ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

৪২৫ এসএসসি পরীক্ষার্থীর দুর্ভোগ চরমে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২৩
৪২৫ এসএসসি পরীক্ষার্থীর দুর্ভোগ চরমে

পটুয়াখালী: প্রচণ্ড গরমে যেখানে মানুষ হাহাকার করছে, সেখানে টানা তিন ঘণ্টা বাতাসের ব্যবস্থা ছাড়াই মাথা সমান উঁচু টিনের ঘরে বসে পরীক্ষা দিয়েছে পটুয়াখালী বদরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৪২৫ এসএসসি পরীক্ষার্থী। এ অবস্থায় কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে।

কারও শরীর হয়ে পড়ে দুর্বল।

রোববার (৩০ এপ্রিল) সারা দেশে একযোগে শুরু হয়েছে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা। পটুয়াখালী জেলার সব উপজেলায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এ পরীক্ষার প্রথম দিন অতিবাহিত হলেও পরিস্থিতি ভিন্ন ছিল বদরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বরিশাল পটুয়াখালী মহাসড়কের পাশে বদরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়। বাঁশ-কাঠের বেড়া দিয়ে ঘেরা মাথা সমান উঁচু টিনের ঘরের কয়েকটি কক্ষে এবার এসএসসি পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কেন্দ্রে কোনো আলো-বাতাসের ব্যবস্থা নেই। অর্থাৎ ফ্যান ও লাইট নেই। প্রাকৃতিক আলো থাকলেও টিনের ঘর হওয়ায় অনেকটাই অন্ধকার পরিবেশে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় বসেছে। প্রশ্ন পত্র পাওয়ার আগ থেকে পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা কেন্দ্রের ৪২৫ পরীক্ষার্থী অসহায় অবস্থায় উত্তর লেখে।

পরীক্ষা শেষ হতেই স্কুলটির পরিবেশ হয়ে ওঠে অত্যন্ত মানবেতর। বিভিন্ন শিক্ষার্থীকে অসুস্থ অবস্থায় দেখা গেছে। কেউ কেউ জানিয়েছে তাদের শারীরিক অবস্থা দুর্বল। এমন পরিবেশে এ কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়া দুষ্কর।

অভিভাবকরা বলছেন, তাদের ছেলে-মেয়ের অনেক আশার পরীক্ষা এসএসসি। ১০ বছর লেখা-পড়া করার পর তাদের আগামী ভবিষ্যৎ এ পরীক্ষার মাধ্যমেই নির্ধারিত হয়। কিন্তু যে পরিস্থিতিতে তাদের সন্তানরা পরীক্ষা দিয়েছে, তা অত্যন্ত মানবেতর।

এদিকে, পরীক্ষা শেষে ছেলে মেয়েদের নিতে এসেছিলেন তাদের অভিভাবকরা। এ সময় স্কুল প্রাঙ্গণে ব্যাপক ভিড় হয়। ভিড় সামলাতে সংশ্লিষ্টদেরও বেগ পোহাতে হয়েছে। আশপাশের সড়কে অতিরিক্ত ভিড়ে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটনার শঙ্কাও করেছেন স্থানীয়রা।

শহর থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে অরক্ষিত ও অনিরাপদ এমন একটি বিদ্যালয়ে পরীক্ষার কেন্দ্র করায় ক্ষোভ জানিয়েছেন অভিভাবকরা।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, তীব্র গরমে ঠিকভাবে পরীক্ষা দিতে তাদের ব্যাপক কষ্ট হয়েছে। পরীক্ষা নিয়ে অবশ্য তাদের কোনো অভিযোগ নেই। সামনের দিনগুলোয় এমন পরিস্থিতি বজায় থাকলে তারা পরীক্ষা দিতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে।

অভিভাবকরা বলেন, সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ যে পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারিত হবে সেটি গ্রহণে তাদের কোনো উদ্যোগ নেই। পটুয়াখালী বদরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রটি সম্পূর্ণ অনিরাপদ।

পটুয়াখালীর পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব ও বদরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী আকবর। সঠিক উপায়ে পরীক্ষা নিতে যে যে ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন, সেগুলো কেন নেই সে বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করে পরীক্ষার তথ্য সংগ্রহে যাওয়া স্থানীয় সাংবাদিকরা। উত্তরে আকবর বলেন, এখানে আগে থেকেই পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল। স্থানীয় প্রশাসন জেনে শুনেই পরীক্ষা কেন্দ্র দিয়েছে। যে সমস্যা দেখা গেছে, সেগুলো সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুহা. মুজিবুর রহমান বলেন, দ্রুত সময়ে সমাধানের জন্য কেন্দ্র সংশ্লিষ্টদের ফ্যান স্থাপন ও জানালা বৃদ্ধিসহ শিক্ষার্থীদের জন্য মনোরম পরিবেশ নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করি দ্রুত সব ঠিক হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২৩
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।