ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

শিক্ষার্থীদের দিয়ে জমি দখল: সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২২
শিক্ষার্থীদের দিয়ে জমি দখল: সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ  ফাইল ফটো

লক্ষ্মীপুর: শিক্ষার্থীদের দিয়ে জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে এলকেএইচ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে এবার নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।  

বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী পদে নিয়োগের কথা বলে এক চাকরি প্রার্থীর কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছেন তিনি।

কিন্তু হুমায়ুন কবির নামে ওই প্রার্থীকে চাকরি দেওয়া হয়নি। বছর পার হলেও টাকাও ফেরত দেননি প্রধান শিক্ষক।  

বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে ভুক্তভোগী হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় তিনি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী অঞ্চল (রায়পুর) আদালতেও মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি পুলিশ তদন্ত করছে।  

ভুক্তভোগী হুমায়ুন উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়া গ্রামের মোল্লা বাড়ির আবদুর রশিদ মোল্লার ছেলে।  

হুমায়ুন জানায়, বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী পদে ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি একটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়। এর ভিত্তিতে চাকরির জন্য তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথা বলেন। এক পর্যায়ে চাকরি পাইয়ে দেবেন বলে হুমায়ুনের কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা ঘুষ চেয়েছেন প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান। এতে রাজি হয়ে হুমায়ুন ওই বছরের ১ মার্চ চরবংশী গ্রামের বাড়িতে গিয়ে শিক্ষককে পাঁচ লাখ টাকা দেন। বাকি টাকা নিয়োগের পর পরিশোধ করা হবে বলে উভয়পক্ষ একমত হন।  

এদিকে একই বছর ২৮ মার্চ লিখিত পরীক্ষা ও ৭ এপ্রিল মৌখিক পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। নিয়োগ না পেয়ে ও টাকা ফেরত দিতে সময়ক্ষেপণ করায় ২৬ আগস্ট হুমায়ুন ওই শিক্ষকের বাড়িতে যান। এতে শিক্ষক তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। পরে ১ সেপ্টেম্বর হাজিমারা পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ করলে শিক্ষককে ডাকা হয়। তখন ১৫ দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দেবেন বলে পুলিশের কাছে তিনি মৌখিকভাবে স্বীকার করেন।  

কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি। এতে ১৬ অক্টোবর চরবংশী গ্রামে দেখা হলে হুমায়ুন তার কাছ থেকে টাকায় চান। কিন্তু টাকা দেবে না বলে জানান শিক্ষক।  

একপর্যায়ে হুমায়ুনকে হত্যা, লাশ গুম ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দেওয়া হয়। এতে বাধ্য হয়ে হুমায়ুন বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী অঞ্চল (রায়পুর) আদালতে শিক্ষক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর মামলা দায়ের করেন।  

হুমায়ুন কবির বলেন, চাকরি দেবে বলে আমার কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। কিন্তু আমাকে চাকরি দেননি, আমার টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না। টাকা চাইলে আমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। আমি টাকা ফেরত চাই।  

প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, হুমায়ুনের বাবা আবদুর রশিদ মোল্লা তখন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন। আমাকে তিনি টাকা দিতে যাবেন কেন? নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর চাকরির জন্য হুমায়ুন আমার কাছে এসেছেন। অবৈধভাবে তাকে চাকরি না দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে।  

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও হাজিমারা পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) নিজাম উদ্দিন বলেন, তদন্ত করা শেষ হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনও আদালতে জমা দিয়েছি।  

এর আগে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দিয়ে জমি দখলের অভিযোগে শিক্ষক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন মো. রাসেল মিয়া নামের এক ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় সমালোচনার মধ্যে পড়েন এই শিক্ষক।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২২
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।