ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জাবিতে নিয়োগে ফের স্বজনপ্রীতির অভিযোগ

জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৬
জাবিতে নিয়োগে ফের স্বজনপ্রীতির অভিযোগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আবারও স্বজনপ্রীতি করে বির্তকিতদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আবারও স্বজনপ্রীতি করে বির্তকিতদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সহকারী প্রক্টর ও বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. শরিফ হোসেনের স্ত্রীকে ওই বিভাগে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. আবদুল মান্নান চৌধুরীর ব্যক্তিগত পরিচিত এক প্রার্থীকে তার বিভাগে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

গতকাল শনিবার (১০ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভায় তাদের নিয়োগ দেওয়া হয় বলে জানান এক সিন্ডিকেট সদস্য। একই সঙ্গে এ নিয়োগে নিয়ে এক সিন্ডিকেট সদস্য মৌখিকভাবে আপত্তি জানিয়েছেন।

জানা যায়, গত ১৯ জুন বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে তিন জন প্রভাষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে ৫৩ জন প্রার্থী আবেদন করেন। এর মধ্যে ৪০ জনকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচন করা হয়।
 
এই ৪০ জনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় সিলেকশন বোর্ড তিন জন প্রার্থীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে সুপারিশ করে। এই তিন জনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরের স্ত্রী জিনিয়া ইসলামও ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের বিএসসি এবং এমএসসি’র রেজাল্ট সর্বনিম্ন ৩.৬০ থাকার কথা থাকলেও জিনিয়া ইসলামের রেজাল্ট ৩.৫১। প্রার্থীদের মধ্যে সিজিপিএ-৪ এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হওয়া সত্ত্বেও তাকে বাদ দিয়ে জিনিয়াকে শিক্ষক নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়।

এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠলে তা তোয়াক্কা না করে শনিবার (১০ ডিসেম্বর) সিন্ডিকেট সভায় তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

অন্যদিকে একইভাবে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. আবদুল মান্নান চৌধুরীর ব্যক্তিগত সম্পর্কের জেরে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের মেধা তালিকায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারী প্রার্থীকে বাদ দিয়ে ৯ম স্থান অধিকারী ওই বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী গোলাম মর্তুজাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গোলাম মর্তুজাকে নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় সিলেকশন বোর্ড সুপারিশ করলে ৫ নভেম্বর ওই বিভাগের পাঁচজন শিক্ষক নিয়োগের বিরোধিতা করে সভাপতি বরাবর লিখিত আবেদন করেন।

তাদের বিরোধিতা সত্ত্বেও গোলাম মর্তুজাকে নিয়োগ দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা কখনও চিন্তা করিনি একটা বিভাগের এত পিছন থেকে এই শিক্ষার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হবে। তাকে তো আমরা পড়িয়েছি আমরা তো ভালো জানি সে শিক্ষক হওয়ার যোগ্য কিনা। এই বিভাগের ইতিহাসে এই প্রথম এভাবে নিয়োগ দেওয়া হলো।

আমরা যে পাঁচজন শিক্ষক এ নিয়োগের বিরোধিতা করেছিলাম তারা বর্তমান বিভাগীয় সভাপতির অধীনে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যতীত সব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকবো যতদিন তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করবে।

নিয়োগের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষক মঞ্চের মুখপাত্র রায়হান রাইন বলেন, মেধাকে অবমূল্যায়ন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন বারবার স্বজনপ্রীতি করে নিয়োগ দিচ্ছে। যা স্বৈরাচারী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিকের সঙ্গে দেখা করতে তার অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। একাধিক বার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি বাসায় ছিলেন না বলে জানা যায়।

এদিকে শনিবার (১০ ডিসেম্বর) সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ নীতিমালার একটি ধারায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পরিচিত ব্যক্তি বা অন্যকেউ থাকলে সাধারণ শর্ত শিথিল করার যে নিয়ম ছিল সেটি সিন্ডিকেট সদস্যদের সর্বসম্মতি সিদ্ধান্ত অনুসারে বাতিল করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৬
এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।