ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ইবি ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে সিটের বিনিময়ে টাকা হাতানোর অভিযোগ

ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২২
ইবি ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে সিটের বিনিময়ে টাকা হাতানোর অভিযোগ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, (ইবি): আরবি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুল ইসলাম রিয়ন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে বেশ কয়েকটি অভিযোগ।

এর মধ্যে গুরুতর ক্যাম্পাসের এক জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীকে মারধর। এবার তার চেয়েও বড় অভিযোগ উঠেছে রিয়নের বিরুদ্ধে। সেটি অবৈধভাবে সিটের বিনিময়ে অর্থ আত্মসাতের!

যদিও অভিযোগ অস্বীকার করছেন রিয়ন। এ ঘটনায় স্পষ্ট অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে ইবির সাদ্দাম হোসেন হল কর্তৃপক্ষ।

রিয়নের বিরুদ্ধে হলে সিটের বিনিময়ে অর্থ হাতানোর অভিযোগ তুলেছেন ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আতিক রহমান। লিগ্যাল সিট না থাকায় তিনি বর্তমানে সাদ্দাম হোসেন হলের গণ রুমে অবস্থান করছেন।

আতিক সাংবাদিকদের জানান, তাকে সাদ্দাম হোসেন হলে সিট দেওয়ার ‘অফার’ দেন রিয়ন। ভর্তির সময় তাকে বরাদ্দকৃত জিয়াউর রহমান হল পরিবর্তন করে সাদ্দাম হোসেন হলে চলে আসতে বলেন। এ সংক্রান্ত সব কাজ রিয়ন নিজেই করবেন বলে আশ্বাস দেন। পরে জিয়া হলের আবাসিক সিট পরিবর্তনের জন্য ব্যাংকে ৫০০ টাকা জমা দেন আতিক। গত ৩১ আগস্ট তাকে ডেকে প্রশাসন ভবনে নিয়ে যান রিয়ন।

সেখানে নেওয়ার পর সাদ্দাম হোসেন হলের সিট লিগ্যাল করতে ৪ হাজার ২০০ টাকা দিতে বলেন। আতিক টাকা দিলে তাকে প্রশাসন ভবনের এক কর্মকর্তার কক্ষে বসিয়ে ব্যাংকে টাকা জমা দিতে চলে যান। কিছুক্ষণ পর রিয়ন এসে আতিকের হাতে টাকা জমার রশিদ দেন।

আতিন বলেন, রশিদে হল বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো নাম না দেখতে পেয়ে সন্দেহ হয় আমার। সেটিতে রিয়নের নাম ও অ্যাকাউন্ট নম্বর ছিল শুধু। বিষয়টি রিয়নকে প্রশ্ন করি। উনি বলেন, ‘ভুল করে সাইফুল লিখা হয়েছে, টাকা তোর একাউন্টেই জমা হয়েছে, তুই চিন্তা করিস না’।

পরবর্তীতে ব্যাংকের ওই হিসাব নম্বরের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সেটি রিয়নের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট। বিষয়টি সম্পর্কে রিয়ন ভাইয়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি আমাকে আবোল-তাবোল বোঝান। পরে জানতে পারি, হলের সিট পরিবর্তন করতে চাইলে এত টাকা লাগে না। রিয়ন ভাই এখনও আমাকে লিগ্যাল সিটের ব্যবস্থা করে দিতে পারেননি। তিনি আমাকে হলের গণ রুমে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে সাইফুল ইসলাম রিয়নের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আতিককে আমিই হলে তুলেছি। কিন্তু ওর থেকে টাকা নিইনি। ওই ছেলে মিথ্যা বলছে।

এ ব্যাপারে প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছে জানতে চাওয়া হয়। তিনি বলেন, এমন কোনো অভিযোগ পাইনি। ভুক্তভোগী যদি আমাদের কাছে লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ করে এবং ডকুমেন্টস দেখাতে পারে তাহলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। এমন কাজ গুরুতর অন্যায়।

সাদ্দাম হোসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান বলেন, ভুক্তভোগী এমন কোনো অভিযোগ করেনি। ডকুমেন্ট ছাড়া শুধু মুখের কথায় কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যায় না। স্পষ্ট প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখব।

এর আগে গত শনিবার (২৬ নভেম্বর) ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে রিয়নের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিচার ও নিরাপত্তার দাবিতে রিয়ন ও তার (ভুক্তভোগীর) সহপাঠী শিমুলের বিরুদ্ধে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২২
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।