ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

মধ্যরাতে থানায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের ছাড়ালেন ইবির শিক্ষকরা

ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৪ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২৪
মধ্যরাতে থানায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের ছাড়ালেন ইবির শিক্ষকরা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি): মধ্যরাতে কুষ্টিয়া মডেল থানায় গিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আটক থাকা ১৫ শিক্ষার্থীকে ছাড়িয়ে এনেছেন ছয় শিক্ষক।

সোমবার (২৯ জুলাই) দিনগত রাত দেড়টায় তারা থানায় যান।

আটক হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৭ জন শিক্ষার্থী রাতেই ছাড়া পেয়েছেন।  

এদিকে ঢাবি ও জাবিসহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আটক হওয়া ১২ শিক্ষার্থীকেও ছেড়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ইবির একজন শিক্ষার্থীকে থানায় অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ ও যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আটক রাখা হয়। পরে দুপুরে তাকেও ছাড়িয়ে আনেন শিক্ষকরা। এছাড়া ছাড়া পাওয়া শিক্ষার্থীদের পরিচয়সহ ভবিষ্যতে রাষ্ট্রের আইনবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত হবেন না এমন মুচলেকা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার বিকেল তিনটায় কুষ্টিয়ার চৌড়হাসে বিভিন্ন দাবিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের পূর্ব নির্ধারিত বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল। এ সময় চৌড়হাস থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত বাস টার্নিমালে শিক্ষার্থীরা জড়ো হওয়ার চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে তারা আর সংঘবদ্ধ হতে পারেননি। এদিকে শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে পুলিশ, বিজিবি ও ম্যাজিস্ট্রেটরা টহল দিচ্ছিলেন। এ সময় বিভিন্ন মোড় থেকে আন্দোলনকারী সন্দেহে ইবির ১৮ জন, ঢাবি ও জাবির দুইজনসহ অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ।

পরে রাত দেড়টার দিকে ইবির ছয়জন শিক্ষক থানায় গিয়ে ১৮ জনের মধ্যে ১৫ শিক্ষার্থীকে ছাড়িয়ে আনেন।

এর আগেই দুইজন শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। পরে রাতেই অন্যান্য শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেওয়া হলেও ইবির একজন শিক্ষার্থী আটক ছিল। পরে দুপুরে শিক্ষকরা তাকেও ছাড়িয়ে আনেন বলে এক শিক্ষক নিশ্চিত করেছেন। অর্থাৎ আটক হওয়া ৩০ জন শিক্ষার্থীই ছাড়া পেলেন।

এদিকে শিক্ষকদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে আটকের ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডি ও ছাত্র-উপদেষ্টার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ইবি শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বারবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও প্রক্টরের সঙ্গে কথাই বলতে পারিননি। প্রক্টর কুষ্টিয়ায় অবস্থান করলেও তিনি থানায় আসেননি। যেখানে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস শিক্ষার্থীদের ছাড়াতে সহায়তা করছে এবং জানাতে বলছে। সেখানে আমাদের প্রক্টর ফোনই ধরেন না। এটা মোটেও শিক্ষার্থীবান্ধব বা শিক্ষার্থীসুলভ আচরণ নয়। আর যদি ছাত্রদেরই উপকারে না আসে তবে ছাত্র উপদেষ্টার কাজটা কী?

শিক্ষার্থীদের ছাড়িয়ে আনার বিষয়ে আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. তোজাম্মেল হোসেন বলেন, আমরা সাধারণ শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের বিপদে পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। ভবিষ্যতেও যেকোনো বিপদে পাশে থাকব। এসময় তিনি প্রশাসনের ভূমিকা দায়িত্বহীনতা বলে উল্লেখ করেন।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, শিক্ষার্থীদের ছাড়ানোর জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা করেছি। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও প্রশাসনের বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলাম।

বাংলাদেশ সময়: ২৩১৪ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২৪
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।