ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ঝরে পড়ার ‘নতুন’ কারণ অপুষ্টি

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৫
ঝরে পড়ার ‘নতুন’ কারণ অপুষ্টি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম (ফাইল ফটো)

ঢাকা: স্কুলে না যাওয়া বা গেলেও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার ‘নতুন’ একটি কারণ চিহ্নিত হয়েছে দুর্গম এলাকায়। ছয় বছর বয়সে ৫০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী হাওড়-বাওড়ের মতো দুর্গম এলাকায় ঝরে পড়ে, হয় না স্কুলমুখী।


 
দারিদ্র্য ও পরিবারের অসচেতনতাকে দায়ী করে এ সমস্যা মোকাবেলায় এসব এলাকার শিশু-শিক্ষার্থীদের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়ার সুপারিশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. এএসএম আমানুল্লাহ।
 
পাঁচ বছর বয়সে ১৩.৩ শতাংশ, ছয় বছর বয়সে ৫২.৩ শতাংশ, সাত বছর বয়সে ২৬.৫ শতাংশ, আট বছর বয়সে ৭.৫ শতাংশ, ১০ বছর বয়সে ০.৩ শতাংশ ও ১২ বছর বয়সে ০.৩ শতাংশ শিশু স্কুলে যায় না এবং গেলেও ঝরে পড়ে বলে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের গবেষণায় উঠে এসেছে।
 
‘দুর্গম এলাকায় স্কুলে না যাওয়া ও ঝরে পড়ার নতুন কারণ অপুষ্টি’, দাবি করে গবেষণা পরিচালনাকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এএসএম আমানুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, এতো দিন অনেক গবেষণা হলেও এ কারণ চিহ্নিত হয়নি।
 
গবেষণায় বলা হয়েছে, জন্মের পর ওই এলাকার শিশুরা পর্যাপ্ত পুষ্টি পায় না। এর ফলে তারা দুর্বল হয়ে পড়ে। এটি শিশুদের স্কুলে যাওয়ার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। শিশুরা নির্ধারিত বয়সের চেয়ে আরও পরে স্কুলে যায়।
 
সিলেটের গোয়াইনঘাট ও সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত জরিপ চালিয়ে এ গবেষণাপত্র তৈরি করা হয়।
 
এতে আরও বলা হয়, যারা স্কুলে যায়, তারা দৈহিকভাবে ততোটা শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যবান হয় না। ফলে তারা দৈনিক স্কুলে যাওয়া পছন্দ করে না। এক পর্যায়ে তারা ঝরে পড়ে।
 
স্কুলে না যাওয়া ও ঝরে পড়ার প্রভাব জাতীয় হারে সার্বিকভাবে পড়ে জানিয়ে অধ্যাপক ড. আমানুল্লাহ দুর্গম এলাকার জন্য বিশেষ প্রোগ্রাম হাতে নেওয়াসহ সরকারের কাছে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরেন।
 
তিনি বলেন, দুর্গম এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন ও এর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিশেষ মৌসুমগুলোতে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রণোদনামূলক ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। এছাড়া মৌসুমভিত্তিক দুই মাস দেড় থেকে দুই হাজার টাকা দেওয়া যায়।
 
অপুষ্টি দূর করার জন্য স্কুলগুলোতে স্কুল ফিডিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করার সুপারিশ করেন ড. আমানুল্লাহ।
 
অভিভাবকদের শিক্ষা ও সচেতনার অভাব, মৌসুমে ফসল কাটার কাজে বাবা-মাকে সহায়তা, পাথর তোলার কাজ করাও ঝরে পড়া ও স্কুলে না যাওয়ার কারণ।
 
শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়ার জন্য রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, বর্ষাকালে নৌকার ব্যবস্থা করা, পাঠদানকে আনন্দদায়ক করা, বেশি বেশি ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা, সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে সমন্বিত কর্মসূচি চালু করা ও স্কুলগুলো তদারকি জোরদার করার জন্য ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটি করা যেতে পারে বলে গবেষণাপত্রে সুপারিশ করা হয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৫
এমআইএইচ/এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।