ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন বুধবার, বর্জন সাদা দলের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৭
জবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন বুধবার, বর্জন সাদা দলের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: ফাইল ছবি

জবি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়(জবি) শিক্ষক সমিতির কার্যকারী পরিষদ নির্বাচন ২০১৮ বুধবার অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের আগে থেকেই বিভক্তির শিকার আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল থেকে দু'টি প্যানেল অংশ নিলেও এই নির্বাচনকে অগণতান্ত্রিক আখ্যা দিয়ে নির্বাচন বয়কটের কথা জানিয়েছে বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক সমিতির বর্তমান সভাপতি প্রিয়ব্রত পাল ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল বাকীর মেয়াদ শেষ হয়েছে আজ মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর)। এরই ধারাবাহিকতায়  বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে ভোট গ্রহণ হবে।

এরই মাধ্যমে নির্বাচিত হবে ১৮ সদস্যের কার্যকরী পরিষদ। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে  ভোটকেন্দ্রে সকল ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিষিদ্ধ করেছে কমিশন।  

জানা যায়, গত কয়েকবারের মতো এবারও শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। এই নির্বাচনকে অগণতান্ত্রিক আখ্যা দিয়ে নির্বাচন বয়কট করার ঘোষণা দিয়েছেন সাদা দলের শিক্ষকরা। ফলে বরাবরের মতই এবারো নীল দল থেকেই দুটি পক্ষ দুই প্যানেলে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

কিন্তু আপাতদৃষ্টে এই নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ বরাবরের মত হলেও এবার এতে রয়েছে প্রকাশ্য বিভেদের সুর। কারণ এর আগের নির্বাচনগুলোতে সাদা দল না থাকার অজুহাতে নীল দলের দুই প্যানেল নির্বাচন করার কথা জানালেও এবার প্রকাশ্যেই বিভক্তি নিয়েই অংশ নিচ্ছে নীল দলের দুই গ্রুপ। ফলে বরাবর এটি শুধুই আনুষ্ঠানিকতা বলে চালিয়ে দিলেও এবার তা আর পারছে না ক্ষমতাসীন দলপন্থী শিক্ষকদের এই সংগঠনটি। তাই এবার মর্যাদার লড়াই একই পথের দুটি শিবির থেকে! 

শিক্ষক সমিতির এবারের নির্বাচনে দুটি প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. এ.কে.এম মনিরুজ্জামান-ড.মোঃ রেজাউল করিম প্যানেল ও ড. দীপিকা রানী সরকার-ড. মো: আব্দুল্লাহ আল বাকী।  

মনিরুজ্জামান-রেজাউল প্যানেলের অন্যরা হচ্ছেন
সহ-সভাপতি প্রার্থী ড. মোঃ সৈয়দ আলম, কোষাধ্যক্ষ পদে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ড. মোঃ হাফিজুল ইসলাম। এছাড়া সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন ড. মোঃ জাকির হোসেন, ড. মোঃ কাজী সাইফুদ্দিন, ড. মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, ড.নীলিমা হক, ড. মোঃ আব্দুল আদীন, মোঃ ছগীর হোসেন খন্দকার, ড. মোঃ মনিরুজ্জামান, দ্বীন ইসলাম, ড. মোঃ কাজী মিজান রহমান, ও নিউটন হাওলাদার।

দীপিকা-বাকী প্যানেলের অন্যরা হচ্ছেন
সহ-সভাপতি প্রার্থী জুনায়েদ আহমেদ হাশিম, কোষাধ্যক্ষ পদে ড. মো আব্দুল মাহফুজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ড.আব্দুল সামাদ। এছাড়া সদস্যপদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অধ্যাপক ড. মো: আতিউর রহমান, অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম, অধ্যাপক ড.শামীমা বেগম, বিভাস কুমার দাস, মোঃ মোফাজ্জল হোসেন, শিল্পী রানী সাহা, মোঃ আসাদুজ্জামান, মোঃ রেজাউল করিম, বিদ্যুৎ কুমার বালা ও মোঃ ইমরান হোসেন।

শিক্ষকরা মনে করেন, বিগত সময়ে যারা সমিতির দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের হয়তো অনেক ভুলত্রুটি ছিল। নতুন কমিটি এসব ভুলত্রুটি কাটিয়ে উঠে নতুন উদ্যমে শিক্ষকদের সকল সমস্যা সমাধানে কাজ করবে।

নির্বাচনে অংশ নেওয়া দুই প্যানেলের মধ্যে এবার জনপ্রিয়তার দৌড়ে এগিয়ে থাকবেন মনিরুজ্জামান-রেজাউল প্যানেল। মনিরুজ্জামানের রয়েছে অতীতে দৃঢ়চেতা মনোভাব এবং ক্লিন ইমেজ। রেজাউলেরও রয়েছে কাজের প্রতি নিষ্ঠা।

অপরদিকে ছেড়ে কথা বলবে না দীপিকা-বাকি পরিষদও। এই পরিষদের দীপিকা রানী জবি ভিসির আস্থাভাজন বলেই জানেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তবে সম্পাদক প্রার্থী বাকী এক মেয়াদে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে খুব বেশি আলোড়ন তুলতে পারেননি। তাই সার্বিক দিক বিবেচনায় শেষ মুহূর্তে যে কেউ বিজয়ের হাসি হাসতে পারেন।

নির্বাচনের প্রস্তুতি ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. প্রিয়ব্রত পাল বাংলানিউজকে বলেন, 'আমরা নির্বাচনের জন্য সকল প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। আমাদের দিক থেকে আমরা প্রস্তত। আশা করি, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন মাধ্যমেই প্রার্থীরা নির্বাচিত হবে।

এ বিষয়ে সভাপতিপ্রার্থী এ.কে.এম. মনিরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান শিক্ষক সমিতি আমাদের শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা নির্বাচিত হলে শিক্ষকদের সকল যৌক্তিক দাবি পূরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করব। এ উপলক্ষে আমরা ১৪টি নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছি। আশা করি শিক্ষকরা আমাদের প্যানেলকে তাদের পক্ষে কাজ করার সুযোগ দেবেন।

অপরদিকে সাদা দলের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোশারফ হোসেনের কাছে নির্বাচন বয়কট করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, 'আমাদের নির্বাচন বয়কট করার কারণটি স্পষ্ট। আর তা হল একতরফা নির্বাচন। এখানে আমাদের সেরকমভাবে প্রতিযোগিতার সুযোগই দেয়া হয় না। তাই আমরা এই নির্বাচনে আসবো না। নির্বাচন যদি গণতান্ত্রিক নিয়ম অনুযায়ী হতো তাহলে আমরা অবশ্যই অংশগ্রহণ করতাম।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৭
কেডি/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।