ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

পৌরসভা নির্বাচন

ভোট আসলেই কেবল গরিবের কদর

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৫
ভোট আসলেই কেবল গরিবের কদর ছবি: আরিফ জাহান/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শিবগঞ্জ (বগুড়া) থেকে ফিরে: বৃদ্ধ আব্দুস সামাদ। বয়সের ভাড়ে নিজের বয়সও ভুলে গেছেন।

চার সদস্যের সংসার তার। সেই সংসারে প্রচণ্ড অভাব। অভাবের তাড়নায় এ বয়সেও তাকে সংসারের হাল ধরে রাখতে হয়েছে। তিনি বগুড়ার শিবগঞ্জ পৌরসভার গোল চত্বরে কেসর আলু বিক্রি করতে এসেছিলেন।
 
পৌরসভার ভোটার কি-না জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদকের দিকে ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ চেয়ে থাকেন। পরে জানা গেলো তিনি কানেও ভালোভাবে শুনতে পারেন না। এসময় সেখানে বেশকিছু উৎসুক মানুষের উপস্থিতি ঘটে। তাদের মাধ্যমে জানা গেলো তিনি ভোটার।
 
আসন্ন পৌরসভার ভোট সম্পর্কে তাদের সাহায্যে কথা হয় এই বৃদ্ধের সঙ্গে। তার সাফ কথা, কারো কিছু খাবো না। কারো কাছে যাবো না। ভোটের সময় আসলে ভোট দেবো। জীবনে যতোবার যাকে ভোট দিয়েছি তাই জয়লাভ করেছে। ভোট কখনও নষ্ট হয়নি। এবারো ভোট নষ্ট হবে না।
দরিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিত এই বৃদ্ধ অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে কথাগুলো বলেন।

এসময় উপস্থিত আবু জাফর, আব্দুল বাছেদ, মোমিনুল ইসলামসহ একাধিক ব্যক্তি এই বৃদ্ধের কথার সঙ্গে একমত পোষণ করেন। কেননা ভোট আসলেই কেবল গরীবের কদর। ভোট চলে গেলে তাদের মতো গরিবের কেউ খবর রাখে না। বনে গেলেই সবাই বাঘ বনে যায়। এরপরও ভোট দিতে হবে। সবাই ভোটও দেবেন। এদের কেউ নৌকা আবার কেউ ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেবেন বলে জানান।
 
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) বগুড়ার শিবগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনী হালচাল সম্পর্কে জানতে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা হলে এসব তথ্য ওঠে আসে।
 
আজিজুল হক, আব্দুল কুদ্দুস, শামীমসহ একাধিক ব্যক্তি বাংলানিউজকে জানান, তারা ১নং ওয়ার্ডের চকভোলাখা গ্রামের বাসিন্দা। বিদ্যুতের মাত্র একটি খুঁটির জন্য এই গ্রামের লোকজন বর্তমান মেয়রের কাছে ১৩ বছর ধরে ধর্ণা দিয়ে আছেন। কিন্তু আজো তাদের সেই চাওয়া পূরণ হয়নি। একইভাবে একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বর্তমান মেয়র অর্জুনপুর রাঙাভাটা এলাকায় করতোয়া নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণ করে দেননি। তাই এসব সমস্যার সমাধানে তারা এবার নৌকা প্রতীকে ভোট দেবেন বলে জানান।
 
৪নং ওয়ার্ডের বনতেঘরী গ্রামের বাসিন্দা পান দোকানি সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, তাদের গ্রামের রাস্তাঘাটের অবস্থা অত্যন্ত করুণ। অথচ মেয়র মহোদয়ের চোখে সেটা ধরে পড়ে না। তাই এবার কাকে ভোট দেবো সেটা নিয়ে নতুন করে চিন্তা করছি।

কলেজছাত্র মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, যে জনগণের পাশে থাকবেন, জনগণের দুঃখ বুঝবেন, তাদের জন্য কাজ করবেন। তিনি যে দলের প্রার্থীই হোক না কেন তাকে সবার ভোট দেওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।
 
মুদি দোকানি নজরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী শাহিনসহ বেশ কয়েকজন বাংলানিউজকে জানান, বর্তমান মেয়র অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। সাধ্যানুযায়ী তিনি রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, বিদ্যুতের যথেষ্ট উন্নতি করেছেন। এলাকার উন্নয়ন না করলে জনগণ তাকে বারবার মেয়র নির্বাচিত করতো না। তাই মেয়র পদে এবারো তারা তাকেই ভোট দেবেন।
 
আব্দুল আজিজ, মফিজ উদ্দিন, আব্দুল হান্নানসহ একাধিক ব্যক্তি বাংলানিউজকে জানান, তারা নাগরিক সেবা চান। যিনি সেই সেবা দিতে পারবে তারা তাকেই ভোট দেবেন। সেক্ষেত্রে তারা প্রত্যেক প্রার্থীর যোগ্যতা দেখেই সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৫
এমবিএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।