সোমবার (১ জানুয়ারি) দিনগত রাত আড়াইটার সময় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ফুটপাত ও রাস্তায় শীত, ধুলাবালি, মশার কামড় এমনকি রাতে বেপরোয়া গতির ট্রাকের নিচের চাপা পড়ার ভয় উপেক্ষা করে কয়েক’শ শিক্ষক অনশন করছেন।
এমপিওভুক্তির দাবিতে গত ২৬ ডিসেম্বর প্রেসক্লাবের সামনে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার ও সাধারণ সম্পাদক বিনয় ভূষণ রায়ের নেতৃত্বে এ লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে কয়েক হাজার শিক্ষক-কর্মচারী অংশ নেন।

কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন রাজশাহীর চারঘাট থানার ধর্মহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান। এ প্রতিষ্ঠানে তিনি ১৭ বছর শিক্ষকতা করছেন। রাতে অনশনরত এ শিক্ষক বাংলানিউজকে বলেন, গোসল, খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচি ও অনশন করছি আমরা। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের কয়েকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
মিজানুর রহমান তার শিক্ষকতা পেশায় আসার কথা তুলে ধরে বলেন, ২০০০ সালে অনেক স্বপ্ন নিয়ে শিক্ষকতা শুরু করি। মনে আশা ছিলো স্কুলটি এমপিওভুক্ত হয়ে যাবে। কিন্তু এতোদিনেও তা হয়নি।

মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের বিশ্বাস, আমাদের অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবি মেনে নেবেন। সবাই অনেক আশা নিয়ে আছে।
বিনা-বেতনে চাকুরি করা নন-এমপিও শিক্ষকদের সামজিক অবমূল্যায়ন ও মানবিক জীবন যাপনের কথা উল্লেখ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।
রাজশাহীর এ শিক্ষা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তাহলে এখন এমপিওভুক্ত করা হবে না কেন?
ফেডারেশন থেকে জানানো হয়, দেশে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ৫ হাজারের মতো নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা এক লাখেরও বেশি। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২৫ লাখের বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।
সংগঠনের নেতারা বলেন, এসব শিক্ষক-কর্মচারীরা বিনা বেতনে শিক্ষাদানের মহান পেশায় নিয়োজিত। অনেকে ১৫-২০ বছর বিনা বেতনে কাজ করে যাচ্ছেন। এমপিওভুক্তি না হলে আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি আসবে না।
নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের নেতারা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই কর্মসূচি চলবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৬২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৮
এমইউএম/এইচএ/