ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

কুলাউড়া থেকে হুসাইন আজাদ

ভোটের আগেই ‘খুশি’ বিলাবেন প্রার্থীরা!

হুসাইন আজাদ ও মাহবুবুর রহমান রাহেল | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৫
ভোটের আগেই ‘খুশি’ বিলাবেন প্রার্থীরা! ছবি: জি এম মুজিবুর- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কুলাউড়া, মৌলভীবাজার থেকে: প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। জিতলে কী কী করবেন সে নিয়ে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।

তবে ভোটারদের এখনও ‘খুশি’ করছেন না কেউই। সবাই বলছেন, ভোটের আগেই ‘খুশি’ করে দেবেন।
 
হাতের ইশারায় নির্বাচন উপলক্ষে ‘খুশি’ করার খবর জানতে চাইলে এভাবেই অকপটে বলে ফেললেন মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নাছিমা আক্তার। বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে কুলাউড়ার উপজেলা রোডের স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে আলাপ হচ্ছিল তার সঙ্গে।
 
মুখে পান চিবোতে চিবোতেই কথা বলেন বৃদ্ধা নাছিমা। জানান, ভোটের আগে সব প্রার্থীই আসে। এবারও আসতে শুরু করেছে। অনেকে প্রতিদিনই আসছে। ছোট্ট শহর বলে বারবার গিয়ে আলাপ জমাচ্ছে। সবাই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে উন্নয়নের। রাস্তাঘাট ভালো করার।
 
হাতের ইশারায় অর্থকড়ি বিলানোর বিষয়ে জানতে চাইলে নাছিমা খানিকটা গলার স্বর নামিয়ে বলেন, ‘এখনও কেউ দিছে না। তবে সবাই কইছে, ভুটের আগে খুশি কইরা দিব। ’

সবাই ‘খুশি’ করে দিলে কাকে ভোট দেবেন, এমন প্রশ্নে বৃদ্ধা নাছিমা তার প্রথম ভোট দেওয়ার স্মৃতি হাতড়ান, ‘প্রথমবার ভুট দিতে গিয়ে বুঝছি না। সবাইরে ভোট মারছি। এখন দেখুম, যে ভালা, তারেই ভোট দিমু। ’ বলে হেসে ফেলেন তিনি।
 
তার সঙ্গে আলাপের সময় সেই রাস্তা দিয়েই হেঁটে যাচ্ছিলেন স্থানীয় একটি স্কুলের শিক্ষক কাবেরী ভট্টাচার্য ও মনিকা রাণী। নির্বাচন ও প্রার্থীদের আচরণ নিয়ে বলেন, ‘ভোট শুরু হইছে। এখন তো তারা আসবেনই। অনেকে অনেক প্রতিশ্রুতি দিতাছেন। লোকজন যারে ভালো মনে করবো তারে ভোট দিব। ’
 
কুলাউড়ার ব্যস্ততম উত্তর বাজারের ফুটপাতে কথা হয় ফুল ব্যবসায়ী ফজলুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতীক বরাদ্দ হওয়ায় এবার পৌরসভা নির্বাচনও জমবে। মানুষ এখন তার পছন্দের দলের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে।

বর্তমান মেয়র বিএনপির হলেও এবারের নির্বাচনে তার ও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলেও মন্তব্য করেন ফজলুর।
 
ফজলুরদের সঙ্গে আলাপের আগে স্টেশন রোডে কথা হয় পান কিনতে আসা বৃদ্ধ আবুল ফজলের সঙ্গে। সেসময় একযোগে স্টেশন রোডে চক্কর দিচ্ছিলো তিনটি প্রচারণার মাইকিং গাড়ি। মাইকিংয়ে মুখর হয়ে উঠছিলো কুলাউড়া স্টেশনপাড়া।
 
ফজল দোকান থেকে পান কিনতে কিনতেই বলছিলেন, মাইকিং হচ্ছে। তবে প্রচারণা এখনও জমেনি। প্রতীক দলীয় হওয়ায় শেষ দিকে নির্বাচনের আমেজ আসতে পারে।
 
ভোটারদের আকৃষ্ট করতে প্রার্থীরা কী করছেন, এমন প্রশ্নে আবুল ফজল বলেন, ‘টাকা ঢালবো। যে টাকা ঢালবো সে জিতবো। এখনও টাকা ছাড়ছে না। ছাড়তেই লোকজন পেছনে ঘুরঘুর করবো। ’

শোডাউন-মিটিং প্রতি শ’কয়েক টাকা দেওয়া হয় মন্তব্য করে হাসতে হাসতেই ফজল বলেন, তবে কিছু জায়গায় ৩শ’ টাকা দিব বলে পরে একশ’ টাকাও ধরিয়ে দেয়।
 
১৫ হাজার ৮৮০ ভোটারের ছোট্ট কুলাউড়া পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন চার জন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগের একে এম সফি আহমদ সলমান (নৌকা প্রতীক), বিএনপির কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেল (বর্তমান মেয়র, ধানের শীষ প্রতীক), জাতীয় পাটির মুহিবুর রহমান লাল (লাঙ্গল প্রতীক) এবং স্বতন্ত্র সফি আলম ইউনুস (উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, নারিকেল গাছ প্রতীক)। এছাড়া, এখানে কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ৩৮ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে লড়ছেন আটজন।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৫
এইচএ/

** আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ
** শোর উঠেছে ধানের শীষের, ভোট পড়বে নৌকায়
** আ’লীগের ভরসা ইমেজ, বিএনপির ভরসা প্রতীক
** নৌকায় ভাঙছে বিভেদের দেয়াল
** ‘রাজা’ ‘বখত’ নয়, এবার লড়াই দলীয়
** নৌকা-ধানের শীষ নয়, লড়াই কালাম-শামছুর
** ছাতকে ‘ফ্রি চা-পানি’, মিলছে ‘টেকা-টুকা’ও
**  জকিগঞ্জবাসীর দুঃখগাঁথা
** ওপারে শীতের চাদর, এপারে নির্বাচনী উত্তাপ
** বছর ধইরা মাঠ ঠিক করছি, এখন সরতাম কিতার লাগি
** লাখ লাখ টেকার ভুট এক হাজারে বেচিয়া কতদিন খাইবা?
** এখানে কুনো ভুটো কারচুপি অইছে না

** ডিজিটাল রেল, সময়ানুবর্তী রেল

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।