ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

শিক্ষককে যোগদানে বাধা, সভাপতির অব্যাহতি চায় শিক্ষার্থীরা 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২
শিক্ষককে যোগদানে বাধা, সভাপতির অব্যাহতি চায় শিক্ষার্থীরা  জামেয়া ইসলামিয়া কলাকোপা মাদ্রাসা। ছবি: বাংলানিউজ

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রামগতির ঐতিহ্যবাহী জামেয়া ইসলামিয়া কলাকোপা মাদ্রাসার শিক্ষককে কর্মক্ষেত্রে যোগদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মোহতামিম মু. আলী ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল আল ইস্রাফিলের বিরুদ্ধে।

এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে একটি লিখিত আবেদন দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক মাওলানা আখতার হোসাইন।

 
মেধাবী এ শিক্ষককে কর্মস্থলে যোগদানের জন্য দাবি জানিয়ে আসছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়রা।

এদিকে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল আল ইস্রাফিলকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ওই মাদ্রাসার প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ। এ বিষয়ে তারা উপজেলা ইউএনওয়ের কাছে একটি আবেদন করেন।

অভিযুক্ত আব্দুল আল ইস্রাফিল নিজেকে কেন্দ্রীয় ওলামালীগের নেতা বলে দাবি করেন।  

ভুক্তভোগী শিক্ষকের অভিযোগ থেকে জানা যায়, শিক্ষক মাওলানা আখতার হোসাইন অসুস্থতার কারণে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ছুটিতে যান। এক মাস ছুটি শেষে তিনি ফের কর্মস্থলে যোগ দিতে এলে মাদ্রারাসা মোহতামিন (প্রধান) ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি তাকে যোগদান করতে দেননি। কালক্ষেপণ করতে করতে সাড়ে তিন মাস কেটে গেলেও তাকে ক্লাসে ফিরতে দেওয়া হয়নি। উপায়ন্তর না পেয়ে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম শান্তুনু চৌধুরীর কাছে লিখিত আবেদন করেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন কৌশলে তাকে ওই মাদ্রাসার সভাপতি করেন। সভাপতি হওয়ার পর থেকে অর্থনৈতিকসহ বিভিন্ন অনিয়ম করে আসছেন। তার মনগড়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কারণে মাদ্রাসার সুনাম নষ্ট হচ্ছে। নানা অজুহাতে মাদ্রাসা ফান্ড থেকে টাকা আত্মসাৎ করারও অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এসব অনিয়মের কারণে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।  

ওই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোসতাক আহমেদ ও মাদ্রাসার দাতা সদস্য মো. ইলিয়াছ জানান, মোহতামিম মু. আলী একজন চিহ্নিত রাজাকার। যুদ্ধের সময় এই মাদ্রাসায় রাজাকারদের ক্যাম্প ছিল। ওই ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলেন মোহতামিম মু. আলী। সে এখন একটা মাদ্রাসার প্রধান হিসেবে বসে আছেন।  
মোহতামিম মু. আলী আব্দুল আল ইস্রাফিলকে আঁতাত করে প্রতিষ্ঠানের নানা অনিয়ম করে আসছেন। এছাড়া শিক্ষক মাওলানা আখতার হোসাইনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে তাকে কর্মস্থলে যোগদান করতে দিচ্ছেন না।  

এদিকে শিক্ষার্থী মাওলানা আখতার হোসাইনের অনুপস্থিতে মাদ্রাসার পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। তারা ওই শিক্ষককে শ্রেনিকক্ষে ফিরে পেতে দাবি জানান।  
ভুক্তভোগী শিক্ষক মাওলানা আখতার হোসাইন বলেন, এক মাসের ছুটি শেষে কর্মস্থলে যোগদান করতে গেলে সভাপতি মোহতামিম আমাকে যোগদান করতে দেননি। যে কারণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করি।  

এ বিষয়ে জামেয়া ইসলামিয়া কলাকোপা মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা মু. আলী বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এলাকার স্বার্থে আমি শান্তি কমিটির সদস্য ছিলাম। আমার দ্বারা বীর মুক্তিযোদ্ধা বা কারো কোন ক্ষতি হয়নি। মাদ্রাসার বিভিন্ন অনিয়ম শিক্ষক যোগদানের বাধার বিষয়ে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি।

এদিকে ওই মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ইস্রাফিল বলেন, আমি সভাপতি হওয়ার পর থেকে এ প্রতিষ্ঠানে কোন অনিয়ম হয়নি। তার বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব বিষয় তিনি জানেন না।  

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম শান্তুনু চৌধুরী বলেন, দুই পক্ষকে নোটিশ করা হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করবো।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।