ঢাকা: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের ব্যবহারের জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা নিশ্চিতসহ টয়লেট ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নতকরণের নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
রোগ সংক্রমণ রোধ ও শিক্ষার্থী উপস্থিতি বাড়াতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিকে টয়লেট ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতের নির্দেশনা দিয়ে এ পরিপত্র জারি করে মন্ত্রণালয়।
বুধবার(২৪ জুন‘২০১৫) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পরিপত্রে বলা হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি এ খাতে পৃথক সংরক্ষিত তহবিলের ব্যবস্থা করবে। কমিটি টয়লেটসমূহ নিয়মিত পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ করে সংরক্ষিত তহবিল হতে ব্যয় মেটাবে।
টয়লেট পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য জন্য শিক্ষকদের নেতৃত্ব দিতে হবে উল্লেখ করে এতে বলা হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে স্কাউট/গার্লস গাইডের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে টয়লেট ও স্যানিটেশন কমিটি গঠন করা যেতে পারে। প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দলে বিভক্ত করে পালাক্রমে সারা বছরের জন্য টয়লেট পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব দিবেন।
জেন্ডারবান্ধব স্যানিটেশন নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে পরিপত্রে বলা হয়, সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের ব্যবহারের জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা রাখতে হবে। টয়লেটসমূহে ঢাকনাযুক্ত প্লাস্টিকের পাত্র রাখতে হবে। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের ঋতুকালীন(মাসিক/পিরিয়ডের) বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য একজন শিক্ষিকাকে দায়িত্ব দিতে হবে। ছাত্রীদের জন্য অন-পেমেন্ট স্যানিটারি ন্যাপকিন রাখার ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটিকে উদ্যোগ নিতে হবে।
জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, বিদ্যালয় পরিদর্শক, স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের সময় টয়লেট ব্যবস্থা, মেয়েদের টয়লেট ব্যবস্থা, পানীয় জল ও হাত ধোয়ার ব্যবস্থা ইত্যাদি প্রতিবেদনে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
স্কুল স্যানিটেশনের বিষয়ে ব্যাপক প্রচারণার লক্ষ্যে স্থানীয় এনজিওসমূহকে জেলা প্রশাসন থেকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। এনজিও/বেসরকারি সংস্থাসমূহ টয়লেট পরিচ্ছন্ন রাখা, পানীয় জল, হাত ধোয়ার বিষয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালাবে।
নতুন ভবন নির্মাণের সময় রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচ্ছন্ন রাখার খরচ প্রকল্পে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে টয়লেট ও হাত ধোয়ার ব্যবস্থা সম্পর্কে তথ্য থাকবে বলেও পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিপত্রে বলা হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেই সংক্রামক রোগসমূহ শিশুদের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টয়লেটের সংখ্যা যথেষ্ট হলেও এগুলো রক্ষণাবেক্ষণের অবস্থা খুবই খারাপ।
২০১৪ সালের বাংলাদেশ ন্যাশনাল হাইজিন বেইজলাই সার্ভের প্রাথমিক প্রতিবেদন তুলে ধরে পরিপত্রে বলা হয়, দেশে প্রতি ১৮৭ জন শিক্ষার্থীর জন্য একটি টয়লেট আছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টয়লেটসমূহের ৪৫ শতাংশ বন্ধ থাকে। প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ টয়লেটের ভিতরে বা কাছাকাছি পানি ও হাত ধোয়ার জন্য সাবানের ব্যবস্থা থাকে না। রোগ সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থার অভাবে শিক্ষার্থীরা প্রায় অনুপস্থিত থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৫
এমআইএই/এনএস