ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আখাউড়া বন্দরে শ্রমিকদের জন্য নেই কোনো বিশ্রামাগার

মেহেদী নূর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৮ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২২
আখাউড়া বন্দরে শ্রমিকদের জন্য নেই কোনো বিশ্রামাগার বন্দরের কয়েকজন শ্রমিক

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু ১৫ একর আয়তনের এ স্থলবন্দরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নেই কোনো আবাসন ব্যবস্থা।

শ্রমিকদের জন্যও কোনো শেড তৈরি হয়নি। এছাড়া বন্দরে শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত টয়লেটের ব্যবস্থাও নেই। দেশের অন্যতম বড় এ স্থলবন্দরে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো না থাকায় ইচ্ছে থাকলেও আমদানি বাড়াতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা।  

বন্দর সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে স্থল শুল্ক স্টেশন থেকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে আখাউড়া স্থলবন্দর। বর্তমানে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে চার-পাঁচ কোটি টাকার হিমায়িত মাছ, রড, সিমেন্ট, ভোজ্য তেল, তুলা ও ফলমূলসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হচ্ছে ভারতে। দীর্ঘদিন পর গত আগস্ট মাস থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি শুরু হয়েছে। এখন নিয়মিত চাল ও গম আসছে ভারত থেকে। ফলে করোনা মহামারির মধ্যেও বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে চাঙ্গা ভাব বিরাজ করছে। এতে করে আগের তুলনায় স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের আয়ও বেড়েছে।  

আমদানি ও রপ্তানি পণ্য বোঝাই প্রত্যেক ট্রাক থেকে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ প্রবেশ ফি, ওজন চার্জ, অবস্থান চার্জ ও পণ্যাগার চার্জসহ বেশ কিছু চার্জ আদায় করে থাকে। এসব চার্জ বাবদ গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে বন্দর কর্তৃপক্ষের আয় ছিল ২৯ লাখ ৭১ হাজার ৫৪১ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে আয় করেছে ৪১ লাখ ৫৭ হাজার ৭২২ টাকা।  

বন্দরের শ্রমিক আলম মিয়া বলেন, আমরা বন্দরে পণ্য বোঝাই ট্রাকে করে মালামাল নিয়ে এলে এগুলো নামানোর পর দুই থেকে তিনদিন থাকতে হয়। কিন্তু আমাদের জন্য বিশ্রামাগার নেই। ফলে গাড়িতে বিশ্রাম নিতে হয়।

অপর শ্রমিক খেলু মিয়া বলেন, আমাদের খাবারের জন্য কোনো ক্যান্টিন নেই। বাইরে গিয়ে আমাদের খাবার খেতে হয়। তাছাড়া টিউবওয়েল না থাকার কারণে পানির তৃষ্ণা পেলে মোটরের পানি পান করতে হয়। এ পানিতে দুর্গন্ধ থাকে।

শ্রমিক সরদার আরিফ মিয়া বলেন, দিন দিন বন্দরের উন্নতি হলেও আমাদের শ্রমিকদের কোনো উন্নতি হচ্ছে না। আমরা অবহেলিতভাবে পড়ে আছি। শ্রমিকদের বিশ্রামের জন্য কোনো নির্দিষ্ট জায়গায় না থাকায় বৃষ্টি হলে বাইরে ভিজতে হয়।

আখাউড়া স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী নেতা আক্তার হোসেন বলেন, স্থলবন্দরে বিদ্যমান ওয়্যার হাউজটি চাহিদার তুলনায় ছোট। আমদানি-রপ্তানি বাড়ার কারণে আরও একটি ওয়্যার হাউজ প্রয়োজন। এছড়া বিদ্যমান ইয়ার্ডটি সম্প্রসারণ এবং নতুন পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ওয়েটব্রিজ স্কেল স্থাপন করা জরুরিভাবে দরকার। বর্তমান সেমি ডিজিটাল ওয়েটব্রিজ স্কেলটিতে মাঝে মধ্যেই ত্রুটি দেখা দেয়। ত্রুটি মেরামত করার আগ পর্যন্ত বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি কার্যক্রম ব্যাহত হয়।  

আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বন্দরের সার্বিক উন্নয়নে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়ার কথা আমাদের জানানো হয়েছে। অচিরেই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২২
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।