ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বিদ্যা-শিক্ষার কিছুই বোঝেন না শাবি ভিসি: জাফর ইকবাল

সিনিয়র ও শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২২
বিদ্যা-শিক্ষার কিছুই বোঝেন না শাবি ভিসি: জাফর ইকবাল

সিলেট: লেখক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৬টি সংগঠন ছিল। এর কারণে আমাদের শিক্ষার্থীরা অন্য কোথাও প্রতিযোগিতায় গেলে তাদের ক্রিয়েটিভিটি ও নেতৃত্বগুণে আলাদাভাবে চেনা যেতো।

কিন্তু তিনি (ভিসি) অ্যাকাডেমিক, শিক্ষা এসবের কিছুই বোঝেন না।

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) মুক্তবুদ্ধির চর্চা হতে দিতেন না ভিসি। নিষিদ্ধি ছিল রোড পেন্টিং। শিক্ষা, সংস্কৃতি, আবৃত্তিসহ মুক্তবুদ্ধির চর্চায় দেশ কাঁপানো শাবিকে অনেকটা শ্বাসরুদ্ধ করে রেখেছিলেন। ফলে সব ধরনের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো কার্যক্রম স্থিমিত করে আনে। এসবের মাধ্যমে ছেলেমেয়েদের ক্রিয়েটিভিটি ও নেতৃত্বের গুণাবলী তৈরি হয়। সেগুলো যেনো ‘আঁতে ঘা’ দিতো শাবিপ্রবির ভিসিকে।

তিনি বলেন, তিন বছর আগে আমি যখন অবসরে যাই। তখন চিঠি দিয়ে লিখিতভাবে বলেছিলাম, ছাত্রদের আপনি অবহেলা করবেন না। ছাত্রদের যে ক্ষোভ আছে, তা বিক্ষোভে রূপ নেবে। তা এখন অক্ষরে অক্ষরে ফলেছে। এটা তিন বছরের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ। যারা আন্দোলন করেছেন, তারা একেবারেই সাধারণ শিক্ষার্থী। তারা সঙ্গত কারণে আন্দোলন করেছে। এটা যৌক্তিক দাবি বলে মনে করেন ড. জাফর ইকবাল।

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, সরকারের উচ্চ মহল আমাকে অনুরোধ করে এখানে পাঠিয়েছেন। তারা আমাকে কথা দিয়েছেন। আমি তাদের অনুরোধ করবো কথাগুলো যেনো রক্ষা করা হয়। আমি ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।  

তিনি বলেন, আন্দোলনে টাকা-পয়সা দিয়ে সাহায্য করায় আমার ছাত্রদের আটক করা হয়েছে। এ মুহূর্তে তাদের হাজতে রাখা হয়েছে। আমি আশা করবো তাদের যেনো মুক্ত করে দেওয়া হয়। তাছাড়া যখন প্রয়োজন হবে, কারো নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, এগুলো যেনো না হয়। তারা যে কি পরিমাণ কষ্ট করেছেন, তাদের খাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছেন।  

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, আপনারা যে ভূমিকা রেখেছেন, ভবিষ্যতেও যেনো এ ধারা বজায় রাখেন।

তিনি বলেন, আমি অনশন ও আন্দোলনকে ভিন্নভাবে দেখি। এই আন্দোলনের যে উদ্দেশ্য, এজন্য অনশন করার প্রয়োজন নেই। যে মানুষটার জন্য আন্দোলন করেছে, তারও প্রয়োজন নেই।  

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, যেখানে চিকিৎসক নেই। তারা যেভাবে সবকিছু ব্যবস্থা (ম্যানেজ) করেছেন। ছেলে-মেয়েদের সুস্থ রেখেছেন। হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। যখন যেভাবে প্রয়োজন, সেটা করেছেন। আমি তাদের বিষয়ে আশাবাদী, তারাই আগামীর বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে।  

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, সরকারের উচ্চ মহল আমার কাছে এসেছেন। তারা আমাকে অনুরোধ করে পাঠিয়েছেন। আমি প্রত্যাশা করবো, আমার কথাও রাখবেন। তবে এক্ষেত্রে কোনো সময় বেঁধে দিতে চাই না। এছাড়া আমার কথায় শিক্ষার্থীরা অনশন ভেঙেছেন, আমি তাতে অত্যন্ত খুশি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২২
এনইউ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।