ঢাকা: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে সুপারিশপ্রাপ্তদের সচিবালয়মুখী পদযাত্রায় লাঠিচার্জ চালিয়েছে পুলিশ। আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ জলকামানও ব্যবহার করেছে।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর শিক্ষা ভবনের সামনে গেলে পদযাত্রাটি ঠেকিয়ে দেয় পুলিশ। ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এর আগে বেলা ১১টায় শাহবাগের জাতীয় জাদুঘর মোড়ে জড়ো হতে শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে সেখানে তাদের পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশ শুরু হয়। বিকেল ৩টার দিকে তারা শাহবাগ থেকে পদযাত্রা শুরু করেন।
শাহবাগ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি হয়ে হাইকোর্টে মাজার রোডের দিকে যাচ্ছিলেন। পরে হঠাৎ তারা সচিবালয়ের দিকের রাস্তায় রওনা দেন। এ সময় পুলিশ শিক্ষা ভবনের সামনের সড়কে তাদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয়। পরে বিকেল ৪টার দিকে তাদের লাঠিচার্জ এবং জলকামান থেকে পানি ছিটিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।
সরেজমিন দেখা যায়, জলকামানের তীব্র গতির পানির মুখেও রাস্তায় শুয়ে পড়েন নারী আন্দোলনকারীরা। পরে পানি ছেটানো বন্ধ করে পুরুষ আন্দোলনকারীদের লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দেয় পুলিশ।
নিয়োগ পুনর্বহালের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করছেন সহকারী শিক্ষক পদে সুপারিশপ্রাপ্তরা।
২০২৩ সালের ১৪ জুন তৃতীয় ধাপে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় এবং লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০২৪ সালে ২৯ মার্চ। ফল প্রকাশ করা হয় একই বছরের ২১ এপ্রিল এবং ১২ জুন ভাইভা সম্পন্ন হয়।
পরে আইন মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ৩১ অক্টোবর চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে। এতে ছয় হাজার ৫৩১ জন চূড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হন। পরে সুপারিশপ্রাপ্ত হননি এমন ৩১ জন হাইকোর্টে রিট করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ছয় হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত হয়ে যায়।
গত ১৪ জানুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায়ের সঙ্গে সুপারিশপ্রাপ্তদের প্রতিনিধিদল দেখা করলে তিনি তখন তাদের আশ্বাস দেন, সুপারিশপ্রাপ্ত ছয় হাজার ৫৩১ জন শিক্ষকের মধ্যে সবার নিয়োগ চূড়ান্ত হবে, কেউ বাদ যাবেন না।
পরে চেম্বার জজ আদালত, আপিল বিভাগ ও হাইকোর্টে সাতটি শুনানির পর চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি ফল বাতিলের রায় দেন আদালত। এরপর থেকে আন্দোলনে নামেন সুপারিশপ্রাপ্তরা।
এদিকে তাদের নিয়োগ বাতিল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। গত বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৫
এমএমআই/আরএইচ