ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ঢাবিতে ভর্তি

জিপিএ-৫ পেয়েও পাস জুটছেনা!

সাখাওয়াত আমিন, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৪
জিপিএ-৫ পেয়েও পাস জুটছেনা!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রতিবছরই বড়ছে। কিন্তু তারা সাফল্য পাচ্ছে না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষায়।

ফলে প্রতিবছরই সৃষ্টি হচ্ছে নতুন রেকর্ড।

জানা যায়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েও ঢাবি’র ভর্তি পরীক্ষায় ন্যুনতম পাস নম্বরই পাচ্ছেনা অধিকাংশ শিক্ষার্থী।

চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক ও ঢাবির ভর্তি পরীক্ষার ফল বিশ্লেষণে এমন চিত্রই উঠে এসেছে।
 
জানা যায়, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ঢাবির ‘ক’, ‘খ’ ও ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয় মোট এক লাখ ৬৬ হাজার ৯১৫ জন পরীক্ষার্থী। যাদের মধ্যে পাস করেছে মাত্র ৩০ হাজার ৬২০ জন।

শতকরা হিসেবে যা ১৭.১৮ শতাংশ। ‘ক’ ইউনিটে পাস করেছে ২১.৫০, ‘খ’ ইউনিটে ৯.৫৫ শতাংশ এবং ‘গ’ ইউনিটে ২০.৬১ শতাংশ।

২০১৪ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায়ই জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭০ হাজার ৬০২ জন। এর সাথে যুক্ত হবে গত বছরের জিপিএ ৫ পাওয়া ৫৮ হাজারের অধিকাংশই। কেননা ২০১৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস শিক্ষার্থীরা এ বছরের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।

ঢাবির ভর্তি অফিস সূত্রে জানা যায়, ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ২ লাখ ভর্তিচ্ছুর অধিকাংশই মাধ্যমিক অথবা উচ্চ মাধ্যমিকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। অনেকের আবার দুটিতেই জিপিএ-৫।

জানা যায়, ঢাবিকে ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর ৪৮ (১২০ এর মধ্যে)। তবে ‘খ’ ইউনিটে চারটি অংশে (বাংলা, ইংরেজি, সাধারন জ্ঞানের দুটি অংশে আলাদাভাবে পাস করতে হয় (৩০ এর সথ্যে ৮ পেতে হয়) এবং ‘গ’ ইউনিটে কেবল ইংরেজিতে ৩০ এর মধ্যে ১২ পেতে হয়।

মেধা তালিকায় আসার এ শর্ত পূরণ করতে পারেনি শতকরা ৮২.৮২ শতাংশ শিক্ষার্থী।

বিজ্ঞান অনুষদের অধীন ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় পাস করেছে ২১.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। মোট এক হাজার ৬৪০ আসনের বিপরীতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয় ৭৮ হাজার ২৯৩ জন ভর্তিচ্ছু। এদের মধ্যে ন্যুনতম পাশ নম্বর পেয়েছেন ১৬ হাজার ৮৪০ জন। বাকী ৬১ হাজার ১৫৫ জনই ফেল করেছেন।
 
এ বছর সবচেয়ে শোচনীয় ফল হয়েছে মানবিক অনুষদের অধীন ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায়। এ অনুষদে পাস করেছে মাত্র ৯.৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। বাকি ৯০.৪৫ শতাংশই ফেল করেছে।
‘খ’ ইউনিটের দুই হাজার ২২১টি আসনের বিপরীতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয় মোট ৪০ হাজার ৫৬৫ ভর্তিচ্ছু। এদের মধ্যে পাস করে মাত্র ৩ হাজার ৮৭৪ জন।

ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীন ‘গ’ ইউনিটের এক হাজার ১৭০ আসনের পরীক্ষায় অংশ নেয় ৪৮ হাজার ৫৭ জন। পাস করেছে ৯ হাজার ৬ জন। পাশের হার ২০.৬১ শতাংশ।

এ ব্যাপারে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘যারা উচ্চ মাধ্যমিকে জিপিএ-৫ পায় তাদের অভিনন্দন। কিন্তু সর্বোচ্চ রেজাল্ট করেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় তারা কেন পাস নম্বর পায়না তা আমার বোধগম্য নয়। ’

তিনি আরও বলেন, যারা উচ্চ মাধ্যমিকে প্রতিটি বিষয়েই একশ নম্বরের মধ্যে ৮০ পায় তারা ভর্তি পরীক্ষায় ১২০ নম্বরের মধ্যে ৪৮ কেন পায়না সেটা বড় প্রশ্ন।

কম সংখ্যক শিক্ষার্থী পাস করায় এবং বিভিন্ন বিভাগে শর্ত থাকায় গত কয়েক শিক্ষাবর্ষে আসন খালি থাকার নজির রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ সময় শিক্ষার মান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এ অধ্যাপক।

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক মনে করেন, পাস না করার সমস্যাটা শিক্ষার মানে নয় বরং পরীক্ষার পদ্ধতির ভিন্নতার কারণেই এমনটি হয়ে থাকে।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্যই থাকে যত বেশি শিক্ষার্থীকে বাদ দেওয়া যায়। কারণ তিন লাখ পরীক্ষার্থীর মধ্যে আমরা নিতে পারবো মাত্র ৬ হাজার ৫৮২ জনকে। তাই প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষার্থী পাস করলেই চলে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।