জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি): করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকাকালীন সময়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেন্সিং (আইআরএস) এর শিক্ষক-কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য অনলাইনে মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ না করার দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের একাংশের সংগঠন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ।
সোমবার (৯ নভেম্বর) অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।
তারা বলেন, আইআরএসকে নিয়ে উত্থাপিত সব অভিযোগের সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত এ ইনস্টিটিউটের নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে হবে। এছাড়া ক্যাম্পাস বন্ধ থাকাকালীন সময়ে যেকোন ধরনের নিয়োগ বন্ধ রাখতে হবে। তবে শিক্ষক, কর্ম কর্মকর্তাদের পদোন্নতির বিষয়টি চালু রাখা যেতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিন দফা দাবি জানান সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক খবির উদ্দিন। তাদের দাবিগুলো হলো- আইআরএস সংক্রান্ত বিষয়ে গঠিত সিন্ডিকেটে কর্তৃক কমিটির কার্যক্রম দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করা, আইআরএস নিয়ে উত্থাপিত সব অভিযোগ একাডেমিক কাউন্সিলে আলোচনা করা এবং সরাসরি ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনানুসারে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া।
লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক খবির উদ্দিন বলেন, ২০১৭ সালের বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেন্সিং-এর অনুমোদন দেওয়া হয়, যা পরবর্তী পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) নাম পরিবর্তনসহ কিছু শর্ত সাপেক্ষে অনুমোদন দেয়। কিন্তু এ ইনস্টিটিউটের গঠন এবং অনুমোদন নিয়ে শুরু থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ আপত্তি জানিয়ে আসছে।
ইউজিসির শর্তগুলো মধ্যে রয়েছে- ইনস্টিটিউটটি পরিচালনার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ইনস্টিটিউটের ন্যায় অনুরূপ ইউনিফর্ম নীতিমালা প্রণয়ন করা। কিন্তু আইআরএস এর কাঠামো বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য চলমান ইনস্টিটিউট থেকে ভিন্ন।
এছাড়া ইউজিসির শর্ত হিসেবে আইআরএস শুধু মাস্টার্স প্রোগ্রাম চালু করলে ভূগোল বিভাগের সঙ্গে বস্তুগত বিষয়ে সম্পূর্ণ মিলে যায়। ফলে ভূগোল বিভাগ থেকে অনার্স পাস করা ছাত্র-ছাত্রীরা আইআরএস-এ মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তি হলে ভূগোল বিভাগের চলমান মাস্টার্স প্রোগ্রাম ব্যাহত হবে দাবি তুলে ভূগোল বিভাগ একাডেমিক কমিটিতে সিদ্ধান্ত নেয়। এক পর্যায়ে প্রতিবাদ হিসেবে ভূগোল বিভাগের একাডেমিক কমিটি থেকে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের জন্য নতুন সিলেবাস না করারও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক খবির আরও উল্লেখ করেন, এর আগে দুইবার সিলেকশন বোর্ড ডাকা হলেও শিক্ষকদের বাধায় তা স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে এ ইনস্টিটিউট সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্ত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষসহ পাঁচ সদস্যের সমন্বয়ে কমিটি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। কিন্তু সেই কমিটি এখন পর্যন্ত কোনো বৈঠক করতে পারেনি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সভাপতি ও জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আব্দুল জব্বার হাওলাদার, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার হাসান মাহমুদ, সহযোগী অধ্যাপক উম্মে সায়কা, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০২০
আরআইএস