ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড: যা থাকছে অংশগ্রহণকারীদের জন্য

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২১
ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড: যা থাকছে অংশগ্রহণকারীদের জন্য আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। 

ঢাকা: দেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হতে যাচ্ছে ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড। হংকং থেকে শুরু হওয়া এই অলিম্পিয়াড এবারই প্রথম হংকং এর বাইরে বাংলাদেশে আয়োজিত হতে যাচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য থাকছে অপার সম্ভাবনা।

বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) শুরু হচ্ছে অলিম্পিয়াডের বাংলাদেশ পর্বের আয়োজন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে (বিআইসিসি) তিন দিনের এই আয়োজন চলবে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

একই ভেন্যুতে আগামী ২ থেকে ৪ জুলাই আয়োজিত হবে অলিম্পিয়াডের মূল আসর তথা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা। আর এতে অংশ নেবেন বাংলাদেশসহ ৫০টিরও বেশি দেশের প্রতিযোগীরা।

অলিম্পিয়াডে কারা অংশ নিতে পারবেন এবং অংশগ্রহণকারী ও বিজয়ীরা কী পাবেন? এই বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছে বাংলানিউজ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান প্রযুক্তির প্রায় সবকিছুর সঙ্গেই ব্লকচেইন’র সম্পর্ক আছে। আর তাই যারা এ বিষয়ে কাজ করছেন তাদের জন্য রয়েছে অপার সম্ভাবনা যেখানে ইন্ডাস্ট্রি, একাডেমিয়া আর সরকারের মধ্যে দারুণ মেলবন্ধন করে দিতে পারে অলিম্পিয়াডের মতো আয়োজন।

ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড বাংলাদেশের সমন্বয়ক হাবীবুল্লাহ নিয়ামুল করীম বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা এই আয়োজনে অংশ নিতে পারবেন। তবে, যারা বিগত এক বছরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা শেষ করে বের হয়েছেন, তারাও অংশ নিতে পারবেন। শীর্ষ ৪০টি প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশ পর্বের অলিম্পিয়াড আয়োজিত হবে। গত বছর ২০টি প্রকল্প নিয়ে করা হয়েছিল। তবে আমাদের ধারণা যে, এবার আরও বেশি প্রকল্প জমা পড়বে। তাই প্রকল্পের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ পর্বে বিজয়ীদের জুলাই এর মূল আসরে পাঠানো হবে।

যারা অংশ নিতে চান তাদেরকে প্রযুক্তি সম্পর্কিত বা বিজ্ঞাপন বিভাগের কোনো বিষয়েই অধ্যয়নরত হতে হবে এমন কোনো শর্ত নেই। বরং অন্য বিভাগে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরাও এতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন বলেও জানান নিয়ামুল করীম।

তিনি বলেন, অনেকেই ভাবতে পারেন যে এখানে হয়তো শুধু আইটি (তথ্য প্রযুক্তি) বিষয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরাই অংশ নিতে পারবে কিন্তু বিষয়টি মোটেও তেমন নয়। বরং আমরা অনুপ্রাণিত করি যারা অন্যান্য বিভাগে অধ্যয়ন করছেন তারাও যেন আসেন। যেমন কেউ যদি ব্যবসায় বিভাগের কোনো বিষয়ে পড়াশুনা করে থাকেন তাদেরকেও আমরা স্বাগত জানাই। ব্লকচেইন প্রযুক্তির সাথে সকল বিষয়ের সংযোগ আছে। কাজেই বিভিন্ন বিষয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদেরও এর সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।

এবারের অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে থেকে যারা বিজয়ী হবেন তাদের পুরস্কারের বিষয়ে নিয়ামুল কবীর বলেন, বিজয়ীদের জন্য মোট সাড়ে ৩ লাখ টাকার পুরস্কার থাকছে এবারের আয়োজনে। এর মধ্যে চ্যাম্পিয়ন প্রকল্পটি অর্থ্যাত যেটি পুরো আসরের মধ্যে বিজয়ী হবে সেটিকে দেওয়া হবে ‘প্রফেসর জামিলুর রেজা চৌধুরী চ্যাম্পিয়ন অ্যাওয়ার্ড’ যার প্রাইজমানি থাকবে এক লাখ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিজয়ী প্রকল্প পাবে যথাক্রমে ৬০ হাজার ও ৪০ হাজার টাকা। পাশাপাশি পাঁচটি ক্যাটেগরি–ই-গভর্নেন্স, ফিনটেক, ডকুমেন্ট অথেনটিকেশন, সাপ্লাই চেইন এবং আইন্ডেন্টি অ্যান্ড প্রাইভেসি; তে একটি করে প্রকল্পকে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। একইসঙ্গে প্রোটোটাইপ বিভাগে একটি প্রোটোটাইপ বিজয়ী হবে। এই ছয় বিভাগের বিজয়ী সবাই ২৫ হাজার টাকা অর্থ পুরস্কার পাবে। আর মূল পর্বে যারা বিজয়ী হবে তাদের জন্য ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডের পক্ষ থেকেই পুরস্কার ঘোষণা করা হবে।

তবে শুধু পুরস্কার বা প্রাইজ মানি’তে এই আসরের মর্মার্থ বোঝা যাবে না বলে উল্লেখ করেছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।  

তিনি বলেন, শুধু পুরস্কারে এই আসরের অংশগ্রহণকারীদের কার্যক্রম শেষ হয়ে যায় না। এ ধরনের প্রতিযোগিতায় দেশ-বিদেশের বিনিয়োগকারীরা থাকেন; এঞ্জেল ইনভেস্টর, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ইনভেস্টর ইত্যাদি। দেখা গেলো, কোনো একটা প্রকল্প হয়তো এখানে কোনো পুরস্কার জিতলো না কিন্তু কোনো একটা কোম্পানির বা বিনিয়োগকারীর সেই প্রকল্প ভালো লেগে গেলো। ফলশ্রুতিতে ওই প্রকল্প ফান্ডিং বা বিনিয়োগ পেয়ে যেতে পারে। এছাড়াও আয়োজনের সঙ্গে আইসিটি বিভাগ থাকায় প্রকল্পগুলোর কোনোটির মধ্যে যদি সম্ভাবনা থাকে সেটিকে ব্যবসায়িকভাবে সম্প্রসারণ করার তাহলে আমাদের আইডিয়া প্রকল্প থেকে সেটিতে অর্থ অনুদান করা যেতে পারে। বাংলাদেশ স্টার্টাপ কোম্পানি সেখানে বিনিয়োগ করতে পারে।

এর বাইরেও প্রকল্পগুলোকে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা করা হতে পারে বলেও জানিয়েছেন পলক।

তিনি বলেন, কোনো একটি সম্ভাবনাময় প্রকল্প বা স্টার্টাপকে আমরা মেন্টরিং করতে পারি। এটাও কিন্তু দারুণ একটি সুযোগ সেই প্রকল্প বা স্টার্টাপের জন্য। এর অনেক গুরুত্ব আছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২১
এসএইচএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।