ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

প্রশ্নফাঁস নেই, হরতালই গলার ‘ফাঁস’

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৫
প্রশ্নফাঁস নেই, হরতালই গলার ‘ফাঁস’ ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম/ফাইল ফটো

ঢাকা: গেল বছরের পাবলিক পরীক্ষাগুলোতে ছিলো প্রশ্নফাঁসের বিস্তর অভিযোগ। তবে চলমান এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস নিয়ে প্রশ্ন ওঠেনি।

এমনকি গুজবও রটেনি কোনো।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, জাতীয় মনিটরিং কমিটি, শক্তিশালী কন্ট্রোল রুমসহ নানামুখী তৎপরতার কারণে কেউ প্রশ্নফাঁস বা এ ধরনের গুজব নিয়ে কথা তোলেনি। বরং হরতাল-অবরোধে পরীক্ষা পেছাচ্ছে কি না- সেটা নিয়ে আলোচনা সবার।
 
গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১০ দিনের পরীক্ষা পিছিয়ে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

গতানুগতিক ধারায় প্রতিবছর একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হলেও এবার গুরুত্ব দিয়ে এই কন্ট্রোল রুম থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এর মাধ্যমে গ্রেফতারও করা হয়েছে কয়েকজনকে।

কন্ট্রোল রুমে টেলিফোন নম্বরের (৯৫৪৯৩৯৬) পাশাপাশি এবার দু’টি যুতসই মোবাইল নম্বর (০১৭৭৭৭০৭৭০৫, ০১৭৭৭৭০৭৭০৬) ব্যবহার করা হচ্ছে। রয়েছে ই-মেইলও (examcontrolroom@moedu.gov.bd)।

এই কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব গৌতম কুমার বৃহস্পতিবার বাংলানিউজকে বলেন, এবার প্রশ্নফাঁস নিয়ে অভিযোগ আসছে না। অবরোধ-হরতালে নির্ধারিত দিনে পরীক্ষা হবে কি না- সেটাই জানার আগ্রহ শিক্ষার্থী-অভিভাবকের।

গত বছর অনুষ্ঠিত এইচএসসি, জেএসসি-জেডিসি এবং প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের বিস্তর অভিযোগ পাওয়া যায়। প্রশ্ন পাঁসের পর ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের একটি পরীক্ষা স্থগিত করে নতুন করে নেওয়া হয়।

পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষাবিদ জাফর ইকবালসহ অনেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। সমালোচনার মুখে পড়েন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠান করা নিয়ে পরীক্ষার আগে ২৭ সদস্যের জাতীয় মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ছাড়াও জনপ্রশাসন, তথ্য, আইসিটি মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, বিজি প্রেস, র‌্যাব, পুলিশ, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, বিটিআরসি এবং বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।

এই কমিটি বিজি প্রেস, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একাধিক বৈঠক করে প্রশ্ন ফাঁস রোধে তৎপরতা শুরু করে। ফেইসবুক মনিটরিংয়েরও জেরালো উদ্যোগ নেওয়া হয়। কন্ট্রোল রুম থেকে পরীক্ষার দিনগুলোতে ২৪ ঘণ্টা ফেইসবুক মনিটরিং করা হচ্ছে।

প্রশ্ন ফাঁস এড়ানো এবং সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা গ্রহণের জন্য বিজি প্রেস কঠোর নজরদারি, পরীক্ষার সময় কোচিং সেন্টারগুলো মনিটরিং, বিভাগীয় কমিশনার-জেলা প্রশাসক-পুলিশ সুপার-ইউএনও-ওসিকে শিক্ষাসচিবের ডিও লেটারও দেওয়া হয়।

পাবলিক পরীক্ষা সংক্রান্ত আইনের বিভিন্ন দিক গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়।

এছাড়া প্রত্যেক শিক্ষা বোর্ডে পৃথক প্রশ্নে পরীক্ষা গ্রহণ প্রশ্ন ফাঁস এড়াতে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।

হরতালে পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়া ছাড়া এবার সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা হচ্ছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বৃহস্পতিবার বলেন, পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ার প্রভাব শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দিবে। পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানে সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী।

হরতালের কারণে শুক্র ও শনিবার নেওয়া হচ্ছে সব পরীক্ষা। শিক্ষামন্ত্রী শুক্রবার(২৭ ফেব্রুয়ারি’২০১৫) সকাল ৯টায় গর্ভমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সাথে মতবিনিময় করবেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।