ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাংলাদেশে ৫ম বৃহত্তম  বিনিয়োগকারী দেশ কোরিয়া

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২২
বাংলাদেশে ৫ম বৃহত্তম  বিনিয়োগকারী দেশ কোরিয়া

ঢাকা: ঢাকার কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের দূতাবাস তৈরি পোশাক খাতে  সহযোগিতার ওপর বিগত পাঁচ দশকে কোরিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্কের ইতিহাসের একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রকাশ করেছে। দূতাবাস আগামী বছর কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকীর প্রস্তুতির অংশ হিসেবে কোরিয়া-বাংলাদেশ আরএমজি সহযোগিতার ওপর এই বিশেষ ডকুমেন্টারি তৈরি করেছে।

মঙ্গলবার ( ১৯ এপ্রিল) কোরিয়া দূতাবাস এ তথ্য জানায়।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম আরএমজি রপ্তানিকারক হয়ে ওঠা বাংলাদেশের আরএমজি শিল্পের সূচনা ও ক্রমবর্ধমান পর্যায়ে দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানিগুলোর ভূমিকা অনেক সুপরিচিত বাংলাদেশিদের কাছে। এটি ব্যবসায়িক সহযোগিতার পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সেরা সাফল্যের গল্প। কোরিয়া এবং বাংলাদেশের মধ্যে আরএমজি সহযোগিতার গল্প এবং স্মৃতি বিগত বছর ধরে ম্লান হয়ে যাচ্ছে। সহযোগিতার ইতিহাসে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মৌখিক গল্পের মাধ্যমে, তথ্যচিত্রটি গত পাঁচ দশকে কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রকৃত বন্ধুত্বকে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছে।

কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে আরএমজি সহযোগিতা শুরু হয় ১৯৭৮ সালে যখন একটি যৌথ উদ্যোগে একটি কোরিয়ান কোম্পানি, দেউ কর্পোরেশন এবং বাংলাদেশের দেশ গার্মেন্টসের মাধ্যমে। দেশ গার্মেন্টে নিয়োগকৃত ১৩৩ জন বাংলাদেশি ১৯৭৯ সালে কোরিয়ায় গিয়ে ছয় মাসের জন্য দেউ কর্পোরেশনে প্রশিক্ষণ নেন। তারা বাংলাদেশে ফিরে এসে, সারাদেশে কারখানা তৈরি করে বাংলাদেশের আরএমজি শিল্পের জন্মে মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন।  

সাক্ষাৎকারে দেশ গ্রুপ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মিসেস রোকেয়া কাদের এবং দেশ গার্মেন্টের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত নূরুল কাদেরের স্ত্রী যৌথ উদ্যোগের শুরুর বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন। এছাড়াও বিজিএমইএ-এর প্রাক্তন সভাপতি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিও কোরিয়া-বাংলাদেশ আরএমজি সহযোগিতায় তার নিজস্ব অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। বাংলাদেশের আরএমজি শিল্পে প্রথম বিদেশি বিনিয়োগকারী এবং বাংলাদেশের বৃহত্তম কোরিয়ান বিনিয়োগ কোম্পানি, ইয়ংওয়ান কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সংও বাংলাদেশে তার ব্যবসার গল্প শেয়ার করেছেন, যার মধ্যে চট্টগ্রামে কেইপিজেড, কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন প্রতিষ্ঠা রয়েছে।

 বর্তমানে বিনিয়োগের পরিমাণের দিক থেকে কোরিয়া বাংলাদেশে ৫ম বৃহত্তম প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগকারী এবং বাংলাদেশে কোরিয়ার বিনিয়োগের ৭০ শতাংশেরও বেশি আরএমজি খাতের অবদান যা ২০২১ সালে ১.৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

ডকুমেন্টারিতে রাষ্ট্রদূত লি  জ্যাং কুন উল্লেখ করেন, সমস্ত অংশীদারিত্বের মধ্যে আরএমজি সহযোগিতা বিগত পাঁচ দশক ধরে কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে সফল সম্পর্কের প্রতীক ও মডেল, দুই দেশ এখন অন্যান্য খাতে সাফল্যের জন্য একসঙ্গে কাজ করছে। আরএমজি সেক্টরে সহযোগিতার সাফল্যের গল্পের ওপর ভিত্তি করে উৎপাদন, আইসিটি এবং অবকাঠামোসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আগামী বছরগুলোতে সহযোগিতার হার বৃদ্ধি করতে চায়।

ডকুমেন্টারিটি কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের সূচনা সম্পর্কে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক কাহিনীও উপস্থাপন করেছে। বিশেষ করে সম্পর্কের প্রথম দিনগুলোতে জাতিসংঘের অষ্টম মহাসচিব বান কি-মুনের ভূমিকা, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র যখন  ১৯৭২ সালের ১২ মে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন দেশ হিসাবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়, সেই সময়ে কোরিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্কের দায়িত্বে থাকা একজন ডেস্ক কূটনীতিক  বান কি মুন কর্তৃক স্বীকৃতির সুপারিশটি তৈরি করা হয়েছিল। ১৯৭৩ সালের ডিসেম্বরে, যখন কোরিয়া বাংলাদেশের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিল, বান কি মুন নয়াদিল্লিতে কোরিয়ান কনস্যুলেট জেনারেলের দ্বিতীয় সচিব ছিলেন। সে সময় রাষ্ট্রদূত লো শিন-ইয়ং-এর সঙ্গে বান কি মুন ঢাকা সফর করেন, যিনি পরে প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন। তারা তখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন।

প্রায় ১০ বছরের স্থবিরতার পর দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ২০২১ সালে ২.১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে ঐতিহাসিক উচ্চতায় পৌঁছেছে।  

  তথ্যচিত্রটি প্রথম ১৪ এপ্রিল একাত্তর টেলিভিশনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ সম্প্রচারিত হয়েছে। সম্পূর্ণ ভিডিও ক্লিপটি দূতাবাসের ফেসবুক ও ইউটিউব পেজে পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২২
টিআর/এসআইএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।