ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

নতুন নামে পিস স্কুল, অনুমোদনহীন শাখা ক্যাম্পাস নিয়ে বিরোধ

শিক্ষা ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২১
নতুন নামে পিস স্কুল, অনুমোদনহীন শাখা ক্যাম্পাস নিয়ে বিরোধ

ঢাকা: রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার পর বন্ধ হয়ে যাওয়া ‘পিস স্কুল’ ভিন্ন নামে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলটি ভিন্ন নামে পরিচালনার পাশাপাশি অনুমোদন না নিয়েই প্রতিষ্ঠানটির শাখা ক্যাম্পাসও খোলা হয়েছে।

বর্তমানে ‘এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল’নামে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানটির মালিকানায় রয়েছেন আগের মালিক মুফতি কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিমসহ আরও দুজন। তবে মামলাজনিত কারণে ওয়েবসাইট থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।  

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্কুলের লভ্যাংশ নিয়ে বিরোধের জেরে পর কাজী ইব্রাহিম যে প্রতিষ্ঠানটির মালিকানায় রয়েছেন তা প্রকাশ পায়। কাজী ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের মিরপুর শাখার পরিচালক জেড এ রানা। ওই অভিযোগে কাজী ইব্রাহিমকে প্রতিষ্ঠানটির মালিক, পরিচালক ও উপদেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

বন্ধ হওয়ার আগে পিস স্কুলের চেয়ারম্যান ছিলেন মুফতি কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিম। এছাড়া পরিচালক হিসেবে ছিলেন আখতারুজ্জামান খান ও মোস্তাফা কামাল। বর্তমানে আখতারুজ্জামান খান এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলটির চেয়ারম্যান।

সূত্র আরও জানায়, লভ্যাংশ নিয়ে বিরোধের কারণে উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি ছয়টি মামলা দায়ের করে। উচ্চ আদালতেও একটি রিট আবেদন হয়েছে।

তবে আইনি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই মিরপুর শাখা ক্যাম্পাস দখলের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে বলে জানান এই শাখার পরিচালক জেডএম রানা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, দেড় বছর আগে এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শাখা ক্যাম্পাস নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। করোনাকালীন ছুটির সময় ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুর রহমান মিরপুর শাখার পরিচালককে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করেন। তার বিরুদ্ধে চারটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করে স্কুলটি দখলে নেওয়ার প্রক্রিয়া চালানো হয়। প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে শাখা ক্যাম্পাস চলাকালে মিরপুরে নতুন ক্যাম্পাস করে চলমান ক্যাম্পাসটি বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আগামী জানুয়ারি থেকে নতুন ক্যাম্পাস চালু করার কথা।

এদিকে মামলা ও মালিকানা বিরোধের কারণে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন বিঘ্নিত হওয়ারও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যেও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়ায় স্কুলটির মূল ক্যাম্পাসেরও অনুমোদন নেই। আর মিরপুরের রূপনগর আবাসিক এলাকার শতাধিক শিক্ষার্থীর লেখাপড়া অনিশ্চয়তায় পড়েছে। মিরপুর শাখা ক্যাম্পাস দখল করতে পরিচালকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে চারটি মামলাও করা হয়েছে। এরই মধ্যে অনুমোদন ছাড়াই মিরপুর ১২ নম্বরে নতুন একটি শাখা ক্যাম্পাস খোলার জন্য ফেসবুকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ওই ক্যাম্পাস চালু হলে রূপনগরের ক্যাম্পাস বন্ধ হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হবে।

বর্তমানে স্কুলটিতে প্রথম শ্রেণি থেকে ‘ও’ লেভেল পর্যন্ত পাঠদান করা হচ্ছে। ২০২০ সালে শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদন ছাড়াই ‘ও’ লেভেল পরীক্ষার ব্যবস্থা করে প্রতিষ্ঠানটি।

মিরপুরের রূপনগর শাখার শাখা পরিচালক জেড এ রানা গণমাধ্যমকে বলেন, মূল ক্যাম্পাসেরই অনুমোদন নেই। সে কারণে শাখা ক্যাম্পাসের অনুমোদন নেওয়ার সুযোগও নেই। অনুমোদন ছাড়াই ২০২০ সালে ‘ও’ লেভেল পরীক্ষা হয়েছে। আমার সঙ্গে হওয়া প্রতারণার প্রতিকার চাইতে গিয়ে শিক্ষা বোর্ডে জানতে পেরেছি, মূল স্কুলেরই অনুমোদন নেই। তাই শাখা ক্যাম্পাসের বিষয়ে তাদের কিছু করার নেই। এজন্য বাধ্য হয়ে আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ২০২০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে জেড এম রানাকে জানান, এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত নয়, তাই এ বিষয়ে তাদের করণীয় কিছু নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।