ঢাকা: অসহায়, গরীব, শিক্ষা জীবন থেকে ঝড়ে পড়া শিশু ছিলাম আমরা। কিন্ত সহযোগিতা পেলে আমরাও হতে পারি কৃতি শিক্ষার্থী।
তিনি আরো বলেন, দারিদ্র্যের কারণে রাস্তার পাশে মায়ের সঙ্গে চা বিক্রি করতাম। হঠাৎ দোকানের এক কাস্টমারের সহযোগিতায় ইউসেপ মিরপুর টেকনিক্যাল স্কুলে ভর্তি হয়। সেই প্রেক্ষিতে আজ আমি এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছি।
হালিমা আক্তার আপেক্ষ করে বলেন, ‘ইউসেপ মিরপুর টেকনিক্যাল স্কুল থেকে আমরা ঝড়ে পড়া ৬৭ জন জিপিএ-৫ এবং ১জন জিপিএ-৪ পেয়েছি। অথচ কোন মিডিয়া আমাদের নিয়ে একটি প্রতিবেদনও লেখেনি। মিডিয়া শুধু আছে রাজধানীসহ দেশের উল্লেখ যোগ্য স্কুল নিয়ে। যেখানে শিক্ষার্থীদের চাহিদার কোন অভাব নেই। ’
অভাবের তারনা ও ক্ষুদার যন্ত্রনা সহ্য করে মেধা তালিকায় টিকে থাকা যে কত কষ্টের ও পরিশ্রমের সেটা শুধু আমাদের মত ছেলে-মেয়েরাই জানেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শুধু হালিমা আক্তার নন। তার মত আরিফ আজাদ, মো. আবদুল আলী, তানজিলা, ফরিদা আক্তারসহ অনেকেই নিজেদের ঝড়ে পড়া জীবনের কথা উল্লেখ করেন। তবে শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তাদের এই সাফল্যে মনে হয় তারা এক একজন শিক্ষার্থী এক একটি ইতিহাস।
ইউসেপ-বাংলাদেশ এর সুবিধাবঞ্চিত শ্রমজীবী শিশুরা প্রমাণ করেছে সুযোগ ও সহযোগিতা পেলে তারাও কোন ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকার নয়।
দারিদ্র্য ও নানা সমস্যার মাঝে থেকেও শুধুমাত্র অদম্য চেষ্টা আর স্কুলের সহযোগিতায় কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ২০১৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ৯৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ পাশের হারসহ শীর্ষস্থান দখল করেছে ইউসেপ টেকনিক্যাল স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
ইউসেপ-বাংলাদেশ, শ্রমজীবী শিশুদের জীবন-মান উন্নয়নের লক্ষ্যে কর্মরত শীর্ষস্থানীয় সমাজকল্যাণমূলক একটি প্রতিষ্ঠান, যারা বাংলাদেশের শহরাঞ্চলের দুস্থ শ্রমজীবী শিশুদের, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং কর্মসংস্থান সেবার মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করে জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখার কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
ইউসেপ বাংলাদেশ-এর প্রোগ্রাম অফিসার আজিজা মো. আজিজ বাংলানিউজকে বলেন, সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ার কারণে দেশে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীরা ঝড়ে যাচ্ছে। ইউসেপ বাংলাদেশ ঝড়ে পড়া শিশুদের নিয়ে কাজ করে। তাদের শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষা দিয়ে থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩০ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৪