ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

শুঁটকি শিল্প স্থাপনসহ ২৪৫৯ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০২০
শুঁটকি শিল্প স্থাপনসহ ২৪৫৯ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন

ঢাকা: শুঁটকির স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রপ্তানি বাড়াতে কক্সবাজার শহর সংলগ্ন খুরুশকুলে একটি কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ জন্য ১৯৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘কক্সবাজার জেলায় শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।

মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।

এসময় শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলনকক্ষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল  ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

প্রকল্পের আওতায় একটি জিপ, একটি ডাবল কেবিন পিকআপ, একটি মাইক্রোবাস ও চারটি মোটরসাইকেল কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু যানবাহনের জন্য অর্থ বিভাগের জনবল কমিটি কোনো গাড়িচালকের পদ সুপারিশ করেননি। প্রকল্পের ডিপিপিতে এসব বিষয় সংশোধন করতে বলেছে পরিকল্পনা কমিশন।

বিদেশে প্রশিক্ষণ নেওয়া ছাড়াও অভ্যান্তরীণ প্রশিক্ষণ বাবদ ১ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ৪ হাজার ৮৫৫ জন বিএফডিসির কর্মকর্তা, কর্মচারী, উপকারভোগী ও স্টেকহোল্ডারের জন্য প্রশিক্ষণ বাবদ এ টাকা ব্যয় হবে। প্রতিজনের প্রশিক্ষণ ভাতা ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫০০ টাকা। প্রশিক্ষণ সামগ্রী (ব্যাগ, নোট প্যাড ও কলম) বাবদ ১ হাজার ২০০ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। নাস্তা ও দুপুরের খাবার বাবদ প্রতিজনের জন্য ব্যয় হবে ৫০০ টাকা।

প্রকল্পের আওতায় আড়াই হাজার বর্গমিটার আয়তনের অবতরণ শেড, ১ হাজার ৮৬০ বর্গমিটার আয়তনের চারতলা ল্যাব, অফিস, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কাম ডরমেটরি নির্মাণ করা হবে। ১০০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন কোল্ড স্টোরেজ (চার চেম্বার বিশিষ্ট), প্যাকেজিং ফ্যাক্টরি ও ৩৬টি শুঁটকি বিক্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ১০টি টয়লেট, তরল বর্জ্য শোধনাগার বা ইটিপি, ইনচার্জ অব ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ডাব্লিউটিপি) নির্মাণ করা হবে।

প্রকল্পে চারজন কর্মকর্তার মূল বেতন ধরা হয়েছে ৬৯ লাখ ১৬ হাজার টাকা এবং ৩ জন কর্মচারীরর মূল বেতন ধরা হয়েছে ১৫ লাখ ৭১ হাজার টাকা। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় একজনের মোবাইল ভাতা ধরা হয়েছে ৯৭ হাজার টাকা। একজনের মোটরযান রক্ষণাবেক্ষণ ভাতা ধরা হয়েছে ২১ লাখ টাকা। পেট্রোল ও লুব্রিকেন্ট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬ লাখ টাকা। সাতজনের বাড়িভাড়া ভাতা ধরা হয়েছে ৩৮ লাখ ১০ হাজার টাকা।

মাছের অপচয় কমিয়ে শুঁটকি উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন করবে সরকার। শুঁটকি উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, প্যাকেজিং ও বিপণের কাজে জড়িতদের জন্য নিরাপদ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। সারা বছরই কক্সবাজারে শুঁটকি উৎপাদন হচ্ছে। শুঁটকি তৈরি একটি অতি প্রচলিত মাছ সংরক্ষণ পদ্ধতি হলেও বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রেই বাণিজ্যিক শুঁটকি উৎপাদন ও সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন প্রকার কৃষিজ কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। তাছাড়া শুঁটকি তৈরির সময় মাছ ভালোভাবে পরিস্কার না করা, পরিবেশ, আবহাওয়া ও গুণগতমান রক্ষার অভাবে কাঙ্ক্ষিত মানসম্পন্ন শুঁটকি তৈরি সম্ভব হয়ে ওঠে না। অনুমান করা হয়, সমুদ্র এলাকায় পচন ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণে ১০ থেকে ৩৫ শতাংশ শুঁটকি নষ্ট হয়। শুঁটকির গুণগতমান উন্নত করার জন্য দেশি উপায়ে তৈরি গ্রিন হাউস মেকানিক্যাল ড্রায়ার খুবই উপযোগী।  

‘আমিন বাজার, মাওয়া, মোংলা ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন’ প্রকল্পের আওতায় পদ্মাসেতুর পাশ দিয়ে কয়লাভিত্তিক সঞ্চালন লাইন হচ্ছে। এতে মোট ব্যয় ধরা হচ্ছে ১ হাজার ১৪৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়। জুলাই ২০১৬ থেকে ডিসেম্বর ২০২১ মেয়াদের মধ্যেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। উৎপাদিত কয়ালভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ আমিনবাজার হয়ে নগরীতে প্রবেশ করবে। সেই লক্ষ্যে মোংলা থেকে আমিন বাজার পযর্ন্ত প্রায় ১৬৪ দশমিক ৬ কিলোমিটার ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হবে। অপরদিকে, সেতুর পাশেই ৯ দশমিক ৪ কিলোমিটার রিভার ক্রসিং লাইন নির্মাণ করা হবে।

৫৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘যমুনা নদীর ভাঙন থেকে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার সিংড়াবাড়ী, পাটাগ্রাম ও বাঐখোলা এলাকা সংরক্ষণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। একনেক সভায় ‘পাঁচদোনা- ডাঙ্গা-ঘোড়াশাল জেলা মহাসড়কে একস্তর নিচু দিয়ে উভয়পাশে পৃথক সার্ভিস লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে ফের ৫৫১ কোটি টাকা বাড়তি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখন এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ১ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে।

এসময় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) মো. জাকির হোসেন আকন্দ, শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য (সচিব) মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মো. মামুন-আল-রশীদ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০২০
এমআইএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।