সরকার পুরোপুরি নিরপেক্ষ না হওয়ার বিষয়টি সমস্যা মনে করছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। তবে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) নিরপেক্ষ হতে আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর এমন প্রতিক্রিয়া জানান জাপার মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী।
তিনি বলেন, সৌহার্দপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সিইসির সঙ্গে সচিবও ছিলেন। আমরা আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি। আমরা একটা সুষ্ঠু, ফেয়ার নির্বাচন চাই। ইসি সব নিবন্ধিত দলের একমাত্র ও নিরপেক্ষ কমিশন। সংবিধান অনুযায়ী তারা স্বাধীন। রাষ্ট্র তাদের সব জনবল দিতে বাধ্য। তারা যে আইন-কানুনগুলো করবে সেগুলো কোথাও চ্যালেঞ্জ হবে না। সরকারের অন্য সমস্ত অর্গান ইসিকে সহায়তা দিতে বাধ্য থাকবে। এই ধরনের শক্তিশালী প্রভিশন অন্য কোনো ক্ষেত্রে দেওয়া নেই।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ইসির কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। একটি দ্বন্দ্বময় সময় বাংলাদেশ পার করছে। একটি রাজনৈতিক টালমাটাল সময় পার করছে। আশা করি এরমধ্যে কমিশন তার শপথ বজায় রেখে নিরপেক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন করবে। সবার অংশগ্রহণে একটি নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্রের আলো প্রস্ফুটিত হবে আমরা এটা প্রত্যাশা করি। আমাদের আস্থা আছে কমিশন সুষ্ঠু ভোটের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে। সীমাবদ্ধতা থাকলেও কমিশন চেষ্টার ত্রুটি রাখবে বলে আমাদের মনে হচ্ছে না।
ভোটের তারিখ বা পিআর সিস্টেম নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে জাপার মহাসচিব বলেন, পিআর পদ্ধতি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে আমরা জানতে পেরেছি ভোটের তারিখ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা একটা চিঠি দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী কমিশন কাজ করছে। আমরা যেটা সমস্যা মনে করি, সরকার পুরোপুরি নিরপেক্ষ না। তবে কমিশনকে নিরপেক্ষ দেখতে চাই। সব দলকে কমিশন ডাকবে, কথা বলবে। আমরা ইসির ক্লায়েন্ট। রাজনৈতিক দল না থাকলে কমিশনের কোনো প্রয়োজন নেই। আমরা চাই কমিশন সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করবে। এটি খুব দুরূহ কাজ। এটি ইসিকেই করতে হবে। আর ইসিকে সরকার ও দলগুলোকে সহায়তা করতে হবে।
জাপার অন্য একটি অংশ ইসিতে এসে জাতীয় পার্টি নিজেদের দাবি করার বিষয়ে তিনি বলেন, গত ২৮ জুন কাউন্সিল করাকে কেন্দ্র করে একটি দ্বন্দ্বের সৃষ্টি। সেই দ্বন্দ্বের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের সিনিয়র কিছু নেতা জিএম কাদেরকে ছাড়াই কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত নেন। পরে তাদের রেজ্যুলুশনের মাধ্যমে বহিষ্কার করা হয়। ওই চিঠি চ্যালেঞ্জ করে তারা মামলা করেন। তবে সেটা এখনো কার্যকর আছে। আইনগতভাবে জি এম কাদেরের পক্ষেই লাঙল প্রতীক থাকবে।
ইসলামী আন্দোলনসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে জাতীয় পার্টিকে নির্বাচন থেকে অযোগ্য ঘোষণার দাবির বিষয়ে শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, নির্বাচন আইনে জাতীয় পার্টিকে অযোগ্য ঘোষণার কোনো শর্ত পূরণ হয়নি। নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ প্রয়োজন এবং কাউকে অযোগ্য ঘোষণা করা হলে তা গণতন্ত্র ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতির জন্য ক্ষতিকর।
ইইউডি/আরবি