ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

সিলেটে নৌকার প্রার্থীসহ জামানত হারালেন ৪৪ জন! 

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০২১
সিলেটে নৌকার প্রার্থীসহ জামানত হারালেন ৪৪ জন! 

সিলেট: তৃতীয় ধাপে সিলেটের তিন উপজেলার ১৬ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৯১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৪৪ জনের জামানত রক্ষা হয়নি।

নির্বাচন কমিশনের বিধি অনুযায়ী, জামানত রক্ষায় প্রার্থীদের প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের একভাগ ভোট পেতে হয়। সে হিসেবে অর্ধেক প্রার্থীই জামানত ফিরে পাচ্ছেন না, জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।  

এসব ইউনিয়নে জামানত হারানোর তালিকায় নৌকা ও জাপার একজন করে প্রার্থী ছাড়াও রয়েছেন জমিয়ত ও ইসলামী আন্দোলনের তিনজন করে এবং স্বতন্ত্র ৩৬ জন।    

তৃতীয় ধাপে ইউপি নির্বাচন সংশ্লিষ্ট রিটানিং কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যমতে, সিলেটের দক্ষিণ সুরমার ছয় ইউপিতে ২৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে অর্ধেক প্রার্থী তথা ১২ জন জামানত হারিয়েছেন। এরমধ্যে ১১ জন স্বতন্ত্র ও ইসলামী আন্দোলনের এক প্রার্থী রয়েছেন।

জৈন্তাপুরে পাঁচটি ইউপিতে ৩২ প্রার্থীর মধ্যে অর্ধেকের বেশি তথা ১৮ প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। এরমধ্যে জাপা, জমিয়ত, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী ছাড়া স্বতন্ত্র ১৫ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

আর গোয়াইনঘাটে ছয় ইউনিয়নে ৩৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১৪ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এই তালিকায় নৌকার এক প্রার্থী ছাড়াও জমিয়তের দু’জন, ইসলামী আন্দোলনের একজন এবং স্বতন্ত্র ১০ জনের জামানত রক্ষা হয়নি।    

প্রাপ্ত তথ্যমতে, দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সিলাম ইউপিতে ছয় প্রার্থীর তিনজনই জামানত হারিয়েছেন। তারা হলেন- মো. ফয়জুল হক (মোটরসাইকেল) ৮৪৮ ভোট, মো. মাহবুব আহমদ (আনারস) ২৮৩ ভোট, সুমন মিয়া (অটোরিকশা) ৩৬০ ভোট।

লালাবাজার ইউনিয়নে ছয় প্রার্থীর তিনজনের জামানত রক্ষার মতো ভোট পাননি। তারা হলেন- স্বতন্ত্র আব্দুল মুহিত (আনারস) ১২৯২ ভোট, খালেদ আহমদ রাসেল (চশমা) ৪৮, মামুনুর রহমান চৌধুরী (রজনীগন্ধা) ৪২ ভোট।  

মোগলাবাজার ইউনিয়নে ছয় প্রার্থীর মধ্যে স্বতন্ত্র মো. মুকিত মিয়া (আনারস) ১,৫৩১ এবং শামিনুল হক (অটোরিকশা) ১৪৩৩ ভোট পেয়েও জামানত হারাচ্ছেন। জালালপুরে তিন প্রার্থীর মধ্যে কেবল হারুনুর রশিদ (হাতপাখা) ২১৩ ভোট পেয়ে জামানত হারালেন। দাউদপুরে চার প্রার্থীর মধ্যে একমাত্র স্বতন্ত্র ছালিক আহমদ (ঘোড়া) ১৯৪ ভোট পেয়েও জামানত হারাচ্ছেন।

জৈন্তাপুর সাত প্রার্থীর চারজন জামানত হারিয়েছেন। তারা হলেন- স্বতন্ত্র আব্দুল আহাদ (টেবিল ফ্যান) ১৫২৭ ভোট, নুরুল ইসলাম (চশমা) ১৫৯ ভোট, আব্দুল হাই (টেলিফোন) ১৩৮ ভোট, হোসেইন আহমদ (মোটরসাইকেল) ৩৪৫ ভোট।

