ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ইবিতে ভর্তি জালিয়াতি চক্রের সদস্য আটক

ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২
ইবিতে ভর্তি জালিয়াতি চক্রের সদস্য আটক ভর্তি জালিয়াত চক্রের সদস্য আতিক

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ভর্তি জালিয়াতি চক্রের এক সদস্য আটক হয়েছেন। রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতিসৌধ এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ তাকে আটক করে।

আটক আতিকের বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার রাণীনগরে। বাবার নাম মো. আবু বক্কর।

জানা গেছে ইবিতে ভর্তি হতে আসা আহনাফ মোর্শেদ নামে এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে আড়াই লাখ টাকার চুক্তি হয়। আহনাফ ঠাকুরগাঁওয়ের গোবিন্দ নগরের মোকাররম হোসেনের ছেলে। গুচ্ছভুক্ত ভর্তি পরীক্ষায় বিজ্ঞান অনুষদের ‘এ’ ইউনিটে অংশ নেন তিনি। পরবর্তীতে ভর্তির জন্য আবেদন করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে।

এতে মেধাতালিকা না আসায় তার কলেজের বন্ধু ফরহাদ হোসেন অবৈধভাবে ভর্তির পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে তার পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী বড় ভাই ইকবালের সহায়তা নিতে বলেন। বন্ধুর পরামর্শ অনুযায়ী ইকবালের সঙ্গে কথা বললে তিনি আহনাফকে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন। পরে ইকবাল শৈলকূপার বড়দার লালচাঁন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন।

এরপর লালচাঁন ওই ভর্তিচ্ছুকে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে ডাকেন, সাক্ষাৎ করেন এবং আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি করানোর আশ্বাস দেন। সেদিন লালচাঁনের সঙ্গে আতিকও ছিলেন। এ সময় আহনাফের কাছ থেকে ১৮ হাজার টাকা নিয়ে রশিদের মাধ্যমে ৮ হাজার ১০০ টাকা ব্যাংকে জমা দেন।

বিভাগের একাউন্টে টাকা জমা হয়েছে এবং কাগজপত্রের স্বাক্ষর জালিয়াতি করা হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন ব্যাংক কর্মকর্তা পরাগ। পরে আহনাফ তার এক আত্মীয়র পরিচিত কর্মকর্তার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। পরে ওই কর্মকর্তা বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানান।

আহনাফের মাধ্যমে টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতিসৌধে জালিয়াতি চক্রের সদস্য আতিককে ডাকা হয়। তখন ডিবি পুলিশ তাকে হাতেনাতে আটক করে। এসময় তার কাছ থেকে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে ভর্তির একটি ফরম পাওয়া যায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলে ডিবি পুলিশ আতিককে ইবি থানায় সোপর্দ করে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও উপ-রেজিস্ট্রারের (শিক্ষা) স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ওই বিভাগে ভর্তির একটি তালিকা তৈরি করেন। সেই তালিকাটি ভুয়া এবং ভর্তির ক্ষেত্রে এমন কেনো তালিকা দেওয়া হয় না বলে নিশ্চিত করেছে রেজিস্ট্রার দপ্তর।

তাৎক্ষণিক জিজ্ঞাসাবাদে স্থানীয় রাকিব ও লালচাঁনের নাম পুলিশকে জানান আতিক। তাদের নির্দেশ অনুযায়ী ভুক্তভোগীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন বলেও জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, জালিয়াতি চক্রের ওই সদস্যকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এদিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বাদী হয়ে মামলা করেছেন বলে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোস্তাফিজুর রহমান নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ভিক্টিম নিজে বাদী হয়ে মামলা করেছে।   সোমবার(২৮ ফেব্রুয়ারি) আটক ব্যক্তিকে কোর্টে চালান করা হবে।

ভুক্তভোগী আহনাফ বলেন, পরিচিত এক লোকের মাধ্যমে লালচাঁনের সঙ্গে আড়াই লাখ টাকার চুক্তি হয়। এরই মধ্যে তাদের ১৮ হাজার টাকা দিয়েছি। পরে আমার বাবা বাঁধা দেওয়ায় ও বিষয়টি অনিশ্চিত জেনে ক্যাম্পাসের পরিচিত এক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে আতিককে ডেকে এনে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছি।

বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।