলানিউজকে বলেন, এর আগে কম দামেই আলু পাওয়া যেত বাজারে। এখন দাম বেড়েছে। খুচরায় আলু সংগ্রহের পর চাঁদা, লেবার খরচ, পরিবহন খরচ ও ঘর ভাড়া বাবদ চলে যায় প্রতিকেজিতে পাঁচ টাকা। আবার পাইকারি বাজারে আলুর দামের চার্টে উল্লেখ থাকছে ৩০ টাকা, কিন্তু দাম রাখা হচ্ছে ৩৭ টাকা।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি আলু বিক্রেতা আফজাল হোসেন বলেন, আমাদের দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু হিমাগার থেকে কম দামে আলু পাওয়া যায় না। সেখানে আলুর খরচ আর সল্পতার কারণে কম দামে ছাড়ছে না। এ অবস্থায় আমরা বিপদে আছি। দাম বেশি হলে জরিমানার ভয় আবার কম দামে বিক্রি করলে লোকসান গুনতে হচ্ছে। এরপরও ক্রেতা ধরে রাখতে আমরা কিছুটা লোকসানে আলু ছাড়ছি।

ভোক্তাদের সংগঠন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারকে কঠোর হতে হবে। খুচরা, পাইকারি ও হিমাগার পর্যায়ে মনিটরিং আরও জোরদার করতে হবে।

ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। আলু মজুদ আছে। অভিযান আরও জোরদার হচ্ছে। কোনো হিমাগারে মজুদ থাকার পরও আলু না ছাড়া হলে সেগুলো নিলামের ব্যবস্থা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২০
ইএআর/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।