ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

'যুগোপযোগী সিলেবাস চান শিক্ষার্থীরা!

ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২
'যুগোপযোগী সিলেবাস চান শিক্ষার্থীরা!

ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ভাষা সম্পর্কিত তিনটি বিভাগ চালু রয়েছে। গত ৩০ বছর ধরে বিভাগগুলোতে নিয়মিতভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হচ্ছে।

বিভাগগুলোতে ভাষা চর্চার পাশাপাশি যুগোপযোগী শিক্ষা দেওয়া হয়। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। সে কারণে যুগোপযোগী সিলেবাস বাড়ানোর কথা বলছেন শিক্ষার্থীরা।  

জানা যায়, ১৯৮১ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ চালু করা হয়। তারপর থেকে দাখিল ও আলিম পাশ করা শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়।  

কিন্তু গত তিন বছর ধরে মাদরাসার পাশাপাশি জেনারেল থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীদেরও ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ফলে বিভাগটির মান কিছুটা কমেছে। জেনারেল থেকে পাস করা শিক্ষার্থী আরবি লিখতে ও পড়তে না পারার কারণে পরীক্ষার ফলাফল খারাপ করছে। এ নিয়ে বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।  

বিভাগটিতে আরবির পাশাপাশি ৩০০ নম্বরের ইংরেজি, ১০০ মার্কস তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বাংলা ও বাংলাদেশ স্টাডিজ পড়ানো হয়। এছাড়াও ১০০ মার্কসের কম্পিউটার শিক্ষার কোর্সও রয়েছে। ফলে সিলেবাস কিছুটা যুগোপযোগী হলেও আরও কিছুটা পরিবর্তন চান শিক্ষার্থীরা।  

এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা সরকারি সব চাকরিই করতে পারে। বিশেষ করে আরবি প্রভাষক পদে চাকরির বৃহৎ সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও বিভাগে ভালো ফলাফলসহ আরবি ভাষায় দক্ষ হয়ে উঠতে পারায় শিক্ষার্থীরা মিশর, কাতার, সৌদি আরবসহ মুসলিম দেশগুলোতে স্কলারশিপ পেয়ে থাকে। ফলে বিভাগ নিয়ে শিক্ষার্থীদের তেমন হতাশা নেই।

এ নিয়ে বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মাসুম আলভী বলেন, আমাদের বিভাগের অনেক শিক্ষার্থী সুনামের সঙ্গে বিদেশে পড়াশোনা করছে। কর্মক্ষেত্রে ভালো করছে। তবে মাদরাসা শিক্ষার্থীর পাশাপাশি জেনারেল শিক্ষার্থীদের ভর্তির ফলে আমাদের বিভাগের সুনাম কিছুটা ক্ষুণ্ন হচ্ছে। কারণ অনেকেই এখন বিভাগটিতে ভর্তি হতে যাচ্ছে না। এই বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধান চাই আমরা। '

এ নিয়ে বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের যুগোপযোগী সিলেবাস রয়েছে। এ বিভাগ থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে সুনাম অর্জন করেছে। তবে জেনারেল ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা শিক্ষার্থীরা এখন কিছুটা খারাপ ফলাফল করছে। এ বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছি আমরা।

এদিকে ১৯৯১ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগ চালু হয়। গত ৩০ বছরে বিভাগটিতে নিয়মিতভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হচ্ছে। প্রত্যেক শিক্ষাবর্ষে ৮০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিভাগটি এগিয়ে যাচ্ছে। তবে ইংরেজি ও কম্পিউটার শিক্ষায় পিছিয়ে রয়েছে বিভাগটি। মাত্র ১০০ মার্কসের ইংরেজি ও ১০০ মার্কসের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পড়ানো হয়। ফলে চাকুরি ক্ষেত্রে বাড়তি চাপ নিতে হয় শিক্ষার্থীদের। তবে চাকরি ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বিশেষ সুযোগ সুবিধা রয়েছে। বিশেষ করে বাংলা প্রভাষক ও শিক্ষক পদে।    

বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান বলেন, এ বিভাগে পড়তে পেরে আমি আনন্দিত। তবে বাংলার পাশাপাশি বিভাগে যুগোপযোগী সিলেবাস অন্তর্ভুক্তি করতে হবে। তাহলে ভবিষ্যৎ জীবনে আমরা আরও ভালো করতে পারব।

বিভাগের অধ্যাপক ড. রাশিদুজ্জামান বলেন, আমরা প্রত্যেক বছর সিলেবাসে নতুন কিছু অন্তর্ভুক্ত করি। আগামীতে যুগোপযোগী সিলেবাস তৈরির পরিকল্পনা চলছে। ঠিক একই সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ চালু হয়। প্রত্যেক বছর ৯০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। বিভাগটি নিয়ে শিক্ষার্থীদের তেমন কোনো অভিযোগ নেই।  

আরবি ও বাংলা বিভাগের তুলনায় এগিয়ে ইংরেজি বিভাগ। বিভাগটিতে প্রতি বছর ১০০ শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। ভাষা ও সাহিত্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রফেশনাল জীবনের সামঞ্জস্য রেখে তৈরি করা হয়েছে সিলেবাস। বিভিন্ন সরকারি/বেসরকারি চাকরিতে বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাফল্য চোখে পড়ার মতো। তবে বিভাগটিতে শিক্ষার্থীদের গবেষণার দিক থেকে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাস্টার্স শেষে গবেষণার সুযোগ পেলে নিজেদের আরোও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে বলে জানায় বিভাগের শিক্ষার্থীরা।  

ইংরেজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মেহের আলী বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা চাকরিতে গিয়ে অনেক ভালো করছে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা সিলেবাস তৈরি করার চেষ্টা করছি। এছাড়াও নিয়মিতভাবে ক্লাস উপস্থাপনার বিষয়টি আমরা জোর দিচ্ছি। যাতে চাকরি ভাইভাতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা ভালো করে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।