ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

২ বছরের মধ্য বড় ধরনের পরিবর্তন পুঁজিবাজারে দেখতে পারবেন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২১
২ বছরের মধ্য বড় ধরনের পরিবর্তন পুঁজিবাজারে দেখতে পারবেন মঞ্চে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামসহ অন্যরা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: দুই বছরের মধ্যে বড় ধরনের পরিবর্তন পুঁজিবাজারে দেখতে পারবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

শনিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে ইআরএফ মিলনায়তনে ‘ডায়ালগ অন বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমি’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।

ডায়ালগটির আয়োজন করে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)।

তিনি বলেন, ‘ভালো অর্থনীতি বলতে বোঝায় যেখানে অর্থনীতির সঠিক পারফর্ম করতে পারে, ক্যাপিটাল মার্কেট যেখানে সঠিক হতে পারে, যেখানে স্টক এক্সচেঞ্জে বন্ড ট্রেড করা যায়, কমোডিটি মার্কেট নিয়ে কাজ করা যায়, এসএমই মার্কেট নিয়ে কাজ করা যায়। সেই ইকোনমিকে আমরা হেলদি ইকোনোমি বা ম্যাচিওরড বলতে পারি। আমরা সত্যিকার অর্থে ওই অবস্থানে এখনো যেতে পারেনি, তবে আমরা ওই পথেই এগোচ্ছি। আমরা আশা করি, আগামী দুই বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারে অনেক বড় পরিবর্তন দেখতে পাবেন। তখনই আমরা ‘শ্যালো ক্যাপিটাল মার্কেট’ থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো। পৃথিবীতে যত বড় বড় ফাইন্যান্সিয়াল হাব বা বাণিজ্যিক কেন্দ্র রয়েছে আমরা সেখানে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমরা দুবাইয়ে গিয়েছি। সেখান থেকে ভালো রেসপন্স পেয়েছি’।

তিনি বলেন, ‘আমরা মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি, এখানে বড় ধরনের বিদেশি বিনিয়োগ আসবে।   এই কোয়ার্টার এবং সামনের কোয়ার্টারে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো ভালো করছে। ফান্ডগুলো ডিভিডেন্ড দিতে শুরু করেছে। আমরা আশা করছি বিনিয়োগকারীরা ডিভিডেন্ড পেলে তাদের বিশ্বাস এবং আস্থা আসবে। এতে করে এই সেক্টর ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করছি’।

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি তখন মার্কেট সাইজ ছিল সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকা এটা এখন ৫ লাখ কোটি টাকার আশেপাশে আছে। আশা করছি এটা আরো বাড়বে’।

এক প্রশ্নের জবাবে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, প্রত্যেকটি রেগুলেটরের নিজস্ব কিছু দায়-দায়িত্ব আছে। সে দায়িত্ব অনুযায়ী তাদের কাজ করতে হয়। আমাদেরও কিছু দায়-দায়িত্ব আছে। এর মধ্যে থেকে আমাদের কাজ করতে হয়। যেমন কোন কোম্পানি তালিকাভুক্ত হবে, কিভাবে লভ্যাংশ দেবে, কিভাবে এজিএম করবে, এসব বিষয় দেখভাল করা আমাদের দায়িত্ব। সম্প্রতি আমরা খেয়াল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের সঙ্গে কন্সার্ন না করেই কিছু কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। এ বিষয়ে আমরা দেশের সর্বোচ্চ মহলের সঙ্গে কথা বলেছে। তার নির্দেশেই আমি গভর্নর এর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি। সে পরিপ্রেক্ষিতেই বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি হাইপ্রোফাইল টিম বিএসইসিতে আগামী ১৫ মার্চ দেখা করতে আসবে। সে বৈঠকে আমরা এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। যাতে আমরা ভবিষ্যতে এসব বিষয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করতে পারে সে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। যাতে কোন রেগুলেটরি সিদ্ধান্ত কারো অসুবিধার কারণ না হয়ে দাঁড়ায়’।

ইনসাইডার ট্রেডিং সম্পর্কে তিনি বলেন, কেউ যদি ইনসাইডার ট্রেডিং করার চেষ্টা করছে সঙ্গে সঙ্গে সফটওয়্যারে ধরা পড়ে যাচ্ছে। তাদের ডেকে সর্তক করা হচ্ছে, অনেক সময় বিও একাউন্ট বন্ধ করা হচ্ছে, একইসঙ্গে জরিমানাও করছি। তবে এগুলো ভেতরে ভেতরে করছি। যাতে করে কোনভাবেই প্যানিক সৃষ্টি না হয়। এটি একটি সংবেদনশীল মার্কেট। আমাদের জবাবদিহিতার কোন ঘাটতি নেই। তবে আমরা আশা করবো কোন কিছু আমদের সঙ্গে যাচাই-বাছাই না করে কোন নিউজ না করার অনুরোধ করেন করেন তিনি।

ভালো কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হচ্ছে না কেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এবং তালিকা বর্হিভুত কোম্পানির করের ব্যবধান মাত্র সাড়ে সাত শতাংশ। এই ব্যবধান কমপক্ষে ১৫ শতাংশ হতে হবে। এইজন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে আগামী বাজেটে এই দুই খাতে করের ব্যবধান ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাবনা করেছি। তা না হলে ভালো কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসতে আগ্রহী হবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, আমাদের বাজেটের আকার ৫ লাখ কোটি টাকা, আমাদের বাৎসরিক অর্থনীতির আকার সাড়ে ৩০০ বিলিয়ন ডলার। অথচ প্রতিবছর আমাদের মাত্র এক থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা আইপিও’র মাধ্যমে উত্তোলন করা হয়। এটা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। দেশের শিল্পায়ন হতে হলে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে। সেজন্য আমাদের বন্ড মার্কেটের দিকে বেশি নজর দিতে হবে। পাশাপাশি ভালো ভালো কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুঁজিবাজার এখন অনেক বেশি আধুনিকায়ন হয়েছে। ফলে এখন আর আগের মতো কারসাজির সুযোগ নেই। ফলে ১৯৯৬ কিংবা ২০১০ সালের মতো বাজারে বড় পতন হবে বলে মনে করি না।

ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভীর সভাপতিত্বে সভায় সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশেদুল ইসলাম।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২১/আপডেট: ১৮১৬ ঘণ্টা
এসএমএকে/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।