ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

পৌর নির্বাচন

আচরণবিধি লঙ্ঘন: ইসির নির্দেশ মানছে না কেউ

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৫
আচরণবিধি লঙ্ঘন: ইসির নির্দেশ মানছে না কেউ

ঢাকা: আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশনা মানছে না কেউ। এতে একদিকে যেমন বন্ধ হচ্ছে না বিধি লঙ্ঘন, অন্যদিকে অসন্তুষ্ট খোদ ইসি কর্মকর্তারা।



বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত আচরণবিধি লঙ্ঘনের খবরের ভিত্তিতে এবারই প্রথম রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ব্যবস্থা নিতে বলছে ইসি। এজন্য ইসির উপসচিব রকিব উদ্দীন মণ্ডলকে প্রধান করে একটি পত্রিকা মনিটরিং কমিটিও গঠন করা হয়েছে । তিনি বিভিন্ন প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করেন আর ইসি সেই প্রতিবেদনে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমোদন দেয়।

তবে ইসি কর্মকর্তারা রিটার্নিং কর্মকর্তার ওপর এ দায় না চাপিয়ে বরং স্বয়ং ইসিকেই আচরণ বিধি লঙ্ঘনের ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে মত দিচ্ছেন। কিন্তু ইসির যুক্তি রিটার্নিং কর্মকর্তাই নির্বাচনী অপরাধের শাস্তি প্রদানের এখতিয়ার রাখে।
 
এই অবস্থায় রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ব্যবস্থা নিয়ে জানাতে বললেও মাঠ পর্যায় থেকে তারা এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নিয়েই জানাতে পারেনি।

সম্প্রতি আওয়ামী লীগের তিন এমপিকে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের দায়ে শোকজ করেছিলো ইসি। সেই এমপিরা ক্ষমাও চেয়েছেন ইসির কাছে। এরপর মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও অধ্যক্ষ মতিউর রহমানসহ ১০ এমপির বিরুদ্ধে বিধি ভঙ্গের দায়ে ইসি কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বরং রিটার্নিং কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নিয়ে তা জানানোর নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে প্রতিদিন সকাল নয়টার মধ্যে আগের দিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা বিধি ভঙ্গের দায়ে কী ব্যবস্থা নিয়েছে তার প্রতিবেদনও একটি ছক আকারে পাঠাতে বলে গত মঙ্গলবার (১৫ ডিসম্বের)। কিন্তু এখন পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা বা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের কেউ এসে প্রতিবেদন দাখিল করেননি।
 
এ বিষয়ে পত্রিকা মনিটরিং কমিটির প্রধান ও ইসির উপসচিব রকিব উদ্দীন মণ্ডল বাংলানিউজকে বলেন, মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে তা ইসিকে জানানোর জন্য বলা হলেও রিটার্নিং কর্মকর্তারা এখনো কোনো প্রতিবেদন পাঠায়নি। এছাড়া ম্যাজিস্ট্রেটরাও কোনো প্রতিবেদন দেয়নি। তবে কিছুদিন হলো মাত্র নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। হয়তো প্রতিবেদন আসতে আরো সময় লাগবে। সেগুলো অন দ্যা ওয়েতে।

অন্যদিকে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয় দিবসে এমপিদের সঙ্গে প্রার্থীদের অনুষ্ঠানে না যেতেও নির্দেশ দিয়েছে ইসি। ওই নির্দেশে প্রার্থীদেরকে বিষয়টি অবহিত করতে বলা হয়েছিলো। একই সঙ্গে কেউ নির্দেশনা না মানলে ব্যবস্থা নিয়ে তা জানাতেও বলা হয়েছিলো।
 
রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে ওই নির্দেশনাও পাঠিয়েছেন রকিব উদ্দীন মণ্ডল। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মাঠ পর্যায় থেকে কোনো প্রতিবেদন পায়নি। তবে পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে সাত পৌরসভায় আচরণ বিধি ভঙ্গের দায়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা পাঠাচ্ছি।
 
সূত্র জানিয়েছে, শেরপুর, ময়মনসিংহ, রাজবাড়ি, ইসলামপুরসহ অন্তত ১০ স্থানে বিজয় দিবসে আচরণ বিধি ভঙ্গের প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এসব এলাকায় অন্তত সাত এমপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে জানাতে বলছে কমিশন।
 
আগামী ৩০ ডিসেম্বর দেশের ২৩৪ পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে মেয়র পদে ৯২৩ এবং কাউন্সিলর পদে ১১ হাজার ১২২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যাদের মধ্যে থেকে প্রতিনিধি নির্বাচনে প্রায় ৭২ লাখ ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। এ নির্বাচনে সাড়ে তিন হাজারের বেশি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২২২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৫
ইইউডি/ আরএইচএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।