ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ইবি শারীরিক শিক্ষা বিভাগে ভর্তিতে দুই দফা ভর্তি পরীক্ষা!

ইবি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২২
ইবি শারীরিক শিক্ষা বিভাগে ভর্তিতে দুই দফা ভর্তি পরীক্ষা!

ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ১ম বর্ষ স্নাতক শ্রেনীর ভর্তিতে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থীদের দিতে হবে দুই দফা ভর্তি পরীক্ষা। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও এ বিভাগে ভর্তি হতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় দফায় আরো ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

রবিবার (২৪ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান স্বাক্ষরিত ভর্তি বিজ্ঞপ্তি থেকে এমনটিই জানা গেছে।

তবে দ্বিতীয় দফার ভর্তি পরীক্ষাটি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার নীতিমালা পরিপন্থী বলে অভিযোগ করেছেন অনেকেই। বেশ কয়েকজন শিক্ষক কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার নীতিমালা না মানার অভিযোগ করেছেন।

তাদের অভিযোগ শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগ গুচ্ছের অন্তর্ভুক্ত বিশেষায়িত বিভাগ হওয়া সত্ত্বেও আলাদাভাবে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করাটা গুচ্ছের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাছাড়া গুচ্ছের পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশ হওয়ার আগেই এ বিভাগে ভর্তির জন্য দ্বিতীয় দফায় ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি দেওয়াটাও অযোক্তিক। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২৩তম একাডেমিক কাউন্সিলে বিরোধিতা করেন বেশ কয়েকজন শিক্ষক।

জানা যায়, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার নির্দশনা অনুযায়ী, জিএসটি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের বিশেষায়িত বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষার্থীদের ভর্তি হওয়ার জন্য প্রথমে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। আর গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পরে বিশেষায়িত এসব বিষয়ে ভর্তির জন্য স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয় তাদের শর্ত মোতাবেক পৃথক ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে।

উল্লেখ্য, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছের নীতিমালা অনুযায়ী বিশেষায়িত বিষয় রয়েছে চারুকলা, ফোকলোর স্টাডিজ এবং শারিরীক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান। জানা যায়, শিক্ষকদের ১২৩তম একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ের আলোচনায় এ বিষয়ে বিরোধিতা করেন সচেতন শিক্ষকরা।

এদিকে, শারিরীক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগ গুচ্ছের নীতিমালা না মেনেই পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই তাদের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে, এই বিভাগে ভর্তির জন্য গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও আলাদা পরীক্ষা দিতে হবে।  

ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ১ ঘণ্টায় ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। নাম্বার বন্টনের ক্ষেত্রে বাংলায় ৩৫, ইংরেজিতে ৩৫ ও সাধারণজ্ঞানে ৩০ নম্বর থাকবে। এছাড়া, বিকেএসপি সনদধারী ভর্তিচ্ছুদের জন্য ২০ শতাংশ বিশেষ কোটা সুবিধা থাকবে এবং তাদের ক্ষেত্রে এমসিকিউ পরীক্ষার পাশ নাম্বার হবে ২০। যার বিপরীতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশ নাম্বার রাখা হয়েছে ৪০।

প্রথমধাপে গুচ্ছে আবেদন করতে শিক্ষার্থীদের গুনতে হয় ১৫৩০ টাকা। পরবর্তী ধাপে এসব বিশেষায়িত বিষয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ১০০০ টাকা গুনতে হবে। যা সম্পূর্ণ অনিয়ম বলে দাবি করেছেন সচেতন শিক্ষকরা।

শারিরীক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগ ইবির বিজ্ঞান অনুষদের অন্তর্ভুক্ত। বিজ্ঞান অনুষদের বিভাগ হওয়া সত্ত্বেও এই বিভাগে ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন থাকবে বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান। যা সাধারণত ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে মানবিক বিভাগের বিষয় হয়ে থাকে। এ বিষয় নিয়েও একাডেমিক কাউন্সিলে প্রশ্ন তোলেন শিক্ষকরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার কাছে মনে হচ্ছে যে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সঙ্গে এটা সাংঘর্ষিক। কারণ, একজন শিক্ষার্থীকে একই সাবজেক্টের জন্য একাধিক জায়গায় পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। ’

হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী আকতার হোসেন বলেন, 'আমি একাডেমিক কাউন্সিলে এ বিষয়ে প্রতিবাদ করেছি। আমার কাছে মনে হয় এটা নিয়মের পরিপন্থী। '

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, 'এটা নিয়ে কেন্দ্রীয় ভাবে কথা হয়েছে। শুধু আমরা না, আরো বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় স্বতন্ত্র ভাবে পরীক্ষা নিচ্ছে। এ বিভাগে যারা ভর্তি হবে তারা খেলাধুলায় ভালো হলেও অন্যদের থেকে কম মেধাবী। তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হলে প্রথম থেকেই আমাদের শুরু করতে হবে। তাই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। '

বাংলাদেশ সময়: ০১২৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২২
এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।