চারিকাটা ইউপিতে আট প্রার্থীর পাঁচজনই জামানত হারিয়েছেন। তারা হলেন- স্বতন্ত্র আলতাফ হোসেন বিলাল (ঘোড়া) ২৭৯ ভোট, দেলোয়ার হোসেন আজাদ (টেলিফোন) ২৭৯ ভোট, বদরুল ইসলাম (আনারস) ৮৩ ভোট, আফজাল হোসেন (আনারস) ৮৮ ভোট।

দরবস্ত ইউনিয়নে পাঁচ প্রার্থীর তিনজন জামানত হারিয়েছেন। তারা হলেন-স্বতন্ত্র খয়রুল আমিন (ঘোড়া) ২২২ ভোট, জসিম উদ্দিন শিকদার (হাতপাখা) ২৬৯ ভোট, মো. মাসহুদ আজহার (খেজুর গাছ) ২৪৬১ ভোট।

ফতেহপুর ইউনিয়নে তিন প্রার্থীর মধ্যে স্বতন্ত্র তাফাজ্জুল হোসেইন (আনারস) ১২৯ জামানত খুইয়েছেন।

চিকনাগুলে ৯ প্রার্থীর পাঁচজনই জামানত খুইয়েছেন। তারা হলেন-স্বতন্ত্র আতিকুর রশীদ (দুটি পাতা) ১০৯৫ ভোট, আব্দুল আহাদ (ঘোড়া) ১০১৮, লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ১৬৯ ভোট, অটোরিকশার প্রার্থী ৪৪৩ ভোট, আনারস প্রতীকের প্রার্থী ৪৪৮ ভোট।

গোয়াইনঘাট উপজেলার ডৌবাড়িতে চার প্রার্থীর কেবল জমিয়তের এনামুল ইসলাম (খেজুর গাছ) ৫৮৬ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।

ফতেহপুরে সাত প্রার্থীর চারজনই জামানত হারিয়েছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন (নৌকা) ১০৭০ ভোট, স্বতন্ত্র ইসলাম উদ্দিন (অটোরিকশা) ২৫৫, মীর হোসাইন আমীর (আনারস) ৫৭৫, জমিয়তের মৌলানা নিজাম উদ্দিন (খেজুর গাছ) ৫৩৪ ভোট পেয়েছেন।

নন্দিরগাওয়ে ছয় চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে স্বতন্ত্র মো. আব্দুল ওয়াহিদ (আনারস) ১,৫২৬ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হীরক দেব (চশমা) মাত্র ৩৯ ভোট পেয়েও জামানত রক্ষা হয়নি।

তোয়াকুল ইউনিয়নে চার প্রার্থীর মধ্যে কেবল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আলীম উদ্দিন (হাত পাখা) ১৪৪ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।

রুস্তমপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আট প্রার্থীর পাঁচজনই জামানত হারিয়েছেন। তারা হলেন- স্বতন্ত্র আব্দুল মজিদ সরকার (টেবিল ফ্যান) ৩১৮ ভোট, আব্দুল মতিন (মোটরসাইকেল) ১০৪৪, আলী আমজদ (ঘোড়া) ১০৭৬, হাবিবুর রহমান (টেলিফোন) ২৮৬ এবং সালেহ আহমদ (আনারস) ১২৫ ভোট পেয়েছেন।

লেংগুড়ায় পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নান (মোটরসাইকেল) ১৬৮ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।

তৃতীয় ধাপে সিলেটের তিন উপজেলায় ১৬ ইউপিতে ভোটগ্রহণ হয়েছে গত রোববার (২৮ নভেম্বর)। ভোটের ফলাফলে নয়টিতে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বাকি সাতটির তিনটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী, দুটিতে স্বতন্ত্রের ব্যানারে বিএনপি, অপর দু’টিতে জাতীয় পার্টি ও জাসদের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০২১
এনইউ/এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।