ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) অনুষ্ঠিত গণভোটে ৮৬ শতাংশ শিক্ষার্থী সরাসরি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন। এ ছাড়া ছাত্র সংসদের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ১১ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী।
চার দিনব্যাপী গণভোট গ্রহণ শেষে বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে ববির গ্রাউন্ড ফ্লোরে এই ফলাফল করেন গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের নেতারা।
গণভোটে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন এক হাজার ১৪৫ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে বাতিল হয়েছে মোট ভোটের ২ দশমিক ৫ ভাগ, যা সংখ্যায় ২৬টি।
এর আগে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অংশ নেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এ সময় বক্তারা বলেন, এই গণরায়ের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়েছে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জবাবদিহিমূলক, অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিনিধিত্বশীল নেতৃত্ব চায়। তারা বিশ্বাস করে, গণতান্ত্রিক চর্চাই একটি আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থার মূল চালিকা শক্তি।
এ সময় ববি ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক ভূমিকা সরকারের সভাপতিত্বে ও মৃত্যুঞ্জয় রায়ের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা দেন গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছায়েদুল হক নিশান। আরও বক্তব্য রাখেন ববি সংগঠক আব্দুর রহমান, সুদীপ্ত হালদার, সওকাত ওসমান স্বাক্ষর প্রমুখ।
প্রধান অতিথি ছায়েদুল হক নিশান বলেন, গণভোটে শিক্ষার্থীরা যে রায় দিয়েছে তা ববি শিক্ষার্থীসহ সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের মতের বহিঃপ্রকাশ। এটা গোটা বাংলাদেশের সব শিক্ষার্থীর। দাবি এ কারণে তাদের মতের গুরুত্ব দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে আইন আছে সেটাকে সংস্কার করে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচনের রুপরেখা প্রদান করতে হবে।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ না থাকলে দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হয়। যেই রাজনীতি অতীত সরকারগুলো করে গেছে। শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে কি হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় যেকোনো ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার জন্য ছাত্রদের মতামত প্রতিফলিত হওয়ার প্রয়োজনে ছাত্র সংসদের কোন বিকল্প নেই। ছাত্র রাজনীতিকে কলুষিত করার জন্য বছরের পর বছর কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারগুলো ছাত্র সংসদকে অকার্যকর করে রেখেছে। আরেক দল ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের নাম করে গোপন রাজনীতি করে যাচ্ছে। যা গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য হুমকি। ফলে অনতিবিলম্বে শিক্ষার্থীদের রায় মেনে নিয়ে কার্যকর করা এবং সরকারের দায়িত্ব। এবং গণতান্ত্রিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিনির্মানে আগামী দিনে দৃষ্টান্ত হিসেবে ভূমিকা রাখবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শুধুমাত্র কর্মচারী কেরানি না বানিয়ে রাষ্ট্রের জন্য দায়িত্বশীল, শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের পক্ষের রাজনীতি নির্মাণে ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ভূমিকা সরকার বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, শিক্ষার্থীদের মতামতই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই গণভোট প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে, এখনই সময় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পথ সুগম করার।
এমএস/এএটি