ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি

বাকৃবিতে ৮০ শিক্ষকের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত

বাকৃবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০০ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৫
বাকৃবিতে ৮০ শিক্ষকের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) থেকে: নৈতিক স্থলন ও দুর্নীতির অভিযোগে ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রফিকুল হকের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম।

এ দাবিতে ফোরামভুক্ত ৮০ জন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভিন্ন পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।



সোমবার (২৩ মার্চ) দুপুর নাগাদ ফোরামের কাছে ৫৬ জন শিক্ষক তাদের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে এসব শিক্ষকের পদত্যাগপত্র পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. এনামুল হক।

সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্রে (টিএসসি) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড.এ কে এম শামসুদ্দিন, সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন প্রমুখ ।

অধ্যাপক ড. মো. এনামুল হক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা, প্রক্টর, বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট, হাউজ টিউটরসহ প্রশাসনিক বিভিন্ন পদে প্রায় ৮০ জন শিক্ষক রোববার গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের জরুরি সাধারণ সভায় পদত্যাগের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছেন।

একই সঙ্গে ওই সভায় গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের কমিটি থেকে উপাচার্যকে অব্যাহতি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তার সঙ্গে সব ধরণের কর্মকাণ্ড পরিচালনা থেকে বিরত থাকারও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগের (২০১১ সালের ১০ আগস্ট) পর থেকেই অধ্যাপক ড.রফিকুল হকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাওয়া যায়। তার দুর্নীতি তদন্তের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুপারিশক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশন একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করে।

এ তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশিত হবার আগেই উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে ও নারী কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ডের ছবি ও অডিও ক্লিপ প্রকাশ পায়। উপাচার্য এসব কেলেঙ্কারি অসত্য প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়ে উল্টো এক আদেশনামায় অভিযুক্ত তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী আফরোজা ইয়াসমিনকে অব্যাহতি প্রদান করেন। এর মাধ্যমে এ সব অপকর্মে প্রকারান্তরে উপাচার্যের সংশ্লিষ্টতাই প্রকাশ পায়, উল্লেখ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড.এ কে এম শামসুদ্দিন বলেন, চরিত্রহীন একজন ব্যক্তিকে উপাচার্য পদে রাখা সমীচীন না। তিনি গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পদত্যাগ না করে একদল বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে শিক্ষকদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি বানচাল করার অপচেষ্টা করেছেন।

বিভিন্ন পদে কর্মরত গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সদস্যদের ধারাবাহিকভাবে অব্যাহতি প্রদান তার স্বেচ্ছাচারিতার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন বলেন, উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের মানববন্ধনের পর থেকেই আমাকে অপরিচিত বিভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে সাবধানে থাকার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু নীতি ও নৈতিকতার প্রশ্নে কোনো অন্যায়কারীর সঙ্গে আমরা আপোষ করবো না।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।