ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জিপিএ-৫ নিয়ে টানা-হেঁচড়া বন্ধের উপায় খুঁজছেন প্রতিমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৯
জিপিএ-৫ নিয়ে টানা-হেঁচড়া বন্ধের উপায় খুঁজছেন প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা: প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনীতে জিপিএ-৫ নিয়ে টানা-হেঁচড়া বন্ধে পরীক্ষা রেখেই বিশেষ ব্যবস্থার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। 

সমাপনীর ফল প্রকাশ উপলক্ষে মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীও পরীক্ষাটা রেখে বিশেষ ব্যবস্থার কথা বলছেন।  

এবার প্রাথমিক সমাপনীতে পাসের হার ৯৫ দশমিক ৫০ শতাংশ।

আর ইবতেদায়িতে ৯৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ। প্রাথমিকে জিপিএ-৫ পেয়েছে তিন লাখ ২৬ হাজার ৮৮ শিক্ষার্থীরা। আর ১১ হাজার ৮৭৭ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে ইবতেদায়িতে।  

জিপিএ-৫ নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের টানা-হেঁচড়ার মধ্যে আগামী বছর থেকে অষ্টমের সমাপনীতে গ্রেড পরিবর্তন করে জিপিএ-৪ এর ভিত্তিতে ফল দেওয়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।  

জেএসসি-জেডিসিতে আগামীবার থেকে জিপিএ-৫ থাকবে না, একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী প্রাথমিক সমাপনী নিয়েও কথা বলেছেন- এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক সমাপনী তুলে দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেননি। আমরাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি তুলে ধরেছিলাম। আমাদের কাছে অভিভাবকরা বিভিন্ন সময় প্রশ্ন করে, তারা আমাদের পরীক্ষাটি তুলে দেওয়ার জন্য বলছেন।  

‘প্রধানমন্ত্রীর কথা হলো এখানে কোমলমতি শিশুদের একদিকে মেধার বিকাশ, মননশীলতা, ধৈর্য, একটা পরীক্ষা দিচ্ছে, একটা প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করতে চাচ্ছি। আমরা যখন পড়েছি তখনও কিছু পরীক্ষা ছিল প্রাইমারিতে। যারা বৃত্তি পরীক্ষা দিতো স্যাররা তাদের আলাদাভাবে ড্রাইভ দিতো, তারা যাতে ভালো করে। ’ 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা সবার বেলায় সমান করছি, একটি পরীক্ষা থাকা দরকার। কারণটা হলো- তাদের একটা প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবও গড়ে তোলা সম্ভব এ পরীক্ষাটার মাধ্যমে।  

‘কিন্তু এটা করে কী, মায়েরা এতো বেশি টানাটানি করে জিপিএ-টিপিয়ে নিয়ে। আমরা চিন্তা করছি পরীক্ষাটা, প্রধানমন্ত্রীরও কথা হলো এটার বিশেষ কোনো ব্যবস্থা করা যায় কিনা। পরীক্ষা রাখা হবে। এর আগেও বৃত্তি পরীক্ষা ছিল, সবধরনের পরীক্ষা ছিল। এ পরীক্ষাটা তিনি রাখতে চাচ্ছেন। এটা একটু সহজ করা যায় কীভাবে, যাতে টানা-হেঁচড়া না থাকে। ’ 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০০৯ সাল থেকে পরীক্ষাটা চালু করেন, এ পরীক্ষাটা আজও আছে। আমরা কিছুটা হয়তো পরিবর্তন করতে চাচ্ছি।  

কোন উপজেলায় পাসের হার ৬০ শতাংশ- এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা পদক্ষেপ নেবো, যাতে তারা আরো ভালো করতে পারে। আমরা তাদের মোটিভেশন করবো।  

মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন, শাস্তি আরোপের মাধ্যমে কিছু হবে না। আমরা এখন সারা দেশে ৬৬ হাজার স্কুলে শাস্তি আরোপের মাধ্যমে কিছু অ্যাচিভ করতে চাই না। আমরা চাচ্ছি মোটিভেশন করতে। আমরা হেড মাস্টারদের মোটিভেট করছি, সহকারী শিক্ষকদের মোটিভেট করছি, আমাদের মায়েদের মোটিভেট করছি, আমরা প্রশাসনকে মোটিভেট করছি। সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এটা অ্যাচিভ করা সম্ভব, কিন্তু শাস্তি আরোপের মাধ্যমে না।  

পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এফ এম মঞ্জুর কাদির বলেন, পাসের হার ক্রমান্বয়ে বাড়বে না, তাহলে তো ১০০ ক্রস করে যাবে। কখনও কমবে, কখনও বাড়বে। প্রশ্ন হয়তো এবার সেভাবেই হয়েছে, যার ফলে পাস কমে এসেছে। এমসিকিউ তুলে দেওয়া হয়েছে, এর একটা প্রভাব থাকতে পারে। তবে পাসের হার ৯৫ এর নিতে নামেনি।  

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সব বছর তো পাসের হার এক রকম থাকবে না। এবার আমরা ‍সুন্দরভাবে পরীক্ষা নিয়েছি, পরীক্ষায় কোনো দুর্নীতি করতে দেইনি। ইত্যাদি কারণে হয়তো পরীক্ষা সঠিকভাবে হয়েছে। কিছুটা সুন্দর মূল্যায়ন হয়েছে হয়তো বা, এটাই কারণ।  

আকরাম-আল-হোসেন বলেন, অন্যবার যে উপজেলার খাতা সেই উপজেলায় দেখা হতো। এবার আমরা পরিবর্তন করে দিয়েছি। মূল্যায়ন পদ্ধতির কারণে হয়তো কিছুটা কমতে পারে।  

শতভাগ সৃজনশীল করা হলেও সময় না বাড়ানোয় প্রভাব পড়েছে কিনা- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি না। আমাদের কোনো কর্মকর্তা এটা বলেনি যে বাচ্চারা সময় পাচ্ছে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৯
এমআইএইচ/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।