ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

পানি শোধনাগার প্রকল্পে ব্যয় বাড়লো ২৯০৩ কোটি টাকা

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২১
পানি শোধনাগার প্রকল্পে ব্যয় বাড়লো ২৯০৩ কোটি টাকা প্রতীকী ছবি

ঢাকা: ঢাকা মহানগরীর পুরান ঢাকা, মতিঝিল, পুরান পল্টন, ফকিরাপুল, গুলশান, বনানী, নিকুঞ্জ, খিলক্ষেত, বাড্ডাসহ মিরপুর ও তৎসংলগ্ন এলাকাসমূহে দীর্ঘদিন ধরে প্রয়োজনের তুলনায় পানি সরবরাহ অপ্রতুল। নগরবাসীর জন্য ২৪ ঘণ্টা পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলনের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে ভূ-উপরিস্থ উৎস থেকে পানি ব্যবহারের জন্য কয়েকটি পানি শোধনাগার নির্মাণ কার্যক্রম চলমান।

এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ছিল ৫ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা। এখন  প্রস্তাবিত সংশোধনে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৮ হাজার ১৫১ কোটি টাকা। ফলে প্রকল্পের ব্যয় ৫৫ শতাংশ বা ২ হাজার ৯০৩ কোটি টাকা বাড়ছে।

‘ঢাকা এনভায়রনমেন্টালি সাসটেনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রজেক্ট’-এর আওতায় এই ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী সংস্থা ঢাকা ওয়াসা।  

প্রকল্পটি একনেক সভায় ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অনুমোদন পায়। ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল একনেক সভায়। এখন ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রকল্পের মেয়াদ আরও তিন বছর বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুন নাগাদ করা হয়েছে।  

বুধবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।

জানা যায়, নানা কারণে প্রকল্পের সময়-ব্যয় বেড়েছে। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল বৃদ্ধির কারণে সকল প্যাকেজের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৫ সালের পূর্বে রাস্তা খনন ফির সঙ্গে সার্ভিস চার্জ ও ভ্যাট বিল সিটি করপোরেশনকে দেওয়ার প্রচলন ছিল না। নতুন এ ব্যয়গুলো অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় প্রকল্পের জিওবি অংশে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে।  প্রকল্প মেয়াদ বৃদ্ধির কারণে ২টি পরামর্শক ও ২টি এনজিও প্রতিষ্ঠানের চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি পেয়েছে। জমি অধিগ্রহণ বাবদ মোট ৪৩৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা এবং ক্ষতিপূরণ বাবদ মোট ৬৩ কোটি ২১ লাখ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।

ঢাকা ওয়াসা সূত্র জানায়, পরিশোধিত পানি সরবরাহের মাধ্যমে ঢাকা মহানগরীতে টেকসই পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নতিকরণে প্রকল্পটি নেওয়া হয়। ঢাকা ওয়াসার লক্ষ্যমাত্রা ৫০০ এমএলডি (মিলিয়ন লিটার পার ডে) ক্ষমতাসম্পন্ন ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণ, ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীলতা ৩০ শতাংশ কমানো ও ২০৩০ সালের মধ্যে ৭০ শতাংশ ভূ-উপরিস্থ পানি সরবরাহ নিশ্চিতকরণ।

প্রকল্পটি নারায়ণগঞ্জ জেলার বিশবন্দী, আড়াইহাজার, গন্ধর্বপুর ও রূপগঞ্জ এলাকায় চলমান।

মূল প্রকল্পটি ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ এর ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদে বাস্তবায়নের সময়সীমা ছিল। নতুন করে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের জুন নাগাদ বৃদ্ধি করা হয়। প্রকল্পে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, এএফডি ও ইআইবি ঋণ ৫ হাজার ৪৪২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

প্রস্তাবিত সংশোধিত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ভূ-উপরিস্থ পরিশোধিত পানি সরবরাহের মাধ্যমে ঢাকা মহানগরীর পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নতি করা সম্ভব হবে এবং ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর নির্ভরশীলতা কমবে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মো. মামুন-আল-রশীদ বলেন, চলমান পানি শোধনগার নির্মাণ, ইনটেক ও অপরিশোধিত পানির লাইন স্থাপন (প্যাকেজ -১) খাতে ১ হাজার ১১১ কোটি ৬০ লাখ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিশোধিত পানির লাইন স্থাপন (প্যাকেজ -২) খাতে ৪১২ কোটি ৪৮ লাখটি টাকা এবং ভ্যাট, ট্যাক্স ও সিডি খাতে ৩১৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। সেকেন্ডারি ডিস্ট্রিবিউশন লাইন স্থাপন, ৫০টি গভীর নলকূপ স্থাপন, প্রতিস্থাপন প্যাকেজ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যার ফলে ৫৬০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বেড়েছে। এসব কারণেই মূল প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২১
এমআইএস/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।