ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আমানত ও সম্পদের ২৭ শতাংশ নয় ব্যাংকে

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৭ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২১
আমানত ও সম্পদের ২৭ শতাংশ নয় ব্যাংকে

ঢাকা: তিনটি বিশেষায়িত ব্যাংকসহ সরকারি ৯টি ব্যাংকের কাছে রয়েছে দেশের মোট আমানত ও সম্পদের ২৭ শতাংশ। অপর দিকে বিদেশিসহ বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর কাছে রয়েছে বাকি আমানত ও সম্পদের বাকি ৭৩ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সাল শেষে ব্যাংকিং খাতে আমানতের পরিমানের দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ১৪ ট্রিলিয়ন টাকা। আগের বছরের তুলনায় আমানত বেড়েছে ১২ দশমিক ৪৬ শতাংশ। ২০১৮ সালে ব্যাংকিংখাতে আমানত ছিল ১০ দশমিক ৮০ ট্রিলিয়ন টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে সম্পদের পরিমান দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৩০ ট্রিলিয়ন টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ দশমিক ৮৪ শতাংশ বেশি।  

প্রতিবেদনে দেশের ব্যাংকিং খাতে চারটি বিভাগে ব্যাংকের মালিকানার ধরণ উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন সরকারি ব্যাংক, সরকারি বিশেষায়িত ব্যাংক, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংক।

প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে সরকারি ব্যাংকের আমানত ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে কমে ২৫ দশমিক শতাংশে নেমে এসেছে। অপর দিকে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের আমানত ৬৬ শতাংশ বেড়ে ৬৮ দশমিক ১ শতাংশ হয়েছে। বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকের আমানত ৪ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমে ৪ দশকি ৩ শতাংশ এবং বিশেষায়িত সরকারি ব্যাংকের আমানত আগের বছরের মতো ২ দশমিক ৬ শতাংশই রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সাল পর্যন্ত দেশে দুটি নতুন ব্যাংকসহ মোট ৫৯টি ব্যাংক তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। নতুন লাইসেন্স পাওয়া ব্যাংক দুটি হলো প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এবং কমিউনিটি ব্যাংক। ২০২০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি লাইসেন্স পাওয়া নতুন আরেকটি বাণিজ্যিক ব্যাংক হলো বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড।

প্রতিবেদন মতে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের কার্যরত ব্যাংকগুলোর মোট শাখার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৫৭৮টি। আগের বছরের তুলনায় শাখার সংখ্যা বেড়েছে ২৯২টি। ২০১৮ সালে ব্যাংক শাখা ছিল ২০ হাজার ২৮৬টি।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, পরিচালনা পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে দেশে তিন ধরনের ব্যাংক রয়েছে। যেমন প্রচলিত ব্যাংক, ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক এবং প্রচলিত ও ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক।

২০১৯ সালের ডিসেম্বর শেসে ৫৯টি ব্যাংকের মোট ১০ হাজার ৫৭৮টি শাখার মধ্যে পল্লী অঞ্চলের শাখার সংখ্যা ৪৮ দশমিক ৫১ শতাংশ বা ৫ হাজার ১৩১টি এবং শহরাঞ্চলের শাখার সংখ্যা ৫১ দশমিক ৪৯ শতাংশ বা ৫ হাজার ৪৪৭টি।

সরকারি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর শহরাঞ্চলের শাখার সংখ্যা ২ হাজার ১৮টি এবং পল্লী অঞ্চলের শাখার সংখ্যা এক হাজার ৭৫৫টি। সরকারি বিশেষায়িত ব্যাংকের এক হাজার ২০৫টি শাখা রয়েছে পল্লী অঞ্চলে এবং ২৭৮টি শাখা রয়েছে শহরে।

বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর শহরাঞ্চলের শাখার সংখ্যা ৩ হাজার ৩৪৯টি এবং পল্লী শাখার সংখ্যা এক হাজার ৯০৮টি। বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মোট শাখার সংখ্যা ৬৫টি।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) প্রফেসর ড. শাহ মো. আহসান হাবীব বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাতের প্রবৃদ্ধির আরও সুযোগ রয়েছে। কয়েকটি ছাড়া অধিকাংশ ব্যাংক প্রচলিত ব্যাংকিং করছে। প্রবৃদ্ধির জন্য অর্থনীতির নির্দিষ্ট ক্ষেত্রগুলোকে লক্ষ্য করে ব্যাংকগুলোর সেবা কার্যক্রম প্রসারিত করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো তাদের সুশাসন ও আস্থার জায়গা ধরে রেখে ব্যবসা আরও সম্প্রসারণ করতে পারে। কারণ বেসরকারি ব্যাংকের কাছে এখনো অনেক আমানত ও সম্পদ রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২১
এসই/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।