ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে বাধা নেই 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০২১
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে বাধা নেই  বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, ছবি- রাজিন চৌধুরী

ঢাকা: দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে আর কোনো বড় বাধা নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানিকারক ও মালিক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান।

শনিবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে উত্তর আমেরিকা সফর বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

 

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আমরা ইবিএ পরবর্তী শুল্ক সুবিধা ‘জিএসপি প্লাসের’ বিষয়েও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাংলাদেশ প্রতিনিধি এবং ব্রাসেলসে একাধিক বৈঠক করেছি। বিশেষ করে জিএসপি প্লাসের একটি অন্যতম শর্ত ৭ দশমিক ৪ শতাংশ ইম্পোর্ট থ্রেশোল্ড থেকে অব্যাহতি দেওয়া বা এর বিকল্প ফর্মুলা প্রবর্তনের অনুরোধ করেছিলাম। আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের প্রস্তাবিত ২০২৪-২০৩৪ জিএসপি রেগুলেশনে এই ইম্পোর্ট থ্রেশোল্ড শর্তটি বাদ দিয়েছে।

তিনি বলেন, এর ফলে আমরা যখনই ইবিএ সুবিধা হারাই না কেন, জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে আর বড় কোনো বাধা থাকলো না। আমি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে তাদের এই পদক্ষেপের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি, বিশেষ করে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদ্য বিদায়ী রাষ্ট্রদূত রেনশে টেরিংকে। এ বিষয়ে তার সঙ্গে আমাদের অনেক সভা হয়েছে এবং আমাদের বক্তব্যটি ইউরোপীয় কমিশনে তুলে ধরতে তিনি অবদান রেখেছেন।  

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক বলেন, আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দরপতন এবং স্থানীয় পর্যায়ে কিছু সমস্যা, যেমন- শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়ার জন্য প্রদত্ত ঋণ পরিশোধের কিস্তির সংখ্যা ১৮টির পরিবর্তে ৩৬টি করা প্রয়োজন। লোকাল ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্রের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত কাঁচামাল, সুতা ও আনুষাঙ্গিক দ্রব্যাদির ক্ষেত্রে বন্ডেড ওয়্যার হাউস লাইসেন্স থাকার বাধ্যবাধকতা রহিত করা। গ্রুপ অব কোম্পানির একটি প্রতিষ্ঠানের ঋণ খেলাপি হলে সহযোগী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ না করা। বন্ড লাইসেন্সে এইচএস কোড ও কাঁচামালের বিবরণ অন্তর্ভূক্তির জটিলতা নিরসন করা। সূতা থেকে নিট গার্মেন্টস উৎপাদনে অপচয় হার বাড়ানোর কারণে জরিমানা আরোপ না করা। বিমানবন্দরে রপ্তানিপণ্য ত্বরিত স্ক্যানিং করার জন্য স্থাপিত ইডিএস মেশিনগুলো যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা এবং পণ্য নামানোর পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কোম্পানির ভেতরে পণ্য নিয়ে আসা, যাতে করে পণ্যগুলো বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট না হয়। বেনাপোল বন্দরসহ অন্যান্য স্থলবন্দর, বিশেষ করে ভোমরা ও সোনামসজিদ এর মাধ্যমে বন্ড সুবিধার আওতায় তুলা, সুতা, কাপড় এবং বস্ত্র ও পোশাকখাতের অন্যান্য কাঁচামাল আমদানি এবং আংশিক শিপমেন্টের অনুমোদন দেওয়া। এ বিষয়গুলোসহ বেশকিছু বিষয় নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে আমরা একাধিক বৈঠক করেছি। আমরা বিশ্বাস করি, করোনার জন্য শিল্পের ক্ষতি কাটিয়ে প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখতে ও কর্মসংস্থানসহ অর্থনীতিতে শিল্পের অবদান অব্যাহত রাখতে সরকারের নীতি সহায়তা ও সমর্থন দেওয়া অব্যাহত থাকবে।  

ফারুক হাসান বলেন, পোশাকখাত শুধুমাত্র কিছু উদ্যোক্তা আর ৪০ লাখ শ্রমিকের শিল্প নয়। এই শিল্পের ওপর দাঁড়িয়ে আছে দেশের অর্থনীতি। এর মাধ্যমে বিকশিত হচ্ছে বিভিন্ন শিল্প, যেমন হোটেল, পর্যটন, ব্যাংক, বীমা, প্রসাধনী ইত্যাদি। এসব খাতের মাধ্যমে সরকারের বিপুল রাজস্ব আসছে। বাংলাদেশের প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ কোনো না কোনোভাবে এই শিল্পের ওপর তাদের জীবিকার জন্য নির্ভরশীল। নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র বিমোচন, মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল অর্জন এবং বর্তমানে টেকসই প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এই শিল্পটি একটি নীরব ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। তাছাড়াও অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছর নাগাদ জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৫১ লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে যেখানে শিল্পের শেয়ার বর্তমান ৩৫ শতাংশ থেকে ৪২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে হবে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মূখ্য ভূমিকা পালন করতে পারবে পোশাক শিল্প।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইর সহ-সভাপতি, পরিচালক ও অন্যান্য নেতারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০২১
এসই/এসআইএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।