কুড়িগ্রাম: জেলার উচ্চ শিক্ষায় অবদান রাখা প্রাচীন বিদ্যাপীঠ কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের দোতলা বিশিষ্ট জরাজীর্ণ পুরাতন ভবনটি শিক্ষার্থীদের আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ওই ভবনটির অনেক স্থানে ধরেছে ফাটল।
১৯৬১ সালে স্থাপিত কলেজটি নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালু হলেও স্থান সংকুলান না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানের সুষ্ঠু পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
প্রাচীন এই বিদ্যাপিঠটিতে প্রায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থীর স্থান সংকুলান না হওয়ায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা মাথায় নিয়েই দোতলা বিশিষ্ট জরাজীর্ণ পুরাতন ভবনের শ্রেণিকক্ষগুলোতে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পাঠদান চলছে। এ পরিস্থিতিতে কলেজটিতে জেলার শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজের লক্ষ্যে এবং জীবনের ঝুঁকি এড়াতে নতুন ভবন নির্মাণের জোর দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টরা। কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ সূত্রে জানা যায়, উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক, অনার্স-মাস্টার্সসহ কলেজটিতে ১৮ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত রয়েছে। ১৪টি বিষয়ে অনার্স-মাষ্টার্স কোর্সে ১৪ হাজার ৩০০ শিক্ষার্থী, স্নাতক পাস কোর্সে ২ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী ও উচ্চ মাধ্যমিকে অধ্যায়নরত রয়েছে ১ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী।
১৯৬৫ সালে নির্মিত জরাজীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ দোতলা বিশিষ্ট পুরাতন ভবনটিতে রয়েছে মোট ৩৯টি কক্ষ। এর মধ্যে ১০টি কক্ষে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষসহ প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি ২৯টিতে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান চলছে। নতুন করে কলা ভবন, বিজ্ঞান ভবন, ব্যবসায়ে শিক্ষা ভবন, একাডেমিক কাম পরীক্ষার হল ভবন নির্মাণ করা হলেও বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থীর জন্য তা অপ্রতুল। তাই বাধ্য হয়েই ১৯৬৫ সালে নির্মিত ঝুঁকিপূর্ণ দোতলা বিশিষ্ট পুরাতন ভবনটিতেই প্রশাসনিক সব কার্যক্রম পরিচালনাসহ ছয় হাজার শিক্ষার্থীর পাঠদান চলছে।
কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতন ভবনে পাঠদানরত শিক্ষার্থীরা বাংলানিউজকে জানান, পুরাতন ভবনটিতে ক্লাসরুমগুলোতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় ক্লাস করতে হচ্ছে। জরাজীর্ণ ক্লাস রুমে মাঝেমধ্যেই ছাদ ও দেয়ালের প্লাস্টার ধসে গায়ের ওপর পড়ে। সবসময় আতঙ্কের মধ্যে মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনায় বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। নতুন ভবন নির্মাণ হলে লেখাপড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ পেতেন শিক্ষার্থীরা। কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মীর্জা মো. নাসির উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, ১৯৬৫ সালে নির্মাণ হওয়ায় পুরাতন ভবনটিতে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। মাঝেমধ্যে সংস্কার করা হলেও তা খুব একটা কাজে আসছে না। নতুন ভবনগুলোতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় বাধ্য হয়েই পুরাতন ভবনে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনাসহ শিক্ষার্থীদের পাঠদান পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, কুড়িগ্রাম জেলার নদ-নদী বিধৌত দূর-দূরান্তের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষায় অবদান রাখা প্রাচীন বিদ্যাপীঠটির এই সংকট নিরসনে অনতিবিলম্বে ১টি ১০তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে। বিষয়টি অবহিত করে শিক্ষার মানোন্নয়নসহ শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখতে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে আবেদনও জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২২
এফইএস/এএটি