ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

পৌর নির্বাচন

জয়পুরহাটে স্বশিক্ষিত বনাম অধ্যক্ষের লড়াই

শাহিদুল ইসলাম সবুজ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৫
জয়পুরহাটে স্বশিক্ষিত বনাম অধ্যক্ষের লড়াই

জয়পুরহাট: প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই জয়পুরহাট পৌরসভাসহ কালাই ও আক্কেলপুর পৌরসভার প্রার্থীরা ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন নির্বাচনী প্রচারণায়।

প্রার্থীরা দিনরাত সমান তালে ভোটারদের মন জয় করার জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন।



আবার কোনো কোনো প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা বিজয়ের মাসে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে উপস্থিত ভোটারদের কাছে প্রতীক সম্বলিত ছোট পোস্টার বিতরণ সহ দোয়া-আশির্বাদ চাচ্ছেন।   

১৯৭৫ সালে যাত্রা শুরু করা জয়পুরহাট প্রথম শ্রেণির পৌরসভার বর্তমান ভোটার সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪৬ হাজার। এ পৌরসভার নির্বাচনে এবার সাতজন মেয়র, ৬৫ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ১৮ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী নিজেদের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন বেশ জোরেশোরেই। এখানে মেয়র পদে বড় দুই দলের প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে স্বশিক্ষিত বনাম শিক্ষিত প্রার্থীর মধ্যে।

তারা হলেন- জয়পুরহাট পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক এবং জেলা বিএনপির সদস্য ও জয়পুরহাট শহীদ জিয়া কলেজের অধ্যক্ষ শামছুল হক। হলফ নামায় মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক নিজেকে স্বশিক্ষিত ও পেশায় একজন ব্যবসায়ী উল্লেখ করেছেন। আর অধ্যক্ষ শামছুল হকের দাখিল করা হলফ নামায় তিনি এমএসসি পাশ ও পেশায় একজন শিক্ষক উল্লেখ করেছেন।  

এ পৌরসভায় মেয়র পদে আরো যে পাঁচজন প্রার্থী রয়েছেন তারা হলেন- জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক আ স ম মোক্তাদির তিতাস মোস্তফা, শহর জামায়াতের আমির হাসিবুল আলম লিটন (স্বতন্ত্র), জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান বদি, জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক আয়েজ উদ্দীন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী খন্দকার সাজ্জাদ আহমেদ।

এ ব্যাপারে আরাফাত নগরের বাসিন্দা আইনজীবী রুহুল আমীন ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, জয়পুরহাট একটি প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা। এখানে একজন সুশিক্ষিত ও সচেতন ব্যক্তি মেয়র পদে নির্বাচিত হোক এটিই আমাদের প্রত্যাশা।   

অপরদিকে শহরের নতুনহাট সরদারপাড়া মহল্লার নারী ভোটার রানু আক্তার বলেন, আওয়ামী লীগের উদীয়মান তরুণ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাকের দানশীলতার কথা আমরা জয়পুরহাটবাসী জানি। এ ক্ষেত্রে নির্বাচনে জয়লাভের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা কোনো ফ্যাক্টর নয়।

এ ব্যাপারে মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বাংলানিউজকে বলেন, আগামী ৩০ তারিখের নির্বাচনে জনগণ যদি আমাকে নির্বাচিত করেন, তাহলে জীবনের সবটুকু অভিজ্ঞতা দিয়ে জয়পুরহাট পৌরসভার উন্নয়নে কাজ করে যাব ইনশাল্লাহ।

বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ শামছুল হক আশা প্রকাশ করে বাংলানিউজকে বলেন, জয়পুরহাট বিএনপির দূর্গ। যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তাহলে আমাকে কেউ পরাজিত করতে পারবে না। আর বিজয়ের মালা গলায় পড়ে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আলোকিত পৌরসভা গড়ার চেষ্টা করবো।

অপরদিকে ১৯৯৯ সালে যাত্রা শুরু করা কালাই পৌরসভায় বর্তমান ভোটার সংখ্যা ১২ হাজার ১৫৭ জন। এখানে পাঁচজন মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ৩০ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ পৌরসভায় মেয়র পদে বিদ্রোহী প্রার্থীরা জয় পরাজয়ের ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারেন।

এছাড়াও ১৯৯৯ সালে স্থাপিত আক্কেলপুর পৌরসভায় এবার ভোটারের সংখ্যা ১৮ হাজার ১০১ জন। এখানে পাঁচজন মেয়র, ৩৯ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ১৮ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

জয়পুরহাট জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তোফাজ্জল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ইতিমধ্যেই আমরা সবধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। যা নির্বাচন চলাকালীন বাস্তবায়ন করা হবে।

জয়পুরহাটের এ তিনটি পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র, সংরক্ষিত ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে কারা নির্বাচিত হবেন, তা নির্ধারণ হবে আগামী ৩০ ডিসেম্বর জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটাধিকারের মধ্যে দিয়ে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৫
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।