ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

হাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৫ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০২২
হাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন

দিনাজপুর: হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ৪টি হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুই দফায় এই সংঘর্ষ হয়।

এ সময় বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রীর ও জাতীয় চার নেতার ছবিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করা হয়। পরে এ ঘটনায় ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পর ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক শিক্ষার্থী বলেন, বেশ কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি মেয়েকে ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

এ বিষয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আগের কোনো ঘটনার জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমেটরি-২ হলের ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী আনজারুল ইসলামকে মারধর করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৮-১০ শিক্ষার্থী। পরে আহত অবস্থায় তাকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে মারধরের এ ঘটনা জানাজানি হলে  শেখ রাসেল হলে আশ্রয় নেয় ওই ৮-১০ শিক্ষার্থী। এ সময় ডরমেটরি-২ হলের শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে শেখ রাসেল হলে গেলে উভয় হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। কিন্তু মীমাংসার শেষ দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের এক শিক্ষার্থী ডরমেটরি-২ এর সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ওই হলের শিক্ষার্থীরা তাকে চড়থাপ্পড় দেয়। পরে শেখ রাসেল হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থীরা ডরমেটরি-২ আবাসিক হলে ঢুকে লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া দেয় এবং ভাঙচুর চালায়।
 

পরে ডরমেটরি-২ ও তাজউদ্দিন আহমদ হলের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হলে আক্রমণ করে। প্রায় আধঘণ্টা ধরে তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ভাঙচুর চালায়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসনের কর্মকর্তারা ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করলে  সংঘর্ষে জড়িতরা হল থেকে বেরিয়ে যায়।

জানা গেছে সংঘর্ষে  ওই ৪ হলের বেশ কয়েক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। পরে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এই সংঘর্ষের কারণ জানতে এবং প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যার প্রধান করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার বিধান চন্দ্র হালদারকে। আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে। এরপর কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে দোষী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

জানা যায়, ডরমিটরি-২ এর কিছু ছাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের কলাপসিবল গেট ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। এ সময় তারা প্রথমেই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে হামলা করে, পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় ৪ নেতা, হাজী মোহাম্মদ দানেশের ছবিতে আঘাত করে। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে লাঠিসোটা দিয়ে আঘাত করায় টাইলসের কিছু অংশ ভেঙে যায়। প্রধানমন্ত্রীসহ জাতীয় নেতাদের ছবিতেও আঘাত করে ছিঁড়ে ফেলা হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মামুনুর রশিদ জানান, ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিতে হামলা করেছে সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ, সার্বিক তথ্য বিশ্লেষণ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০২২
এমআরপি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।